বাইরে হালকা হালকা বৃষ্টি পড়ছে। আকাশে আলো আঁধারের খেলা।কফি হাউসের শেষের সারির শেষের টেবিলে একটি মেয়ে বসে আছে। সুন্দরী বলা চলে তাকে। ঠোঁটের নিচে একটি ছোট্ট কালো তিল। অরিজিৎ-এর প্রথমেই চোখ পড়ল তার দিকে। সে তার সামনের চেয়ারটি দখল করে বসে তাকে প্রশ্ন করলো -
"আমি এখানে বসলে আপনার কোনো অসুবিধা নেই তো ম্যাডাম? আসলে দেখছেন তো সব কটা জায়গাই বুকড।"
মেয়েটি একটু হেসে উত্তর দিল -
"না, না, আমার কোনো অসুবিধা নেই, আপনি বসুন।"
তারপর আবার নিস্তব্ধতা তাদের টেবিলে। অরিজিৎ লক্ষ্য করল মেয়েটি খালি ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে আর একবার করে কফির কাপে চুমুক দিচ্ছে। তার চোখের দৃষ্টি নিষ্পাপ হলেও দৃঢ়। কিছু নিয়ে সে খুব চিন্তায় আছে দেখে মনে হয়। একবার সে কাকে যেন ফোন করল কিন্তু ওইপার থেকে কোনো উত্তর মিলল না। সে যতটা পারল তার চোখ দুটি আড়াল করার চেষ্টা করল মাটির দিকে মুখ করে কপালে হাত রেখে কিন্তু অরিজিৎ তাও তার চোখের জল স্পষ্ট বুঝতে পারল। সে আর থাকতে না পেরে প্রশ্ন করেই বসল -
"এবাবা, ম্যাডাম আপনি কাঁদছেন কেন?"
মেয়েটি কোনো প্রত্যুত্তর করল না। চোখের জল মুছে ফোনটি হাথে নিয়ে টেবিল ছেড়ে উঠে চলে গেল। অরিজিৎ একটু অপমানিত বোধ করল বটে কিন্তু মেয়েটির জন্য তার খারাপও খুব লাগল। তার চক্ষু মেয়েটিকে কফি হাউসের বাইরে অবধি অনুসরণ করল। মেয়েটি ভিড়ে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার পর তার দৃষ্টি ফিরল টেবিলে। সে দেখল মেয়েটি নিজের পার্স ফেলে চলে গিয়েছে। সে কফি হাউসের প্রতিবেশকের হাথে দিয়ে দিতে পারতো সেটি কিন্তু তার ঠিক ভরসা হলো না - সে আর কাউকেই ঠিক এখন ভরসা করতে পারে না। সে ঠিক করল আবার কাল এইখানে এই সময়েই আসবে। মেয়েটি যে এই সময়েই এখানে কাল উপস্থিত হবে তার কোনো মানে নেই কিন্তু তার মন বলল যে হ্যাঁ মেয়েটি এই সময়েই আসবে এখানে। এর আগেও তো সে মনের কথা শোনেনি বলে কতই না ভুগেছে.......
কফি হাউস।