সকাল ১০ টা।। গাবতলী বাস টামিনাল।

776 8 4
                                    

বসে আছি ১ ঘন্টা ধরে । হারামি টার এখনো আসার খোজ নেই। ও পরিচয় দিয়ে নি আমি রিয়াদ । কপাল গুনে আর বাপের টাকায় একটা বেসরকারী ইউনিভার্সিটি তে সি.এস.ই. করতেছি। আজ আমরা কিছু ফ্রেন্ডরা মিলে যাচ্ছি আমার গ্রামের বাড়ি যশোরে। কিন্তু একটারো আসার নাম নেই উলটা আমি এসে বসে আছি। হারামি সব। এমন সময় শুনলাম কেউ যেনো গলা ফাটাইতে ফাটাইতে আসতেছে। বুঝে ফেলছি এ আর কেউ না আমাদের রিতু। নাম মেয়েদের হলেও সে ছেলে । ক্যামনে তা আমরাও জানি না।
.
রিতুঃ কিরে মামুর বেটা ।এই ভোর বেলা কি করস।
.
আমিঃ এমন একটা ভাব যেন তোদের নিয়ে যাইতে আমার দায় পড়ে গেছিলো ?
.
রিতুঃ কি কউ মামা এইডা ।আমরা না গেলে তো তোর টুর টাই খারাপ যাবে রে। আমরা তা ক্যমনে পারি বল।
.
(আমাদের দুইটার ঝগড়ার মাঝে বাকি দুই মহান এসে হাজির)
.
তারেক ঃ কি হচ্ছে ভাই লোক আপনাদের মাথা উত্তপ্ত বলে মনে হচ্ছে ?
.
অনিক ঃ ঐ সব একটূ স্থির হ তো। একটা সেলফি তুইলা নি। দেন বকিস সব।
.
সবাই ওর ওপর রেগে ছিলাম কিনা জানি না। ধুপ ধাপ করে শব্দ হইলো আর কিছু আর্তনাদ।
.
১১ টার সময় সোহাগ বাসের সুপারভাইসার এসে বললো কোচ নাম্বার ১০১ এর যাত্রী কারা ?
.
আমি বললাম মামা আমরা। তখন উনাকে ফলো করতে বললো। অনিক ফোন বের করে কইলো মামা আইডি দেন ফলো করি। লোকটা কিছুই বুঝলো না আমরা সবাই ওর মাথায় গাট্টি মেরে তার পিছে হাটা শুরু করলাম। বাসে উঠে দেখলাম আমাদের একটা সীটে একটা মেয়ে বসে আছে ।
.
আমি ঃ এক্সিউজ মি? এটা আমাদের সীট।
.
মেয়ে ঃ মানে কি? সীট বললেই আপনার হয়ে গেলো? নিজের টিকিট চেক করেন। তারপর সীট খুজেন গিয়ে। ফাও বকার জায়গা পান না মনে হয়। সুন্দরী মেয়ে দেখলেই মাথায় কু বুদ্ধি লাফ দেই তাইনা? যত্তসব।
.
অনিক ঃ চুপিসারে এসে বললো মামা মেয়ে নিজেরে সুন্দরী বলে দাবি করলো নাকি?
.
মেয়ে ঃ এই যে একদম মেয়ে মানুষ এর মত ফুসুর ফাসুর করবেন না । সাহস থাকলে জোরে বলুন।
.
আমিঃ হায় আল্লাহ এতো ঝগড়া বাধায় দিবে রে। টিকিট বের করে দেখলাম । না ঠিকই আছে । আমরা চারজন । সীট D1, D2, D3, D4 । মেয়ে D1 এ বসে হিরোয়িনগিরি করতেছে।
.
সুপারভাইসার কে ঝাড়ি দেয়ার জন্য রিতু ডাক দিয়ে বললো মামা এটা তো ঈদের টাইম না যে তোমরা এক টিকিট দুই জনের কাছে বিক্রি করবা। তারপর তিনি ওই মেয়ের টিকিট দিতে বললেন চেক করবেন বলে।
.
চেক করে বললেন যে আপু আপনার সীট তো B1 । ইংরেজি অক্ষর “বি” এর নিচের গোল টা উঠে গেছে বলে তিনি মনে করেছে যে D1 । তখন মেয়ে লজ্জা পেয়ে আমাকে সরি বললো। আমার তো ততক্ষনে মেজাজ মাথায়। নিজে ভুল করে আবার আমাকে বলে খুজে দেখতে। কিছু না বলে বললাম সমস্যা নাই আপনি আপনার সীটে যান তো।
.
আমরা আমাদের সীটে বসে পড়লাম। অনিক ফেইসবুক গুতিয়েই যাচ্ছে। তারেক ফোনে যেনো কার সাথে কথা বলছে । আর রিতু ঘুম দেবে বলে নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছে। আমরা নানা টপিক্স নিয়ে কথা বলেই যাচ্ছি। বাসের লোক বিষ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে আমদের দিকে। কে কাকে কেয়ার করে। এমন সময় চিৎকার করে কে জানি শকুনি গলায় বলে উঠলো, কি ব্যাপার আপনারা কি শুরু করেছেন বলুনতো। এত কথা ক্যানো বলছেন। বাসের মানুষে এর প্রব্লেম হচ্ছে তো। পায়ের ওপর থেকে চশমা টা নাকের ওপর বসিয়ে তাকিয়ে দেখলাম । আমি আবার নকুলান্ধ। আরে এতো সেই মিসটেক কন্যা। ঝাড়ি খেয়ে একদম চুপ করে গেলাম কিন্তু মাইয়া আমাদের এখনো চিনে পারে নাই। দুই মিনিট এর মাথায় চারজন একসাথে হেসে উঠলাম যেই হাসিকে এক শব্দে বলে অট্টহাসি। উই ডোন্ট কেয়ার। বক বক করতে করতে কখন যে ফেরি ঘাটে চলে এসেছি বুঝতেই পারি নাই। সবাই বাস থেকে নামলাম। ফেরির ওপর হেটে বেড়াচ্ছি দেখি সেই মিসটেক কন্যাও নেমেছে। ঝালমুড়ি খাচ্ছে। হেডফোনে সুন্দর একটা গান বাজচ্ছে। তাহসান এর “বড় অবেলায় পেলাম তোমায়” । আমি যে সেই ধরে মেয়ের দিকে তাকায় আছি নিজেও জানি না। মেয়েটা অসস্থি বোধ করছিলো মনে হয় তাই বাসে উঠে গেল। তারেক দেখি একটু পর পর কথা বলেই যাচ্ছে কার সাথে। রিতুরে জিজ্ঞাসা করতেই এড়িয়ে যাওয়া টাইপ উত্তর দিল। আমিও অতোটা মাথা ঘামালাম না। ফেরি পার হয়ে গেলে বিকেল ৩ টার ভেতর যশোরে পৌছায় গেলাম। দুইটা রিক্সা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে তো আমি অবাক বাসা এত সাজানো ক্যান। লাইটিং করা হয়েছে পুরা বিল্ডিং এ। কাহিনি কি। তারেক দেখি একটু জোরেই হেটে বাসায় ঢুকলো। ভেতরে ঢুকেই আমি জ্ঞান হারালাম একটা বড় আর্ট পেপার দেখে। তাতে লেখা “রিয়াদের হলুদ সন্ধ্যা”
.
আমিঃ এসবের মানে কি?
.
মাঃ কোনোই মানে নাই কাল তোর গায়ে হলুদ আর পরশু বিয়ে।
.
আমিঃ দেখলাম আমার সব ফ্রেন্ড চলে এসেছে। ক্যামনে আসলো এরকম খবর তো আমিও কাউকে বলি নাই।
.
তখন তারেক দেখি আম্মুর হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে বললো আন্টি সবাই চলে এসেছে খালি আমাদের বান্ধবী গুলা বাদে। তখন আম্মু বললো তানজির, স্বজন, রাসেল, সাঈদ, আনিকা, তনুশ্রী, জেবা, প্রিয়াম, দোলা ওরা আগেই এসেছে বাজারে গেছে কি জানি কিনতে। রিয়াদের ঘর সাজানোর কাজে লাগবে নাকি।
.
আমার আর কিছু বুঝতে বাকি রইলো না যে আমি বাদে আমার শত্রু গুষ্টি মানে দোস্তগুলা সবাই এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানে। আমি কি এমন করলাম যে আমাকে বিয়ে দেয়ার জন্য লাগলো মা।
.
আমি ঃ মা আমি চাকরি বাকরি কিছুই করি না এখনো। আমি বিয়ে করবো না। একথা শুনে মা অজ্ঞান। জ্ঞান ফিরে আহাজারি করে কান্না শুরু করে দিল আর বললো ওরে তারেক তুই যা বলেছিলি তাই মিলে যাচ্ছে রে বাপ। আমি তখন জিজ্ঞাসা করলাম মা তারেক তোমাকে কি বলেছে ? মা যা বললো তা শুনে আমার কান দিয়ে গরম হাওয়া বের হয়ে গেল। সারমর্ম এই যে আমি নাকি কোন মেয়ের পিছে ঘুরছি , টাকা পয়সা নষ্ট করছি। তাই যাতে এইসব না করি এই জন্য বিয়ে দিতেছে। কি আর বলবো একেই বলে দোস্ত যারা অলয়েজ বাশ নিয়ে রেডি। কাজিন এসে বললো ভাইয়া ভাবীর ছবি দেখবি না? তখন দেখি ট্যাব হাতে ধরায় দিয়ে বললো নে দেখ। মেয়েটা দেখতে আর যাই হোক ফ্রোজেন মুভি এর স্নো কুইন এলসা এর পাশে দাড় করানো যায় , মেকাপ করে নি, এডোবি দিয়ে এডিট ও করে নাই, সিম্পল ভাবে তাকিয়ে আছে। ক্যামন একটা মায়া আছে চোখে। দেখে মনে হচ্ছে কতদিনের চেনা। যাই হোক ট্যাব টা ফিরিয়ে দিলাম ঠিকই কিন্তু শেয়ার ইট দিয়ে পিকচার টা নিয়ে রাখলাম। এভাবে আমার সিঙ্গেল জীবনের মজা শেষ হতে যাচ্ছে ভাবতেই খারাপ লাগছে। কিন্তু কি আর করা জননীর আল্টিমেটাম বলে কথা। যারা বাজারে গেছিলো তারা ফিরে আসলো। কি মধুর কন্ঠে তারা আমাকে কংগ্রাচুলেশন জানালো। দাত কিড়মিড় করলেও তেমন কিছুই বললাম না। জার্নি করে টায়ার্ড ছিলাম তাই ঘুমিয়ে গেলাম। বাকিরা সবাই কাজ করছিল।
.
ঘুম ভেঙ্গে গেল ভোরে । নামাজ টা পড়ে ছাদে গেলাম। আহ হালকা শীতের ঠান্ডা হাওয়া টা ভালই লাগছে তো। হঠাৎ সেই মিসটেক কন্যার চেহারা ভেসে উঠলো চোখের ভেতর। কানা না হলে মেয়েটার চেহারা ভালভাবে দেখে রাখতাম। আবছা আবছা মনে পড়ছে। ভালই ছিল মনে হয়। নিচে থেকে মায়ের ডাকে নিচে গেলাম। বললো খেয়ে নে তাড়াতাড়ি। ফকির গুলা রে ডাক দিলাম মানে আমার দোস্ত গুলারে। প্রিয়াম দেখি হাই তুলতে তুলতে এসে বসে পড়লো ডাইনিং এ।
.
আমি ঃ দোস্ত বাকি হারামি গুলা কই। একটু ডেকে নিয়ে আয় যা।
.
প্রিয়াম ঃ ৪৪০ ভোল্টের শক খাওয়ার মত মুখ করে সাথে সাথে সেই চেহারা লাল করে বলল, ঐ তুই কি বললি? আমরা হারামি?
.
আমি ঃ আরে না না। ধুর মহারানী কইছিলাম তুই ঘুমের ঘোরে ভুল শুনেছিস। ওর চেহারাতে কনফিউজড ভাব ফুটে উঠেছে।
.
প্রিয়াম ঃ ঘুমের কারনে এবার বেচে গেলি তুই কানা। নেক্সট টাইম যদি মনের ভুলেও বলেছিস তাহলে অকালে তোর বৌ বিধবা হবে।
.
আমি ঃ ওকে ওকে।
.
সবাই নাস্তা করে নিলাম। আমি বিয়ের পাত্র তাই আমার কাজ নেই। সবাই ছুটাছুটি এর ওপর আছে। আশেপাশের গুঞ্জন থেকে শুনতে পেলাম মেয়ে নাকি মেডিকেল এর স্টুডেন্ট। আমি শেষ। এইডা কি শুনলাম রে। আমার বাসার ফকিরদের ভেতর দুইটা ফকির আছে ডা. সাঈদ ফকির আর ডা. প্রিয়াম ফকিন্নি । দুইটারেই ডাক দিলাম। মুখটারে যতটা সম্ভব রাগী বানায়ে বললাম তোদের সাথে কথা আছে।
.
জিজ্ঞাসা করলাম মেয়েটা কে?
.
আমি কি চিনি? আবু সাঈদ এর নির্লিপ্ত জবাব।
.
তোরা জানিস মেয়েটা কে। সো কোনোরকম প্যাচাল না পেড়ে বলে ফেল।
.
দুইজন একসাথে বলে উঠলো আমরা কিছুই জানি না। আমি তখন সাঈদ রে বললাম শোন তুই এমনিই প্রি এ্যানাল এ্যাবসেস এর রোগী। আমি চাই না আজ রাতে তোর উপুড় হয়ে ঘুমানো লাগে।
.
ওয়ার্নিং এ কাজ হইছে। প্রিয়াম বলবে না শিওর। সাঈদ মুখ খুললো। মেয়ে হচ্ছে প্রিয়াম এর বান্ধবী। মেয়ের বাড়ি কোথায় তা সাঈদ জানে না। মেয়ে ময়মনসিং মেডিকেল এর স্টুডেন্ট। আমি ভেবে পারছি না যে মেয়ে সরকারি মেডিকেল এর স্টুডেন্ট সে ক্যান আমার মত বেসরকারিতে পড়া ভোলানাথ কে বিয়ে করতে রাজি হইলো।
.
তখন আমাদের কাপড়ের ইঞ্জিনিয়ার মানে ফ্যাশন ডিজাইনার এ পাঠরত জেবা এসে কইলো ঐ যা ভাবার পরে ভাবিস এখন বল এখানে কোন টা পরবি কাল বিয়েতে। স্যূট নাকি পাঞ্জাবি। আমি বললাম ক্যান মেয়ে দেখার টাইমে তো আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করিস নাই এখন ক্যান আসছিস জিজ্ঞেস করতে। আমাদের অভাগাদের ভেতর সবচেয়ে ঠান্ডা মাথার মানুষ দোলা । বেচারা আমাদের একমাত্র দোস্ত যে লাইফের অবসরের মজা নিচ্ছে। ও তখন কইলো ঐ রিয়াদ তোরে বিয়ে দেয়া হচ্ছে পানিতে ফেলে দিচ্ছি না। এত না বকে যেটা চয়েজ করবি কর। ফার্মাসী এর দোকানদার মানে ফার্মেসী এর স্টুডেন্ট তানজির এসে কইলো দোস্ত তোরই তো কপাল আমরা সারাদিন বিয়ে বিয়ে করে পাগল হয়ে যাচ্ছি আর তোরে কি সুন্দর বাসা থেকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।
.
সার্কিট অনিক ওর গার্লফ্রেন্ড এর সাথে গল্প করতেছে। আর আমার মাথায় ঘুরতেছে কাল আমার পাকামো করার দিন শেষ হবে । আর এরা কত মজায় না থাকবে রে। খাওয়া দাওয়া এর দায়িত্ব পড়েছে স্বজন এর ওপর। সারাদিন গাজর খেয়ে বেড়াচ্ছে আর তদারকি করছে। তনুশ্রী আমাদের মেকাপ আপু। সে তার ত্বক নিয়ে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন। শসা সালাদ এর জন্য কিনলেও অর্ধেক গেছে ওর চোখের ওপরে দিতে দিতে আর আলু বেটে মুখে লাগাচ্ছে, চুলে দিয়েছে পেয়াজ বাটা, হাতে দিয়েছে মেহেদি বাটা। খাওয়াই দিচ্ছে দোলা। ওর কাহিনি দেখে মনে হচ্ছে বিয়ে ওনার হবে। যাই হোক ওর কাজ ও করুক। স্বজন তো চিৎকার করে সব মাথায় তুলে ফেলছে । রাতে ডিম রান্না হবে তা ডিম এখনো কেনা হয়নি কি জন্য এই নিয়ে। অনিক তার পাইপ মার্কা এক হাত লম্বা লেন্সওয়ালা ডীএসএলআর দিয়ে ছবি তুলে বেড়াচ্ছে।
.
আনিকা মটু খেয়েই যাচ্ছে। মুখের নড়ন তার থামেই না। আবার ওজন তার ৩০/৪০ । সে আবার ডায়েট করে। তাও আবার ক্রাস ডায়েট। তিনি আবার এম.আই.এস.টি তে পড়েন। আম্মুকে সারাদিনের ভেতর খুব কমই চোখে পড়েছে। আমার ফোনে আননোন নাম্বার থেকে কল আসলো একটা।
.
আমি ঃ রিসিভ করে সালাম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কে বলছেন?
.
ফোনকারী ঃ আপনি কি রিয়াদ বলছেন?
.
আমি ঃ জ্বি। আমিই রিয়াদ। কে বলছেন?
.
ফোনকারী ঃ আমি মানহা। রুপন্তী তাসনিম মানহা।
.
আমি ঃ এই নামে আমি কাউকে চিনি বলে মনে আসছে নাতো ।
.
মানহা ঃ কাল মনে আপনার সাথে আমার বিয়ে।
.
আমি ঃ ধপাস করে পড়তে পড়তে গিয়েও নিজের পতন ঠেকালাম। কি মেয়ে রে বাবা। নিজেই ফোন করে কি সাবলীল ভাবে বলে দিল কাল আমার সাথে তার বিয়ের কথা। আসলেই যুগ পালটায়ছে। বেশি না ভেবে আবার জিজ্ঞাসা করলাম কোনো প্রয়োজন?
...
মানহা ঃ না এমনিই এই ডিজিটাল যুগে এসেও কেউ কাউকে না দেখে বিয়ে করছি তাই ভাবলাম দেখা না হোক কথা তো বলাই যায়।
আমি ঃ ও আচ্ছা। ভাল। ক্যামন আছো ?
.
মানহা ঃ ভালই আছি কিন্তু বেশ ভয় করছে ।
আমি ঃ ভয় করছ কি কারণে ?
.
মানহা ঃ বা রে। জীবনে প্রথমবার বিয়ে করবো তা ভয় তো লাগবেই। আপনার ভয় করছে না?
.
আমি ঃ নাহ। আমিতো এর আগেও অনেক বিয়ে করেছি তাই এ বিষয়ে আমার অগাধ জ্ঞান থাকার কারনে আমার ভয় একটু কম লাগছে।
.
মানহা ঃ গলার স্বর যত অবাক করে বলা যায় সেই ভাবেই বলল সত্ত্যি ???
.
আমি ঃ জোকিং।
.
মানহা ঃ আচ্ছা আপনার গার্লফ্রেন্ড নাই? যেহেতু আপনার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে তাই সব জানা উচিত আমার । আর আপনারও দায়িত্ব আমাকে সব ক্লিয়ার করা।
.
আমি ঃ হায় আল্লাহ। আসলে সত্যি বলতে কি আমার কোন গার্লফ্রেন্ড নাই। তবে গতদিন ঢাকা থেকে আসার টাইমে একজন এর ওপর হালকা ক্রাস মত খাইছি বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু তার সাথে আর কখনো দেখা হবে কিনা জানি না তাই ওটা নিয়ে ভেবে লাভ নাই।
.
মানহা ঃ খুবই ভাল। আচ্ছা আজ তাহলে রাখি। কাল দেখা হবে ইন শাহ আল্লাহ।
.
আমি ঃ জ্বি। ভাল থেকো।
.
কৃষক রাসেল মানে এ্যগ্রিকালচারের স্টুডেন্ট ও। এসে কইল দোস্ত ফোন টা দেও কথা কমু একটু। দিলাম আর সবচেয়ে প্রচলিত ডায়লগ দিয়ে দিলাম আমার ফোনে কিন্তু বেশি টাকা নাই। এক মিনিটের বেশি কথা কইবি না। দিনটা মনে হুচ্ছে খুব দ্রুত কেটে যাচ্ছে । দুপুরে মেয়ের বাড়ি থেকে পাঠানো তত্ত্ব এসে পৌছাল। বাসায় আত্মীয় ভরা। সন্ধ্যার ভেতরে হলুদ এর অনুষ্ঠান শেষ হইল। আমার হার্টবিট বাড়তেই আছে। ২০১৫ সালে এসে বিয়ে করছি আমি তাও নাকি সেই মেয়ের চেহারা না দেখে । রাতে সবাই মিলে ব্যাচেলর পার্টি দিলাম। সেই রকম আর একটা মজা হইল ।মনে হচ্ছে অনেকদিন পর ফ্রেন্ডরা মিইলে আড্ডা দ্দিচ্ছি। সারা রাত আড্ডা, মুভি, গান শুনেই পার করে দিলাম সবাই। ভোরের দিকে ঘুমাইলাম। সকালে কারোর ঘুম ভাঙ্গে নাই আমাদের । ভার্সিটির পুলাপান বলে কথা আছে না একটা । তাড়াতাড়ি উঠলে আমাদের রেকর্ড নষ্ট হয়ে যাবে। আম্মু এসে ঝাড়ি মেরে তুলে দিল। এই শীতের ভেতর গোসল করা লাগলো । দাতে দাতে ঠক ঠক করে বাড়ি খাইতেছে। ছেলে বন্ধু গুলা সবাই একই কালারের পাঞ্জাবি পরলো আর মেয়েরা পরলো শাড়ি। হারামিদের একসাথে দেখতে যাস্ট অস্থির লাগছে। এমন সময় ফটো শ্রমিক অনিক এসে কইল ওই রিয়াদ আমাদের একটা গ্রুপ পিক তুলে দে। হায় আল্লাহ কয় কি বলদ ।আমি বিয়ের বর আর আমি তুলে দেব ছবি। গালি দিয়ে হলেও তুলে দিলাম ।আমিও তুললাম কয়েকটা । আম্মু এসে তখন বলল অনেক ছবি তোলা হয়েছে এখন যাও আল্লাহ এর নাম নিয়ে বেরিয়ে পড়।
.
আব্বু, আম্মু বাড়ির মুরুব্বি দের কদমবুছি করে বের হলাম। আম্মুর কদমবুচি করার সময় বললাম আম্মু তারেক যা বলেছিল ওসব কিন্তু সব মিথ্যা । আম্মু বলল সে আমি বুঝি আমাকে বুঝাতে হবে না। তুমি আমার পেটে হইছো, তোমার পেটে আমি নাহ। যুদ্ধে পরাজিত সৈনিকের মত মুখ করে বাসার বাইরে বের হলাম। গাড়ি দাড়ায়ে ছিল সারিভাবে। বরের গাড়ি বেশ সুন্দর করে সাজানো হইছে। উঠে বসলাম। ড্রাইভারের সীট নিয়েছে আমার কাজিন। আমরা আমরাইতো। আমি এখনো পর্যন্ত জানি না মেয়ের বাড়ি কই। পোশাক সিলেক্টর জেবা আমাকে দিয়েছে কালো রং এর শেরওয়ানি । আমার মন খারাপ ছিল কিনা তাই। পরার পর মনে হচ্ছে শোক দিবস পালন করতে যাচ্ছি। বন্ধুগুলা সবাই অফ হোয়াইট কালারের পাঞ্জাবী আর বান্ধবী গুলা সবাই খয়েরি রঙ এর শাড়ি। অনেক সুন্দর লাগছিল ওদেরকেও। ওদের খুশি দেখে মন খারাপ করে থাকতে ভাল লাগলো না মোটেও। আমিও নরমাল হওয়ার চেষ্টা করতেছিলাম।
.
বিয়েই তো করতে যাচ্ছি আর কিছু তো না। দোলার সেই অমৃত বাণী মনে পড়ে গেল। ঐ রিয়াদ তোর বিয়ে দেয়া হচ্ছে পানিতে ফেলে দেয়া হচ্ছে না। দুই ঘন্টার জার্নি শেষ করে পৌছাইলাম মেয়ে পক্ষের বাসায়। অনেক সুন্দর করে সাজান হইছে । ইস এটা যদি অন্য কোনো ফ্রেন্ডের বিয়ে হইতো আমার চেহারা দেখার মত ত্থাকতো। কিন্তু এবার আমি পুরাই উলটা । বরের নির্দিষ্ট আসনে নিয়ে গেল আমাকে আমার শালী আর শালা রা। আমার নিজের শালী একটা আর বাকি সব কাজিন । এর আগে কত্ত ঝামেলা পার করে আসতে হইছে তা আমি না হয় নাই বলি। তবে একটা জিনিস বলাই লাগবে। আমার শালা শালীরা কেউ আমাকে কষ্ট দেয় নাই। তারা অনেক মজা করেই আমাকে গাড়ি থেকে নামাইছে গেইট এ আপ্যায়ন করেছে। যত টাইম যাচ্ছে বুকের হার্টবিট তত বেড়ে যাচ্ছে । মনে হচ্ছে এখনি অজ্ঞান হয়ে যাব। খাওয়া পর্ব শেষ হল । এবার বিয়ের পালা। কাজী সাহেব আসলেন। ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে সুসম্পন্ন হল। আমার ফকির গুলারে খুজে পাচ্ছি না ক্যান । বিষয়টা কি? হায় হায় হারামিগুলা আমার শালী গুলার সাথে লাইন মারা শুরু করে দিছে। উচিত না মোটেই। অনিক তো মনে হচ্ছে আমার শালীদের মডেল বানায় ছাড়বে। খটাশ খটাশ শব্দে ছবি তুলেই যাচ্ছে আর বলছে যে ফেইসবুকে দিয়ে দেব। আইডি টা দিবেন প্লিজ। যাহ আমার শালীগুলা সব গেল এবার। হঠাৎ ভেতর থেকে আমার খালা আর প্রিয়াম এসে বললো তুই শেষ। মেয়ে তো কবুল বলে ফেলছে। মেয়ে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার টাইমে কাদে আর আমার তখন ক্যান জানি কান্না আসছিল। কিন্তু কাদি নাই। হয়তো এই ব্যাচেলর লাইফটাকে খুব মিস করবো তাই এমন টা মনে হইছিল।
.
কিছুক্ষন পর।
.
আমাকে নিয়ে গেল মেয়ের পাশে। প্রতিটা কদম ফেলছিলাম আর দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত মনে হচ্ছিল। অনেক কষ্টে মেয়ের রুমের সামনে গেলাম। গলা শুকায়ে কাঠ হয়ে গেল। কিন্তু আমার এক দিক থেকে ভাবতে ভালই লাগছিল যে আমি আমার এই ফকির গুষ্টি এর ওপর ভরসা করে বিয়ে করতে চলে আসছি সেখানে ওদের ওপর ভরসা করতে কোনো দোষ নাই যে ওরা আর যাই হোক আমার জন্য খারাপ মেয়ে চয়েজ করবে না। রুমে ঢোকার পর সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাইলাম আমি। রিতু, অনিক আর তারেক খেয়েছে কিনা বলতে পারবো না। কিন্তু রিতুর মুখের হা করার সাইজ দেখার মত ছিল। এই মেয়ে তো আর কেউ না সেই মিসটেক কন্যা। এ এখানে ক্যামনে আসলো। এবার বুঝলাম ব্যাপারটা যে এই মেয়েও আমার মত পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছে। কি আর করা মেয়ের পাশে গিয়ে বসলাম। মেয়ে তখনো আমার দিকে তাকায় দেখে নাই। একটু পরে আমার ভাবি এসে বলল কই এবার একটু মুখ টা উচু করে আমার ভাইটার দিকে একটু তাকাও। মেয়ে লজ্জায় উলটা মাথা নিচু করে ফেললো। তখন আমাদের ফটো শ্রমিক অনিক তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন আপন গতিতে। মটু আনিকা, দর্জি জেবা আর মেকাপ তনুশ্রী মজা নিতেছে আমার দিকে তাকিয়ে । তখন মনে হচ্ছিল উঠে গিয়ে দাতে একটা ঠুসি মেরে দিয়ে আসি। তবে লজ্জার মাথা খেয়ে বলছি আমি ওদের কাজে খুশি এবং মিসটেক কন্যার ওপর ক্রাশ থেকে ভালবাসা শুরু হয়ে গেছে। স্বজন ওর সেলফি তোলার ফোনটা আমার হাতে দিয়ে বললো তাকাতে হবে না মুখ উচু করে শুধু একটা সেলফি তুললেই হবে। দুজনই একই সাথে ফোনের স্ক্রিনে তাকাইলাম। মিসটেক কন্যার চেহারা দেখার মত হয়ে গেল। হা করতে গিয়েও করল না। সেও অবাক আমাকে দেখে। আমি যতটা হয়েছিলাম অবাক সেও ঠিক সেই পরিমান অবাক হয়েছিল। যাই হোক বাসের কাহিনি আমরা কজন ছাড়া কেউ জানে না।
.
অনেক হয়েছে শ্বশুর বাড়ি এবার বৌ নিয়ে নিজের বাড়ি যাবার পালা। যথাসময়ে বিদায় নিয়ে রওনা দিলাম যশোরের দিকে। সন্ধ্যার ভেতর পৌছায় গেলাম। আমার বাসায় বাধ ভাঙ্গা আনন্দ। একটা মাত্র ছেলের বিয়ে। সবাই খুব খুশি । তারপর অনেক নিয়ম পার করে আমার রুমের সামনে পৌছালাম। রুমে ঢুকে তো আমি নিজেই অবাক। এটা কার রুম। চেনা যাচ্ছে না ক্যান। এগুলা সব যে আমার ফকির দের কাজ তাতে কোনো সন্দেহ নাই। ওদের কে ধন্যবাদ দিলাম মনে মনে। সামনের ওপর দিলে কাধে উঠে যেতে পারে এতে কোনো সন্দেহ নাই। অবশেষে আমি আর সে ভেতরে ঢুকলাম। দরজা লাগায় দিলাম। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। সারাদিন অনেক ধকল গেছে দুজন এর ওপর দিয়েই। তাই আমি ওকে বললাম যাও ফ্রেশ হয়ে আসো তুমি আগে, তারপর আমি যাব। মেয়েটা কিছু না বলে চুপ করে বাধ্য মেয়ের মত কথা শুনলো। সে সামনে থেকে চলে যাবার পর বুকের ভেতর মোচড় মেরে উঠলো ক্যান এখনো বুঝলাম না।
.
পাক্কা চল্লিশ মিনিট পর সে বের হইলো। আমি আবার সেই পরিচিত দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। আমার প্রচুর পানি খাওয়ার রোগ আছে। রুমে পানির বোতল থেকে পানি খাচ্ছিলাম। সে আমাকে বললো এবার তুমি যাও। গাল থেকে পানি ছুটে গেল। কি মেয়ে রে বাবা। প্রথম কথায় তুমি। আগে জানতাম মেয়েরা প্রথম রাতে আপনি করে কথা বলে লজ্জায় মরে যায় যায় অবস্থা থাকে। কিন্তু এই মেয়ে তো পুরা উলটা । আধুনিক যুগ চলে আসছে। আর কিছুই বলার নাই এই তুমি সম্মোধন নিয়ে। আমার ফ্রেশ হইতে ৫ মিনিট লাগলো। আমি আমার ট্রাউজার আর টি শার্ট পরে বের হইলাম। বের হয়ে দেখি সে রুমে নাই। হায় হায় বিয়ের রাতেই বৌ পালাইলো নাকি। আম্মু বলে চিৎকার দিতে যাব এমন সময় ব্যলকনি থেকে বলে উঠলো একটু এখানে আসবা? এই ডাক এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল না আমার। গিয়ে দেখি সে চুপ করে রেলিং ধরে দাঁড়ায় আছে। বুঝতে পারলাম যে নতুন জায়গা নতুন পরিবেশ এর সাথে তার একটু মানায় নিতে কষ্ট হবে। তখন সে মুখ খুললো, আমাকে বললো যে আমার কিছু ইচ্ছা আছে। আমি তখন বললাম যে হ্যা তুমি কোনো দ্বিধা না রেখেই বলতে পার আমাকে।
.
আমার খুব ইচ্ছা যে আমার লাইফ পার্টনার যে হবে তার সাথে বৃষ্টিতে ভিজবো মাঝরাতে ছাদে দাঁড়িয়ে, দুজন হাত ধরে হাটবো পিচের রোডে যাতে হোচট না খাই, ব্যালকনি তে বসে চা খেতে খেতে সারা রাত গল্প করবো। বাসায় অনেকগুলো রুম থাকলে এক রুমে বসে আরেক রুমে ফোনে গল্প করবো, সপ্তাহে একবার হলেও সে আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে, হানিমুন এ আমাকে বিদেশে নিয়ে যেতে হবে না কিন্তু যেন পাহাড় ঘেরা চট্টগ্রাম আর চা বাগান এর শহর সিলেট নিয়ে যায়, আমাকে চশমা পরে আর না পরে দুইভাবেই ভালবাসবে, আমাকে তার টাই বাধার সুযোগ দিবে, সকালে সে আমার আগে ঘুম থেকে উঠলে আমাকে ডেকে তুলবে ভালবাসা দিয়ে। এটুকুই চাওয়া সাজায় রাখছিলাম তার জন্য । আমি পুরা দম বন্ধ করে শুনছিলাম তার এক নিশ্বাস এ বলে যাওয়া কথাগুলা। সে যখন কথা শেষ করে আমার দিকে তাকাইলো তখন তার চোখ দিয়ে বৃষ্টি নামবে তারই আয়োজন চলছিল। আমি তখন আমার মুখটা তার কানের কাছে নিয়ে গিয়ে বললাম ভালবাসবো তোমাকে আর ইচ্ছা গুলো পূরণের দায়িত্ব নিলাম আমি। সে কথা শুনে কাদতে কাদতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমিও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মনে মনে বললাম আল্লাহ আমাকে ওর আশা গুলা পূরনের ক্ষমতা দিও। সেই রাতে গল্প করে, মাঝরাতে বৃষ্টি হলে তাতে ভিজে রাত পার করে দিলাম। ভালবাসা আমার কাছে নিজে থেকে সব সুখ নিয়ে এসেছিল । আমি ক্যানো সে ভালবাসা নিব না।
.
আজ ২৫ বছর পর।
.
সে একজন বিখ্যাত ডাক্তার, আদর্শ মা, শ্রেষ্ঠ সহধর্মিনী। আজও সেই তারিখ যে তারিখ এ আজ থেকে ২৫ বছর আগে সে আমাকে তার ইচ্ছার কথাগুলা বলেছিল। আজ আমরা দুজন সেখানেই দাঁড়িয়ে। ভালবাসা কমেনি এক ফোটাও। বৃদ্ধ বয়সের ভালবাসা বলে কথা। আমাদের ছেলে মেয়ে গুলা অনেক বড় হয়ে গেছে। তারা আমাদের বুকের অনেকখানি জায়গা নিয়ে আছে। আমরা তাদের আগলে রাখি। আর আমি ওই যে দ্বিতীয় বৌ এর সাথে দিন রাত কাটিয়ে কোনো রকম চলে যায়। দ্বিতীয় বৌ কিন্তু আমার ল্যাপটপ। হাহাহা।
.
আমি আশফাক হাসান রুপক
.
পিতাঃ রিয়াদ হাসান
.
মাতাঃ রুপন্তী তাসনিম মানহা
.
আজ বাবা মায়ের ১৮ তম বিবাহ বার্ষিকী। তাদেরকে সারপ্রাইজ দিব বলে রুম সাজানোর সময় ডায়েরিটা পেলাম। বাবা লিখেছল। আমার ছোট বোন নাতাশা হাসান। আম্মু আব্বু দুজনের অফিস থেকে আসার সময় হয়ে গেছে। এই পরিবারের ভালবাসা ঘিরে আছে। পুরো বাড়ি জুড়ে। কখনো যেনো শেষ না হয়। এই টুকুই চাই।
.
টিং টং।
.
আব্বু আম্মু এসে গেছে।

কুমিল্লা যাওয়ার পথে।।Où les histoires vivent. Découvrez maintenant