★সর্প পর্বত★
(Finding The Lost Cave Palace)🎬
→
লেখক- MD Mazharul Islam (পথ)।
→
অধ্যায়-৩
→
দৃশ্য-৪
→
প্রচণ্ড বিষ্ফোড়নে আমার পুরো প্রাসাদ গুহাটা মারাত্মকভাবে কেঁপে উঠল।
হ্যাঁ শত্রুরা এসে গেছে, আমার হারানো নিষিদ্ধ প্রাসাদে প্রবেশ করছে ওরা।
জাতিগত সহজাত প্রবিত্তিবশে প্রচণ্ড রাগে ফুঁসছি আমি।
ওদের প্রত্যেকের শিরা উপশিরায় বহমান রক্তধারা গুলো টের পাচ্ছি আমি।
হ্যাঁ আমি সম্পূর্ণ তৈরি,
আজ কীটপতঙ্গের মত পিষে মারবো ওদের,
আমার জাতির বিলুপ্তির জন্য ওরাই দায়ী,
ওরাই আমার জীবন সঙ্গি নাঙ্গাকে মেরেছে, আমাকে এই গ্রহে একা করেছে।
কেড়েছে আমার প্রাচুর্যের আবাসস্থল,
বিনষ্ট করেছে আমার শান্তি, কেড়েছে আমার অমূল্য ভালোবাসা, আমায় করেছে নিঃস্ব..!
একেক করে চরম যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু ঘটাবো ওদের।
মরণ গর্তে ঢুকেছে ওরা, এই গর্তেই পঁচবে ওদের লাশ।
→
পুরো নিষিদ্ধ প্রাসাদ গুহায় শতসহস্র শাখাপ্রশাখার মত বিভিন্ন কক্ষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অজস্র গর্ত,
যা শুধু সর্প প্রজাতির চলাচলের জন্য উপযোগী।
প্রত্যেকটা গর্তে গিয়ে আড়ালে ওদের ওপর নজর রাখছি আমি।
ওদের শক্তি সামর্থ্য বোঝার চেষ্টা করছি এক এক করে।
সংখ্যায় ওরা প্রায় ২১ জন,
এরা আগের বারের চেয়ে সংখ্যায় অর্ধেকেরও কম।
কিন্তু এঁদের হাতে আগের বারের মত ধারালো ঢাল তলোয়ারের পরিবর্তে কালো ধাতব দন্ডের মত কোনো প্রযুক্তি দেখতে পাচ্ছি, হয়ত নতুন ধরনের অস্ত্র ওগুলো।
সাবধানে এক এক করে শেষ করতে হবে ওদের।
হ্যাঁ আলাদা আলাদা দলে ভাগ হচ্ছে এরা, মনে হচ্ছে কিছু খুঁজছে।
সবার পেছনে প্রবেশ মুখে ২টা মানব দাঁড়িয়ে আছে বাকিরা সব ভেতরের দিকে চলে যাচ্ছে।
হ্যাঁ এইত মোক্ষম সুযোগ।
আমার ২৩ ফুটের শক্তিধর শরীরে কোমর হতে ওপরের দিকে হাল্কা মানুষাকৃতী ধারণ করে নিলাম, এতে করে আমার দুপাশে ৫ ইঞ্চি পরিমাপের তীক্ষ্ণ ধারালো নখ যুক্ত দুটি শক্তিশালী হাত বেরিয়ে এলো।
বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম ততক্ষণে বড় দলটা অনেক দূরে আমার সর্প প্রাসাদের বড় রাজকীয় সভা কক্ষে চলে গেলো।
অতঃপর আমি ছাদের গর্ত বেয়ে মানব দুটির পেছনে ওপরের সুরঙ্গের ফোকর গলে আস্তে আস্তে বেরিয়ে এলাম, পেছন থেকেই একটাকে কামড়ে ধরেই ঘাড় থেকে মাথাটা একটানে ছিড়ে ফেললাম, ওটার গরম রক্তের স্বাদ আমাকে উন্মাদিনী করে তুলল।
অপর মানবটাকে কোনো সুযোগ না দিয়েই কোমর হতে ২০ ফুটের শক্ত লেজ দিয়ে পেঁচিয়ে ফেললাম,
ওটা ব্যাথায় ও তীব্র ভয়ে চিৎকার করতে লাগলো।
মানবটা কোনোমতে কালো ধাতব দন্ড উঠিয়ে আমার দিকে তাক করল, সাথে সাথেই কালো দন্ডটি ঝাকি দিয়েই ওটার মাথা হতে যেনো আগুনের ফুল্কি বের হতে লাগলো।
কয়েকটি আগুন মিশ্রিত ছোট ধাতুর কনা আমার শরীরে প্রবেশ করলো,
তাতে করে তীব্র ব্যথা ও জ্বালা অনুভব করলাম ওখানটায়।
রাগে লেজ টা সহ নিকৃষ্ট মানবটাকে তুলে সুরঙ্গ মুখে ছাদের সাথে ঠেকা দেয়া পিলার টায় প্রচণ্ড ভাবে বারি দিলাম।
মোটা পিলারটা ভেঙে মানবটা থেঁতলে গেলো, এবং সাথে সাথে ওপরের ভারী পাথরের ছাদটা হুড়মুড় করে ভেঙে ধ্বসে পরে গুহা প্রাসাদের প্রবেশ পথটা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলো।
এখন আর পালাতে পারবেনা এরা,
মানবরা আটকা পরে গেছে।
এবার একে একে সবকটাকে এই বন্দি গুহা প্রাসাদেই তিলে তিলে উপভোগ করে মারব।
এদের মেরে কেনো যেনো অদ্ভুত এক আনন্দ শিহরণ বয় আমার সারা শরীরে।
→
ঠিক তখনই পেছনে গুহার ভেতরের দিক হতে হইহুল্লর ও প্রচণ্ড শব্দের সাথে ঝাঁকে ঝাঁকে সেই অগ্নিময় ধাতুর টুকরো ছুটে এসে আমার সামনে ও আশেপাশে বারি খেয়ে ধোঁয়া ওড়াতে লাগলো।
আমি বিপদ বুঝতে পেরে দ্রুত আরেকটা গর্ত গলে ভেতরে ঢুকে গেলাম, সরে এলাম নিরাপদ দূরত্বে।
আবারও প্রতিটা গর্ত শাখা প্রশাখাময় ঘুরে মানব দের প্রতিটা গতিবিধি ও আচরণ গুলো তীক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলাম।
আমার যেখানে যেখানে অগ্নি ধাতু ঢুকেছে সেখানে তীব্র জ্বালা হচ্ছে।
তীক্ষ্ণ নখ দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ধাতু গুলো বের করতে লাগলাম, আর ব্যাথায় হিসঁহিসঁ করতে লাগলাম।
মোট ৭টা ধাতু বের করলাম, আমার প্রজাতি শীতল রক্ত বিশিষ্ট তাই দ্রুত রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে জায়গাটা জমে গেলো।
হ্যাঁ এখন ব্যাথা কমে গিয়ে অনেকটা আরাম বোধ হচ্ছে।
এদের মারা যতটা সহজ মনে করেছিলাম ততটা সহজ হবে বলে মনে হচ্ছেনা।
মানবরা এখন আরো উন্নত ও স্বয়ংসম্পন্ন, মারাত্মক মারণাস্ত্র উদ্ভাবন করেছে এরা।
এমন কালো দন্ডের মারাত্মক অস্ত্রটির মুখ হতে নির্গত অগ্নি ধাতু যদি আমার শরীরে একইসাথে শতাধিকবার প্রবেশ করে তাহলে আমি নির্ঘাত মারা যাবো।
→
একসময় হাজারো বৎসর আগে এই মানব সম্প্রদায় আমাদের দেব, দেবী রুপে পূজা করত,
এবং তাদের মধ্যে কিছু ভালো সন্ন্যাসীদের আরাধনা ও সেবায় খুশি হয়ে আমি ও আমার সঙ্গি ওদের বিশেষ কিছু জ্ঞান দান করেছিলাম।
তারপর ২১৩ বৎসর আগে সেই হামলাকারী পঞ্চাশ জনের মধ্যে একজনের সততার উপর দয়া পরবশ হয়ে প্রানে না মেরে মুক্তি দেই।
এবং সে রক্ত শপথ করে যে সে নাহয় তার উত্তরসূরির কেউ এই ঋন শোধ করবে।
তারপর আমার সঙ্গি নাঙ্গার মৃত্যুর পর এতবছর অপেক্ষায় ছিলাম সেই রক্ত শপথ পূর্ণ হবার।
আমি অন্তর থেকে অনুভব করছি সেই রক্তধারা আজ আমার এই প্রসাদে অবস্থান করছে।
→
নাহ সাহায্যের প্রয়োজন আমার, নাহয় হেরে যাবো আমি, হেরে যাবে আমাদের প্রজাতির ভবিষ্যৎ।
হ্যাঁ সাহায্য লাগবে।
লেজের শেষ অংশটা কিছুটা শুন্যে উঠিয়ে দ্রুত নাড়িয়ে বিশেষ তলব ত্বরঙ্গ পাঠাতে লাগলাম,
আমাদের শ্রেনীরই নিচের জাতি, কম বুদ্ধিমাত্রার ছোট সব বিষাক্ত প্রজাতি গুলোর উদ্দেশ্যে।
আশেপাশে ৩০ মাইলের মধ্যে যত বিষাক্ত সর্প আছে, তারা এই তলব ত্বরণ অনুভব করবে এবং তাদের দেবী রক্ষার জন্য ছুটে আসবে, পর্বতের ফাঁকফোকর গলে চলে আসবে আমার কাছে।
এদের আমরা এই জন্যই তৈরি করে এই গ্রহের বুকে ছেড়ে দিয়েছিলাম যাতে প্রয়োজনে প্রভু, দেবীদের বিপদে নিজের জীবন দিয়ে আমাদের রক্ষা করে।
→
দৃশ্য-৫
→
সুরঙ্গ গুহা মুখে দুজনকে পাহারায় আমাকে আগে রেখে বাকি সবাইকে নিয়ে সামনে এগুতে লাগলো মূসা।
কিছুটা ঢালু বড়োসরো পথটি সোজা নিচের দিকে চলে গেছে।
CITEȘTI
★সর্প পর্বত★
Mister / Thrillerপথ সিরিজের ★ত্রিমাত্রা★ ও ★প্রত্যাবর্তন প্রহেলিকা★ উপন্যাসের অবলম্বনে আমার নতুন উপন্যাস, ★সর্প পর্বত★ → অনেকদিন পর লেখা ৪ অধ্যায়ের আমার এই উপন্যাসে থাকছে প্রত্নতাত্ত্বিক রহস্য, পৌরাণিক কাহিনী, গুপ্তধন, থ্রিলার, ভয়, এক্স্যান ও এডভেঞ্চারে ভরপুর সংমি...