বন্ধু

11 1 0
                                    

আজ কালীপুজো। অঞ্জন আজ ভীষণ খুশি। ওদের অট্টালিকার সমান বিরাট বাড়িতে প্রতি বছরই মহা ধুমধাম করে কালীপুজোর আয়োজন করা হয়। এবারও হয়েছে। এখন মায়ের সন্ধ্যা আরতি চলছে। পূজামণ্ডপে ধুনুচির গন্ধের সঙ্গে ঢাকের বাদ্যি মিলেমিশে সৃষ্টি হয়েছে এক মনোরম পরিবেশ। অঞ্জন দালানে বসে মাতব্বরের মতো ঢাকের তালে-তালে মাথা দোলাচ্ছে। পাশে বসে ওকে সঙ্গ দিচ্ছে ওর 'বিশেষ বান্ধবী' স্নেহা। আজ অঞ্জন বাবুকে আর পায় কে? একেই সে বড়লোক বাড়ির ছেলে। নিজেদের বাড়ির পুজো। তার উপর আবার প্রেমিকাও সাথে আছে। আর কী চাই!

এমন উপভোগ্য মুহূর্তটা বাঞ্চাল করে দিল একটি উড়ো ফোন কল। অচেনা একটা নম্বর থেকে অঞ্জনের মোবাইলে বার-বার কল আসছে। ধ্যাৎ! পুরো মেজাজটাই তিরিক্ষি হয়ে গেল। অনিচ্ছা সত্ত্বেও কল'টা রিসিভ করল অঞ্জন।
"হ্যালো?"
"মিঃ অঞ্জন গুহ স্পিকিং?"
"ইয়েস, আই অ্যাম।" একটু রুক্ষ ভাবেই উত্তর দিল অঞ্জন, "কে বলছেন?"
"আমার নাম ধাম ঠিকানা জেনে কাজ নেই। আপনি এক্ষুনি আপনার বাড়ির পশ্চিম দিকের বড় বট গাছটার নিচে চলে আসুন। আমি ওখানেই অপেক্ষা করছি।"
"পাগল নাকি?" সশব্দে হেসে উঠল অঞ্জন, "আমি কী করতে একটা অজানা লোকের সাথে দেখা করতে যাব? আপনার দরকার থাকলে আপনিই আসুন। আমি বাড়ির দালানেই বসে আছি।"
"সেকি!" একরাশ ব্যঙ্গ ঝরে পড়ল মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসা কণ্ঠস্বরে, "ডাকসাইটে পুলিশ অফিসার রাজীব গুহ'র একমাত্র ছেলে শেষে কি না একটা উড়ো ফোন কলে ভয় পেল? হাহাহা! থাক, আসতে হবে না। তুই লেজ গুটিয়ে ঘরেই বসে থাক। কাপুরুষ কোথাকার!"

এই অঞ্চলে দুঁদে ইন্সপেক্টর রাজীব বাবুর এমনই দাপট, যে কেউ তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যের দিকে চোখ রাঙিয়ে কথা বলার সাহস পর্যন্ত পায় না। সেখানে কোথাকার কে এক উটকো লোক তাঁর সবেধন নীলমণি কে যেচে ফোন করে হুমকি দেবে? ইম্পসিবল্! রক্ত উঠে গেল অঞ্জনের মাথায়। এক ঝটকায় চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে সে। স্নেহা ওর পাশেই বসে ছিল, একথা ভুলে ওর সামনেই গালাগালি দিয়ে বলল-
"শালা তুই কে রে হারামজাদা? খুব বড়-বড় কথা বলছিস যে! তুই জানিস আমি কে?"
"বিলক্ষণ জানি। এক বেইমান ঘুষখোর পুলিশ অফিসারের কুলাঙ্গার ছেলে তুই।"
"কী! এত বড় কথা? আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।"

বন্ধুМесто, где живут истории. Откройте их для себя