সকাল দশ'টা বাজে। জানালা খোলে রাতে কড়া একটা ঘুম দিয়েছি। মেজাজ টা বেশ ফুরফুরা। কাল রাতে আসলে ঘুম ইচ্ছে করে আসেনি, হুট করে চলে এসেছে। ইচ্ছে করে আসা আর হুট করে আসা ঘুমের মাঝে বিস্তর ফারাক আছে। ইচ্ছে করে যে ঘুম আসে সেটাকে, জোর করে আনতে হয়। আর হুট করে যে ঘুম আসে, সেটা প্রকৃতির ইচ্ছায় আসে। যার উপর কারো নিয়ন্ত্রন থাকে না। কাল রাতে আমার হুট করে ঘুম এসেছে। আর সেটা এসেছে প্রকৃতির ইচ্ছে অনুযায়ী।
কাল রাতে আকাশে একটা বিশাল চাঁদ উঁকি দিয়েছে। আমার জানালা টা রুমের পূর্ব পাশে, হওয়ার সুবাদে আকাশের মস্ত বড় চাঁদটা সম্পূর্ণ দেখা যায়। ঘর আলোতে ভরে উঠে, সাথে তৈরি হয় নেশা ধরা এক পরিবেশ। এইরকম পরিবেশের সাথে আমার হরহামেশা দেখা হয়। তারা যখন আমার সাথে দেখা করে, তখন তাদের বলি -
“ কিরে ব্যাটা? আজকে কি জন্য আসলি? ”
তারা অন্ধকার কে দূরে ঠেলে দেয়, মুচকি হাসি দিয়ে। তারপর বলে, “ প্রকৃতি আপনার সাথে খেলা করতে পাঠান আমাদের।”আমার ছোট্ট ঘরে প্রচুর আলো প্রবেশ করে, জানালা দিয়ে। আমি রুমের সব আলো নিভিয়ে দিয়ে, খাতা-কলম নিয়ে বসে পড়লাম টেবিলে। সাদা আলোতে গোটাগোটা অক্ষরে তিন লাইনের একটা চিরকুট লিখলাম।
হলুদ রঙের খামে, চিরকুট টা ভরে সযত্নে খামের মুখ বন্ধ করে দিলাম। ঝুড়ি ভর্তি বেশ কিছু রঙিন খামের সাথে হলুদ খাম টাকে মিশিয়ে দিয়ে, ঝুড়ি টার দিকে তাকিয়ে রইলাম বেশ কিছুক্ষণ। অনেক কথা এই ঝুড়ির পেটে থাকা খামে বন্ধি হয়ে আছে। শেষে ঝুড়ি টাকে খুব আদর করে তোলে রাখলাম নিরাপদ জায়গায়।
বিছানায় এসে জানালার পাশে বালিশ রেখে, ঘুমিয়ে পড়লাম। সকাল দশ'টায় নীলিমা কল দিয়ে শুধু একটা লাইন বলল,
- ঠিক একটা' কুঁড়ি মিনিটে, যে রেষ্টুরেন্টে দেখা করি সেখানে আসবে।
আমি কিছু বলতে পারিনি। বলব কিভাবে? তার আগে কল কেটে দিয়েছে। দ্বিতীয় বার কল দেওয়ার অনুমতি দেয়নি আমাকে। বেশ অদ্ভুত একটা মেয়ে, নীলিমা। অদ্ভুত বলার কারণ টা যুক্তিযুক্ত ই।
তার কড়া একটা শর্ত, “কোনোদিন আমার নাম্বারে কল দিবে না। আমি নিজেই দিব। কল দেওয়ার পরে দ্বিতীয় বার কল দিবে না। ” আমি ই বোধহয় একমাত্র ছেলে, যাকে নিজের প্রেমিকা মিসড কল না দিয়ে ডাইরেক্ট কল দিয়ে কথা বলে। মেয়েরা মিসড কল দিবে, আর ছেলেরা ডাইরেক্ট কল দিবে। এটাই হচ্ছে নিয়ম। কিন্তু মেয়েটা এসব নিয়ম মানে না।
YOU ARE READING
একদিনের হিমু
Humorজগতে মায়া খুব কষ্ট দেয়। মায়া চোখে দেখা যায় না, কানে শোনা যায় না। শুধু অনুভব করা যায়, আর অনুভব করলে সন্ধান মিলে দুটি আবেগের! একটা সুখের আর অন্যটা দুঃখের।