#এক মুঠো গোলাপ
১২
___
বড় খালামণি আমাকে একদমই পছন্দ করেন না। আমাকে দেখলেই ওনার মাথায় অদ্ভুত এক রাগের আর্বিভাব ঘটে। সেই রাগটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা অবশ্যি তিনি করেন না বরং সুযোগ খোঁজেন আমাকে হিউমিলিয়েট করার।
ফাঁকে পেলেই ওনার সবচাইতে প্রিয় কিছু শব্দ দিয়ে আমায় আঘাত করেন। তার মধ্যে বহুল ব্যবহৃত "জারজ একটা"
এছাড়াও, ছোটোলোক, লোভী, অমানুষ, বেয়াদব ইত্যাদি ইত্যাদি তো আছেই।
আমি ওনাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি খুব করে।
নানু বাড়ি পক্ষের অকেশান গুলিতে কদাচিৎ পা রাখি। যদিওবা তা সম্পূর্ণই মায়ের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলের কারণে।
তবে প্রোগ্রাম আ্যাটেন্ড করার কথা শুনলেই আপু তার সর্বাত্মক চেষ্টা করে আমায় প্রোটেকশন দেয়ার। এক মুহুর্ত কাছ ছাড়া হতে দেয়না। মাঝেমধ্যে তার ওড়না কিংবা আঁচল আমার কড়ে আঙুলে বেঁধে সাথে করে ঘুরে নিয়ে বেড়ায়।
ছোটো মামী আর বড় খালামণি পেছন থেকে "আদিখ্যেতা" বলে টন্ট করতে ভোলেন না।
সব শুনেও না শোনার ভান করে থাকে আপু।
আমাকে বারবার বলে, "মানুষের কথায় যেন কান দিবিনা। পাছে লোকে কিছু বলে"
আ্যাজ ইউজুয়াল আজও আপু আমায় সাথে নিয়ে ঘুরছে। আমাদের দু বোনের পরণে গোল্ডেন বর্ডারের ধবধবে সাদা রাজশাহী সিল্ক। যদিওবা আমি সাদা রঙ পরতে একদমই রাজি ছিলাম না কিন্তু আপু বলেছে এটা একজন স্পেশাল মানুষের থেকে পাওয়া গিফট। স্পেশাল মানুষটা খুব করে রিকোয়েস্ট করেছে আমরা যাতে এই শাড়ি দুটোই পরি।
শাড়ি পরার মুহুর্তে কয়েকবার ভেবেছি স্পেশাল মানুষটা কে? বাপি, দুলাভাই নাকি নিদ্র!
বাপি হলে উনি আগেই বলে দিতেন কারণ বাপির পেটে কোনো কথা চাপা থাকেনা। সারপ্রাইজ বিষয়টা ওনার দ্বারা সম্ভব না। দুলাভাই সারপ্রাইজ দিলে ঘটনা টা অন্যভাবে সাজাতো, হুট করে এসে আমার হাতে ব্যাগ ধরিয়ে বলতো "বুঝলে সুপ্ত রাস্তা দিয়ে আসছিলাম, দেখি হাতের বা দিকে একটা শপিং মল। কাঁচের দেয়াল ভেদ করে ভেতরে চকচকে দুটো ম্যানিকুইনের গায়ে জড়ানো চকচকে দুটো শাড়ি। শাড়িগুলো দেখে কেবলই মনে হলো, আমার জীবনের স্পেশাল দুটো মানুষকে এই ছোট্টো উপহারটা না দিতে পারলে আমার জীবনটা বৃথা হয়ে যাবে। একটা আবদার রেখো তোমার এই ভাইয়ের থেকে, শাড়িটা অবশ্যই পরবে সুপ্ত এবং তোমার রাগী বোনটাকেও পরতে বাধ্য করবে"
রইলো বাকি নিদ্র, তার তো আপুর সাথে এতটা সখ্যতা গড়ে ওঠার কথা না। তাহলে কে দিলো এই উপহার?
আমার ভাবনা সুদুরপ্রসারি হবার পূর্বেই আপু সযত্নে শাড়ি পরিয়ে দিলো। শাড়িটা গায়ে জড়াবার পর মুহূর্তে অদ্ভুত একটা অনুভূতি আমার মনকে নাড়া দিতে লাগলো। মনে হচ্ছিল এক অন্যরকম স্নেহ, মায়া-মমতার স্পর্শ এই শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে জড়ানো।
এমন স্নেহ ভালোবাসা নাড়ির টানে পাওয়া যায়।
আমার এই অনুভূতি আমি কারো সামনেই প্রকাশ করলাম না কেবল নিজের মধ্যে চেপে রাখলাম।
অদ্ভুত ভাবে বড় খালামণি ছাড়া কারোরই আমাদের এমন সাজগোজে সমস্য ছিল না। বরং সবাই কেমন স্নেহভরা, ছলছল নয়নে তাকিয়ে ছিলো আমাদের দিকে।
আমার বারবার মনে হচ্ছিল আমি আমার জীবন সম্পর্কে যতটুকু জানি ততটুকু পর্যাপ্ত নয়। আরো অনেক কিছু জানতে বাকি, আরো অনেক রহস্যের মায়াজাল কাটানো বাকি।
___
অফিসারস ক্লাবে পৌঁছুনোর পর সবাই ছন্নছাড়া মত হয়ে গেলো। কাজিনরা গেইট ধরবে বলে সরঞ্জাম জোগাড় করছে, মা আর বাপি জুয়েলারি শপে গিয়েছে। এক্সামের কারণে দুলাভাই আসতে পারেনি, আপু তার সাথে ভিডিও কলে কথা বলছে আর সব ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছে ।
শিউলি আপুকে বড় খালামণি আর তার মেয়েরা পার্লারে নিয়ে গিয়েছে এখনো আসেনি।
আমি একা একা কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। লাস্ট মোমেন্টে আভা আর জেরিন দুটোরই জ্বর এসে গিয়েছে, ১০৩ ডিগ্রি জ্বর। আমি ড্যাম শিওর বাসা থেকে বেরুতে দিচ্ছে না বলে অমন বাহানা শুরু করেছে। ওকে ফাইন, আমিও কথা বলবো না কারো সাথে। আজ থেকে ওদের সাথে আমার কাট্টি।
পুরো দোতলা চোখ বুলিয়ে দেখলাম নিদ্র এক কোনে বসে মোবাইল চাপছে । এইতো পেয়েছি একজন সঙ্গী ।
কালবিলম্ব না করে শাড়ির কুঁচি চেপে ধরে দিলাম এক ছুট।
হুড়মুড় করে তার পাশে বসা মাত্রই সে ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালো।
আমি দাঁত বের করে হেসে প্রশ্ন করলাম_
-- হাই। হাউ আর ইউ?
-- আই আ্যাম ফাইন।
-- আমাকেও জিজ্ঞেস করো আমি কেমন আছি।
-- "তুমি!" এক্সকিউজ মি তুমি কি আমায় "তুমি" সম্বোধন করলে?
-- ইয়েস অফকোর্স।
-- আমার জানামতে আমি তোমার টিচার হই সুপ্ত। তুমি একজন টিচার কে তুমি সম্বোধন করছো!
-- তুমি কি শুধুই আমার টিচার? তুমি হলে আমার টিচার জামাই, তোমার সাথে বিয়ে হলে গেইটে বড় বড় করে লেখা থাকবে "আইসিটি স্যার হয়ে গেলো বর"
জামাই কে কেউ আপনি বলে সম্বোধন করে?
-- সুপ্ত একটু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছেনা? তুমি কিন্তু মাত্রা ছাড়া মজা করছো।
-- হু সেইড আই আ্যাম জোকিং? আমি তো সিরিয়াসলি বলছি। এইচএসসি টা পার হতে দাও তোমার গলায় টুপ করে ঝুলে পড়বো।
চোখ মেরে বললাম আমি। আমার এমন দ্বিধাহীন স্বীকারোক্তি দেখে যারপরনাই বিষম খেলো নিদ্র। ফোন ফেলে চোখ বড় বড় করে তাকালো আমার দিকে। আমি নিচু হয়ে ফোনটা তুলে নিয়ে ওর হাতে দিলাম। স্বাভাবিক ভাবেই বললাম_
-- আসো সেলফি নিই। আমাকে সুন্দর লাগছে তাইনা?
নিদ্র বিস্ময়ের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বুঝতে পারছি। ওর হতভম্বতা আমাকে দারুণ আনন্দ দিচ্ছে ।
আমি নিজেকে স্বাভাবিক রেখেই ওর কাছাকাছি মুখ নিয়ে কয়েকটা ছবি তুললাম।
উঠে আসবো ঐ মুহুর্তে আমার ডান হাত চেপে ধরলো নিদ্র। চোখমুখ শক্ত করে আমায় বললো_
-- এসব কোন ধরনের বেয়াদবি সুপ্ত? তুমি লিমিটলেস কাজকারবার করে যাচ্ছো। বলবো তোমার বাবাকে? যে তুমি ডিরেক্ট বিয়ের প্রপোজাল দিচ্ছো আমায়।
-- হ্যাঁ বলে দাও। আরো ভালো হবে আমি তোমার গলায় আরো জলদি ঝুলে পড়তে পারবো।
-- সুপ্ত!
ধমকে উঠলো নিদ্র। ওর ধমক শুনে আমার কান্না পেয়ে গেলো, ওর না বোধক উত্তর আমি মানতে পারবো না। তাই নিজেকে দূর্বল করা যাবেনা।
আমি নিজের কান্না নিয়ন্ত্রণ করে চারিদিক ভালোভাবে লক্ষ্য করে টুপ করে নিদ্রর ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে বললাম_
-- রেগে যাচ্ছো কেন? ভালোবাসা কি অপরাধ!
শোনো আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি এবং আমার জীবনে শুধু তোমাকেই চাই। তুমি আমৃত্যু আমার নিদ্র হয়েই থাকবা। তোমাকে আমার হতেই হবে। এখন রাগ করে থেকো না তো, একটু হাসো।
নিদ্র আমার হাত ছেড়ে দিলো। নিজের চুল খামচে ধরে মাথা নিচু করে বললো_
-- দিস ইজ নট রাইট সুপ্ত, দিস ইজ নট রাইট।
আমি নিদ্রর কথায় কান দিলাম না। সুপ্ত কখনোই রঙ ডিসিশান নেয়না। সুপ্ত ইজ অলওয়েজ রাইট এন্ড নিদ্র শুধুই সুপ্তর।
____
পুরো প্রোগ্রাম চলাকালীন সময়ে নিদ্র আমায় ভীষণ ভাবে এড়িয়ে গেলো। আমিও এক চুল ছাড় দিলাম না তাকে। ডিস্টার্ব করতে করতে অতিষ্ঠ করে ফেললাম তাকে।
ওর বিরক্তির এক্সপ্রেশনও কি সুন্দর!
বিদায়ের সময় বউয়ের সাথে কাজিনরাও যাবে এমন বায়না ধরলো সবাই। মেজো খালু তার গাড়ি ছেড়ে দিলেন আমাদের ভাই বোন দের জন্য। শিউলি আপু নিদ্রকে জোর করলো যাওয়ার জন্য কিন্তু সে যাবেনা, চাকরির ইন্টারভিউ আছে এমন বাহানায় না করে দিলো। নিদ্র যেখানে যাবেনা সেখানে আমি যাই কি করে?
আমিও না করে দিলাম। আমার নাবোধক উত্তর কারোরই কাম্য ছিলো না। সবাই চেপে ধরলো আমাকে যেতেই হবে। আমি বাপিকে বললাম আমার পরীক্ষার কথা বলো । বলা বাহুল্য বাপি আমার যাওয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন , আমারও আগ্রহ নেই এটা শুনে উনি খুশি হলেন।
বাপির মুখের ওপর কেউ কথা বলতে পারেনা। বাপি না বলার পর কেউ আর টু শব্দ করার সাহস পেলো না।
অবশেষে বিদায় হয়ে গেলো। তিনটে গাড়ি করে আমাদের ফ্যামিলি মেম্বার রওয়ানা হয়ে গেলো তাদের বাসার উদ্দেশ্যে । আমি বুদ্ধি করে নিদ্রর গাড়িতে ওঠার বন্দোবস্ত করলাম।
আমায় দেখেই নিদ্র আর গাড়িতে উঠলো না, মুখ ফিরিয়ে হাঁটা ধরলো। আমি নিদ আপু আর ওর বন্ধুদের আমাদের ব্যাপারটা৷ সত্য মিথ্যে মিলিয়ে বুঝিয়ে বললাম সাথে এটাও বললাম আমি আজ ওর সাথেই ফিরবো।
আপুর কপালে চিন্তার ভাজ পড়লেও তাকে আশ্বস্ত করে বেরিয়ে এলাম আমি।
নিদ্র ততক্ষণে হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে গিয়েছে। তার দেখা পেতে আমায় জুতো খুলে দৌড়োতে হচ্ছে ।
এই ভালোবাসা কি করে ছাড়বে আমায়!
___
রাত্রি দশটা। ফাঁকা রাস্তার ফুটপাত ধরে আমরা হেঁটে চলেছি। নিদ্র আমার থেকে বেশ দূরেই অবস্থান করছে। আমার খুব ইচ্ছে করছে ওর পাশাপাশি হাঁটতে। আমি নিশ্চুপ তার পিছুপিছু এগোচ্ছি।
হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম বেশ কয়েকটা ম্যানহোল পর কিছু পেরেক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
আমি যদি সামহাউ আহত হয়ে যাই তাহলে পাশাপাশি কি, নিদ্রর কোলেই তো ওঠা সম্ভব । আমার চোখজোড়া খুশিতে চকচক করে উঠলো। নিদ্র ধীর গতিতে হাঁটছে, চিৎকার দিলে অবশ্যই শুনবে।
এমনি এমনি আবদার করলে তো কোলে নিবে না তাই আহত হয়েই মনোবাসনা পূর্ণ করি নাহয়!
মনে মনে দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে জুতো জোড়া পুনরায় খুলে ফেললাম। এক সেকেন্ড দেরি না করে দানবীয় পেরেকগুলোর ওপর পা রাখলাম। শরীরের ওজন পায়ে পড়া মাত্রই ভয়ংকর ব্যাথা দিয়ে একটা পেরেক ঢুকে গেলো আমার পায়ে।
যন্ত্রনায় গলা ফাটিয়ে দিলাম চিৎকার ।
এতেই কাজ হয়ে গেলো। নিদ্র ছুটে এলো আমার কাছে। পেরেক ঢুকে গলগলিয়ে রক্ত বের হচ্ছে পা থেকে।
নিদ্র কতক্ষণ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থেকে হতভম্ব গলায় জিজ্ঞেস করলো_
-- এটা কীভাবে হলো?
ব্যাথায় নীল হয়ে আমি ফোঁপাচ্ছি বলে শুনতে পেলাম না ঠিকঠাক । সে ধমকে উঠলো_
-- কি করে হলো এটা সুপ্ত?
আমি উত্তর দিলাম না, ফোঁপাতে ফোঁপাতে ইশারায় পেরেকটা বের করতে বললাম।
ও চোখ গরম করে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে ফট করে আমায় কোলে তুলে নিলো। অদূরে রাস্তার বাঁকে একটা কাঠের বেঞ্চ। দ্রুত সেখানটায় বসালো। তারপর আমার পায়ের কাছে বসে কোমল কণ্ঠে বললো__
-- এক্ষুনি ব্যথা সেরে যাবে সুপ্ত,ডোন্ট ক্রাই।
আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম। ও আলতো ভাবে আমার পা টা টেনে নিলো, আমার চোখে চোখ রেখেই হুট করে পেরেকটা টেনে বের করে ফেললো।
আমি চোখ বড় বড় করে গলা ফাটিয়ে দিলাম চিৎকার । ও তড়িঘড়ি করে উঠে আমার মাথাটা বুকে চেপে ধরলো। মাথায় হাত বুলিয়ে বললো_
-- ডোন্ট ক্রাই সুপ্ত। আমরা এক্ষুণি ডক্টরের কাছে যাবো।
ঝটপট ফোন বের করে কাকে যেন একটা কল করে বললো হসপিটালেই থাকতে। এনজিওরড পেশেন্ট নিয়ে আসছে।
আমি ধারণা করে নিলাম ফোনের ওপাশে তার কোনো বন্ধু ।
ওদিকে পাত্তা না দিয়ে দু হাতে ওর কোমর জড়িয়ে বললাম _ "ব্যথা করে"
ও একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পকেট থেকে রুমাল বের করে আমায় পায়ে বেঁধে দেয়।
আমি আবদারের সুরে বলি_ কোলে নাও?
নিদ্র বিনাবাক্য ব্যয়ে পুনরায় কোলে তুলে নেয় আমায়। আমি শক্ত করে ওর গলা জড়িয়ে ধরি। খুশিতে আমার কান্না থেমে যায়।
ল্যাম্পপোস্টের হলুদ আলোয় ঝলমল করছে রাস্তা, চারিদিকে সুনসান নীরবতা । থেকে থেকে বাতাসের ঝাপটা আসছে আমাদের শরীরে। দু'জনারই পারফিউমের সুগন্ধ মিলে মিশে অদ্ভুত সুবাসের সৃষ্টি করছে। আমি অপলক তাকিয়ে আছি নিদ্রর পানে। মানুষটা এত সুন্দর কেন! ছেলে মানুষ এত সুন্দর হলে কীভাবে হবে? বাকিটা জীবন তো আমার পোজেসিভ পার্টনার হয়েই কাটাতে হবে মনে হচ্ছে ।
হসপিটালের পথে হাঁটতে হাঁটতে নিদ্র বলে ওঠে _
-- সামান্য কোলে ওঠার জন্য পায়ে পেরেক ফুটিয়ে অসুস্থ হবার দরকার ছিলো সুপ্ত? আমায় বললেই তো কোলে নিতাম।
ওর কথা শুনে আমি চকিতে তাকাই। সবটা বুঝে গেছে?
ওর দৃষ্টি এখনো সামনে। আমি লজ্জা মিশ্রিত গলায় বলি_
-- আমি বললেই তুমি আমায় কোলে তুলে নিতে?
ও কোনো উত্তর করে না। আমি অধৈর্য্য গলায় প্রশ্ন করি_
-- ভালোবাসো?
সে এবার আমার চোখের দিকে তাকায়। তার দৃষ্টি কিছু বলছে।
আমি শুকনো ঢোক গিলে মিনমিন করে বলি_
-- ভালোবাসার স্বীকারোক্তি করলে বুঝি পাপ হবে!
নিদ্র মৃদু হাসে। আমার নাকের ডগায় চুমু খেয়ে বলে_
-- তুমি একটা পাগল এটা কি জানো?
আমি অবাক-বিস্মিত এবং হতভম্ব । চোখ বন্ধ করে ওর গলায় মুখ গুঁজি।
--"তুমিও এই পাগলের প্রেমে পড়ে গেলে নিদ্র সাহেব"
নিদ্র ফিসফিসিয়ে বলে_
"তুমি আমার এক মুঠো গোলাপ "
চলবে?
Sinin Tasnim Sara
أنت تقرأ
এক মুঠো গোলাপ
غموض / إثارةশুচিস্মিতা কবির সুপ্ত। সর্বদা নিজ জীবন চক্রকে জটিল ভেবে এসেছে। এক সময় তার জীবন সম্পর্কে জটিল ধারণাগুলোকে ভুল প্রমাণ করে জীবনের মানে শেখাতে এসেছিল একজন। জীবন নামক বর্ণহীন আকাশে হুট করে শত রঙের প্রজাপতি ডানা মেলে উড়তে শুরু করেছিল। সকল জড়তা কাটিয়ে বর্ণ...