অামি তখন ট্রানজিশন পিরিয়ড কাটিয়ে অাবার জয়েন করতে যাচ্ছি, চিটাগাং এ। মালামাল অাগেই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। রাতেই যাচ্ছি। স্লিপিং বার্থ নিয়ে নিলাম। কিন্তু সমস্যা হলো, অামার উপরের বার্থে যে পেসেঞ্জার উঠলেন, তিনি একজন নারী। অামি সিলেট থেকে ট্রেনে উঠেছি। মেয়েটির টিকিটও সিলেট থেকে ছিলো, কিন্তু সে উঠলো কুলাউড়া থেকে। কমবয়সী, সুদর্শনা, লম্বা ছিপছিপে গড়নের হাসি হাসি সুন্দর মুখ!
সদ্য কৈশোর পেড়িয়ে তারুণ্যে নামলে যেমন দেখায় তেমন!
পড়নে ডিপ পিংক শর্ট টপস। তাতে ডার্ক মেরুনে ফুলেল কাজ করা, উপরে ব্লাক জ্যাকেট, তাঁর সম্পূর্ণ জিপটা খোলা। একটা গ্রিন অার ইয়েলো শেডের জামদানি ওড়না বুকের উপর ফ্লাওয়ার নট বেঁধে ঝুলানো! সাথে ফিটিং ব্ল্যাক জিন্স, পায়ে সেমি হিল বটম ব্লাক কেডস! মাথায় ট্রাভেলিং ক্যাপ, তাঁর ভিতরে রাবার ব্যান্ডে চুল ঢুকিয়ে বাঁধা। গায়ের রং চকচকে ধরনের মিষ্টি ফর্সা, চোখে গাঢ় বর্ডার টেনে লাইনার দেওয়া, ঠোটে ডিপ মেরুন লিপস্টিক।রাতের জার্নিতে অমন টিপটপ হয়ে কেউ নিজেকে তৈরি করে নিয়ে বের হয় জানা ছিলোনা। ফিল্মস্টারদের মত হট এন্ড হ্যাপেনিং লাগছে। কেমন যেনো, অনুষ্ঠান শুরুর অাগের সদ্য সাজানো প্রাণবন্ত স্টেজের মত। দেখলেই মনে চাঞ্চল্য জেগে উঠে।
এবং সবথেকে স্ট্রেঞ্জ ব্যাপার হলো, চোখে সাদা কাচের চশমা এবং মাথায় ক্যাপের উপরে একটা সোনালী ফ্রেমের সানগ্লাস অাটকানো। এই রাতের বেলায় সানগ্লাস কেউ রাখে নাকি?
বিদেশী টুরিস্টরা যেমন ব্যাগ ক্যারি করে পিঠে; তেমন ডাবল বেল্টের একটা ভারী ব্ল্যাক ব্যাগ পিঠে!
অামি একবার তাকিয়ে বোধহয় অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম।কারণ সে ব্যাগ পিঠ থেকে খুলতে খুলতে বলল,
---স্যার, অামার তো খ বার্থ লিখা। দ্যাট মিনস উপরেরটা নাকি?
অামি চমকে গিয়ে কয়েকবার হু হু বলে ফেললাম।
কারো গলার স্বর এত স্মুথ হয় নাকি? মেয়েটার কণ্ঠ যেনো চিকন স্বরের গানের পাখির মত!
এর মধ্যে অামি অামার সিগারেটের প্যাকেটটা খুব সাবধানে চট করে লুকিয়ে ফেললাম।
মেয়েটা কি অাড়চোখে দেখলো?অামি নিচের বার্থে, সে লজ্জায় উপরের বার্থে উঠতে চাইছিলোনা। অাবার দাঁড়িয়ে থেকে কিছু বলছিলোও না।