এক গ্রীষ্মের দুপুর। প্রচন্ড গরমে নদী নালা সব শুকিয়ে কাঠ। মানুষ পশু পাখি
সবারই জল কষ্ট। একদিন একটি চিতাবাঘ তার তেষ্টা মেটাবার জন্য লোকালয়ে
বেরিয়ে পড়ে। চারিদিক হন্যে হয়ে ঘুরতে লাগল। কোথাও যদি একফোঁটা জল
পাওয়া যায়। কিন্তু জলের সন্ধান পেল না। হুঙ্কার ছাড়ার ক্ষমতাও প্রায় হারিয়ে
ফেলেছে। এমন সময় দূরে একটি বাড়ির সামনে একটি কলসি দেখতে পেল।
কোনদিকে না দেখে তীর বেগে কলসির ভেতরে মাথা ঢুকিয়ে কোনরকমে মাথা
ঢুকিয়ে তেষ্টা মেটাল। তেষ্টা তো মিটল কিন্তু মাথা বের করার উপায় রইল না।
শত চেষ্টা করেও কোন লাভ হল না। ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ল। ভাবল - আজ বুঝি
প্রাণটা যাবে। 'কে আছো, আমাকে বাঁচাও"। কলসির ভেতর থেকে এমনভাবে
আওয়াজ বেরোলো যেন কামান থেকে গুলি বেরোলো। গ্রামের লোকজন আওয়াজ
শুনে বাঘ বাঘ চিৎকার করে লাঠি নিয়ে দৌড়ে এল। বাঘের মুখে কলসি দেখে
তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। যাক্, বাঘের পেটে যাবার ভয় নেই। বাঘমামা
তাদের অনুনয় বিনয় করে বলল - "আমাকে বাঁচাও, তোমাদের পুরস্কার দেবো।
তবে কি পুরস্কার দেবো তা এখন বলা যাবে না। আগে কলসিটা বার করে দাও।
তারপর বলছি।" লোকগুলো সহজেই বিশ্বাস করে নিল। কোনরকমে টানাটানি
করে কলসিটা বার করল। বাঘমামা তৎক্ষণাৎ গভীর জঙ্গলের দিকে দৌড়ে পালাল।
লোকগুলো বলল, আমাদের পুরস্কার? "আমাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ
পেলে, এটাই তোমাদের পুরস্কার। তোমাদের মেরে ফেলিনি সেটাই তোমাদের
সৌভাগ্য।" গল্পের, সম মনের বন্ধু। ওকে একবার পাঠিয়ে দিন না। ওর সঙ্গে কতদিন দেখা
হয়নি। কত কথা জমা আছে। ওরও নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু ও তো আর কোনদিনও
দেখা করবে না। বুঝেছি আমার উপর খুব অভিমান করে আছে। দেখা করতে
পারবে না, মানে ও আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। চলে গেছে – ফেরিওয়ালা
কথাটা শোনার পর পাথরের মতো বসে পড়ল। অজয়ের প্রিয় খাবার চকোলেট
উপহারটা কখন হাত থেকে দরজার সামনে পড়ে রইল।