প্রথম পর্ব

8 0 0
                                    

- "বুঝতেই পারছিস জয়, খুবই ক্রিটিক্যাল একখানা কেস হাতে পেয়েছি। নাহলে তোর এত ব্যস্ততার মধ্যে তোকে ডেকে পাঠাতাম না।"
- "সে আর বলতে!" চায়ের কাপে চুমুক দিতে-দিতে বললাম, "নেহাৎ বিপাকে না পড়লে আমার কথা তোমার মনেই পড়ে না। তা ব্যাপারখানা কী?"
- "বেশ প্যাঁচালো কেস রে। এই তদন্তে তোর হেল্প না পেলে বড় ঝামেলায় পড়তে হবে আমাকে।"

আমি ডঃ জয়ব্রত বসু। বয়স পঁয়ত্রিশ। সদ্য একটা মেডিক্যাল কলেজের 'ফরেন্সিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজি' বিভাগে অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেছি। এই মুহূর্তে আমি বসে আছি আমার দাদা, অর্থাৎ অ্যাডভোকেট অনুব্রত বসুর চেম্বারে। পেশায় একজন উকিল হলেও মানুষটার ঝোঁক বরাবরই গোয়েন্দাগিরির দিকে। তাই বলা ভাল, ইনি একজন উকিল কাম শখের ডিটেক্টিভ। বেশিরভাগ কেসেই দাদার প্রয়োজন পড়ে আমার সাহায্যের। তার বক্তব্য....আমি যেহেতু ফরেন্সিক লাইনের লোক, তাই কিছু বিশেষ-বিশেষ ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ পেলে তার কাজটা নাকি অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়। সে যাই হোক, দাদার আদেশ তো আর ফেলতে পারিনা। তাই গোয়েন্দাগিরির ক্যারিয়ার শুরু হওয়ার পর থেকেই আমি তার অঘোষিত সহকারী। ইদানিং কয়েকটা ছোটখাটো কেস সল্ভ করে কিছুটা সুনামও হয়েছে আমাদের। কিন্তু আজকের এই কেসটা নাকি অনেক বেশি জটিল, অনেক বেশি বিপজ্জনক।

- "এবার বলো তো দাদা," চায়ের পেয়ালাটা টেবিলে নামিয়ে রেখে বললাম, "পুরো কেসটা খোলসা করে বোঝাও আমাকে।"
- "আমি কিছু বলব না। আগে ক্রাইম সিনে গিয়ে পুরো ব্যাপারটা দেখ, নিজেই সব বুঝে যাবি।"

আমাদের গাড়িটা এসে থামল টালার এক পুরনো বাড়ির সামনে। পুলিশ বাড়িটা সিল করে রেখেছে। দাদা নিজের পরিচয় দিতেই অফিসার আমাদের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দিলেন।
- "এখানে কী হয়েছে রে দাদা?"
- "মার্ডার," দাদা ফিসফিস করে বললেন, "আর যে-সে মার্ডার নয়....একদম অভিনব কায়দায় মানুষ খুন।"

ভিতরে একখানা বড় ঘর। ঘরের ঠিক মাঝখানে একটা বড় খাট। আর সেই খাটেই শায়িত রয়েছে এক প্রৌঢ়ার মৃতদেহ। বয়স হবে ষাট-বাষট্টির কাছাকাছি। হত্যাকারী খুব নিপুণ হাতে কোনও ধারালো ছুরি বা সেই জাতীয় কিছু একটা দিয়ে মহিলার শ্বাসনালি কেটে দু'ভাগ করে দিয়েছে। রক্তে ভিজে গেছে বিছানার সাদা চাদরটা।

দ্যি কাটথ্রোটWhere stories live. Discover now