Part One

14 0 0
                                    

মেয়েটার শরীর কেটে যে একদম কুচকুচে কালো রক্ত বের হচ্ছিলো, সন্ধ্যার কিঞ্চিৎ আলোতে ধর্ষণের সময় একটা যুবক ও ব্যাপারটা খেয়াল করল না।
তবে তাদের কাছে এই মেয়েটাকে ঠিকই অনেক অদ্ভুত মনে হয়েছিল।
কোনো মানুষের দেহ যে এতটা নরম হতে পারে সেটা তাদের কাছে ছিল একেবারেই কল্পনাতীত।
মফস্বল একটা এড়িয়া। রাস্তায় রাস্তায় রোডলাইটের প্রচলন টা হয়ে ওঠেনি এখনো। বাজার শেষে বাড়ি ফিরছিলো ২১ বছরের আশেপাশের বয়সের তিন যুবক। অন্ধকারের রাস্তায়ও তাদের পথচলার জন্য তিন ব্যাটারির লাইটের দরকার হয়না। পরিচিত রাস্তায় টপাটপ পা ফেলে বাড়ি ফেরা তাদের দৈনন্দিন অভ্যেস। শরীরের রক্ত গরম থাকা বয়স এখন। যৌবনের সবে শুরু। প্রত্যেক ছেলের ক্ষেত্রেই নিজেকে এসময়টাতে কন্ট্রোল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পরে, চায়ের সাথে নতুন নতুন সিগারেট টানার অভ্যেস শুরু হয়।নির্জন জায়গায় আড্ডার সময় অশ্লীল কথাবার্তা বলে এরা কেমন যেন একটা নিষিদ্ধ আনন্দ পায়।
কয়েকজন একসাথে থাকলে তো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারামারি শুরু করে দেয়াটা তাদের অন্যতম বয়সগত অধিকার। আর এরকম ই তিনটি ছেলে যদি বাজার শেষে বাড়ি ফেরার সময় নির্জন মেঠো পথের রাস্তার পাশে একটা ২৩/২৪ বছরের অপরূপ ফর্সা মেয়েকে দেখতে পায় তবে তাদের ভিতরে উত্তাল ঢেউ যে দোল খাবে না, সে কথা কি হলফ বলা যায়??
মেয়েটার পরনে ছিল সাদা টিশার্ট, কালো একটি হাফ প্যান্ট এবং পায়ে ছিল হাই কনভার্টস।চেহারাটা লম্বাটে।সোনালী বর্ণের চুল। মোটেই টিপিকাল বাংগালীদের মত নয়।
বুকের উপর দু হাত বেঁধে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আকাশ দেখছিলো সে। ১৯৯৯ সালের সময়কার মফস্বলের ছেলেগুল কখনো এলিয়েন সম্পর্কে শোনে নি। নিজের হাতের তালুর মত পরিচিত রাস্তায় ভূতের ভয় পাবার তো প্রশ্নই আসে না।সুতারাং এরকম দুর্গম নির্জন একটা রাস্তার পাশে এমন কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তারা হুট করেই ভেবে নিলো, এই মেয়েটা হয়ত বিদেশি কেউ হবে। বেড়াতে এসেছে কারো বাড়ি,
পথ হারিয়ে মনে হয় এখানে এসে পৌঁছেছে। সব সময় বোরখা কিংবা লম্বা কাপড়ে ঢেকে চলা মেয়েদের দেখতে অভ্যস্ত ছেলেগুলর কাছে টিশার্ট পরিহিত অপরূপ এই মেয়েটা যেন একটি জীবন্ত পর্ণোগ্রাফি। কাছে গিয়ে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে প্রশ্ন করতে শুরু করে তারা। মেয়েটি একবারের জন্যও তাদের দিকে ফিরেও তাকায় নি। অপলক ভাবে আকাশের দিকেই তাকানো। কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে একটা ছেলে মেয়েটার হাত ধরে টান দেয়। নাহ, কোন নড়চড় নেই। এবার একটু হলেও ভয় পেয়ে যায় ওড়া। নাকের সামনে হাত নিয়ে নিশ্বাস নিচ্ছে কিনা পরখ করে। গরম নিশ্বাসের বাতাস ওদের হাতে এসে লাগে।
এরকম জীবন্ত একটা কাঠের পুতুলের মত মেয়েকে পেয়ে ওদের ভিতরে যৌবনের ঢেউ উথলে পরে নদীভাংগন শুরু হয়ে যায়।সামান্য ভয়টা কেটে গিয়ে ওদের ভিতরে চলে আসে দুর্দান্ত সাহস, রাস্তার পাশে দু পা ফেললেই একটা ঘনো ঝোপঝাড়ের স্তপ। তিনজন মিলে টেনে হিঁচড়ে সেখানেই নিয়ে যায় মেয়েটাকে। কিন্তু অবাক করা বিষয় একটা পাপেটের মতই মেয়েটা অচল। কোন শব্দ কিংবা নড়াচড়া কিছুই করছিল না সে। অপলক চেয়ে চেয়ে ছিল শূন্যে দৃষ্টি দিয়ে।
ওদের তিনজনের‍ ভিতরেও মুখে কোন কথা হচ্ছিল না। ক্ষিপ্রতার সাথে মেয়েটিকে বিবস্ত্র করার জন্য উদ্যত হয় সবাই। ছয় হাতের‍ টানা হেঁচড়ায় নখের‍ আঁচড়ে মেয়েটির নরম শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। সামান্য আঁচড় থেকেই গা থেকে অঝোরে বের হতে থাকে কুচকুচে কালো তরল।
বুকে গলায় দাঁত বসিয়ে যখন ছেলেগুলো আদিমতার স্বাদ নিচ্ছে তখন ও একটুও টু শব্দ বের করেনি সেই অদ্ভুত মেয়েটি।পালাক্রমে চলতে থাকে ওদের বর্বরতা। একসময় সব ঝড় থেমে যায়। ছেলেগুল ক্লান্ত হয়ে পরে। ঘর্মাক্ত গায়ে বাড়ির পথ ধরে তিনজন ই। মেয়েটির অচল দেহ পরে থাকে ঐ ঝোপের আড়ালেই। গা থেকে কালো রক্ত ততক্ষনে গড়িয়ে চলে এসেছে প্রায় রাস্তার পাশে।
ঐ মেঠোপথ দিয়েই নিজ স্ত্রী ও ১২ বছরের পুত্রকে নিয়ে রাত ৯ টার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন রজব আলী।
পথিমধ্যে তার প্রস্রাবের বেগ পায়। স্ত্রী এবং সন্তান কে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে সে প্রাকৃতিক কাজের জন্য রাস্তার পাশের ঝোপেড় দিকে এগোয় সে। বসার জন্য এদিক সেদিক লাইট মেরে উপযুক্ত একটা জায়গা খুঁজতে থাকে রজব। ঠিক এসময়েই কিছু একটার উপরে তার লাইটের আলো এসে স্থির হয়ে যায়।কোথা থেকে যেন কালো কালো রঙের পানি গড়িয়ে এসেছে। একদম আলকাতরার মত কালো কিন্তু পাতলা অনেক। প্রস্রাব করা শেষে লাইট নিয়ে সেই কালো রঙের উৎস খুঁজতে এগিয়ে যেতে থাকে সে। হঠাৎ করেই খুঁজে পায় তখন একটা মৃদু চাপা চিৎকার করে ওঠে। এখানে এরকম ভাবে একটা নগ্ন মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখবে কল্পনায় ও ভাবেনি রজব। ওর গা থেকেই এই কালো রঙের পানীয়ের উৎপত্তি। রজব প্রথমে ভয় পেলেও ভয় কাটিয়ে সে এগিয়ে যায়। পেটের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে এখনো নিশ্বাস নিচ্ছে। চোখ দুটো খোলা। দূরে কোথাও যেন অপলক তাকিয়ে আছে। রজবের বৌ হাঁক ছাড়ে, রাত অনেক হয়ে এলো। বাড়ি ফিরতে হবে তাড়াতাড়ি। রজব তার বৌকে নির্দেশ দেয় বাচ্চাটাকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে তার কাছে যেতে। রজবের বৌ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওরকম দৃশ্য দেখে আঁচল দিয়ে মুখ লুকিয়ে ফেলে।এই মেয়ে এখনো জীবিত আছে। কিছুতেই ফেলে যাওয়া যাবে না। রজবের বউ এগিয়ে যায় মেয়েটির শরীরের কাছে। পাশে পরে থাকা সাদা টিশার্ট দিয়ে গায়ের রক্ত গুল্ মুছে দেয়। গ্রাম্য মানুষ, ভেবেছে হয়ত রক্ত শুকিয়ে কালো রঙ ধারণ করেছে। এটা তেমন কিছু না।রজব তার পাঞ্জাবি খুলে বউয়ের হাতে দেয়। তার বৌ পাঞ্জাবি পরিয়ে দেয় মেয়েটিকে। পাশে পরে থাকা কাল প্যান্ট টা পড়িয়ে মেয়েটিকে কোন মতে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে।
অল্প একটু চেষ্টায় মেয়েটি দাঁড়িয়ে যায়। রজবের বৌ মেয়েটিকে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করতে শুরু করলে রজব তাড়া দেয়। বলে আগে বাড়ি নিয়ে চলো তারপর সব খবর নেয়া যাবে।
কাধের উপর ভর দিইয়ে অনেকটা কষ্ট করে রজবের বাড়ি নিয়ে আসা হয় মেয়েটিকে। রজব বাইরে থেকে বন্যাপাতা বা রাঁধালতার গাছ নিয়ে আসে, এটা গ্রামের দিকে ভেষজ গাছ হিসেবে ব্যাবহৃত হয়। পাতা বেঁটে ক্ষত স্থান গুলোতে লাগাতে বলে রজব।
তার বউ এবং সে খুবই ভালো মনের মানুষ ছিল, মেয়েটিকে গোসল করিয়ে এনে রাঁধালতার পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দেয়। এরপর বাসায় রাখা খাবার গরম করে মেয়েটির সামনে নিয়ে আসে। খাবার কাছে আনা মাত্রই রজবের বউ এর হাত থেকে ছো মেরে নিয়ে গোগ্রাসে খেতে শুরু করে মেয়েটি।মেয়েটিকে নিজ থেকে এই প্রথমবারের মত কিছু একটা করতে দেখে খুব খুশি হয় দুজনেই।
পেট পরিপূর্ণ করে খাবার ও পানি খাইয়ে মেয়েটিকে বিশ্রামের জন্য আলাদা একটায় কামরায় রাখে তারা।
ঘরের উঠোনে বসে রজব ও তার বৌ সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করে, তাদের এখন কি করা উচিৎ।
রজব তার বৌকে বলে, হয়ত মেয়েটা বিদেশি কোন প্রতিবন্ধি মেয়ে। এদেশে এসে হারিয়ে গেছে।আর সেই সুযোগে কেউ ওকে ধর্ষণ করেছে।
রজবের বউ মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায় আর বলে, আগে আমাদের বাসায় থেকে সুস্থ হোক। তারপর ও যদি আমাদের কিছু বলে নিজে থেকে আমরা হয়ত সাহায্য করতে পারব।
অদ্ভুত মেয়েটি রজবের বাড়িতেই আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে।আর এইদিকে যে তিনটি ছেলে সেদিন রাতে ধর্ষন করেছিল তাদের নিম্নাগে পচন ধরা শুরু হয়।
প্রচন্ড যন্ত্রনায় তিনজন ই চিৎকার চেঁচামিচি করতে থাকে। ডাক্তারের শরাণাপন্ন হলে তারাও কোন ফলপ্রসূ সমাধান দিতে পারে না। ঘাঁ এর কারণে ওদের গা থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ বের হওয়া শুরু হয়। নিজের পরিবারের লোকজন রাও বাসায় বসে খাওয়াদাওয়া করতে অপারগ হয়ে পরে। তিনজনের মধ্য থেকে একজন কে হঠাৎ করে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় নি। বাকি দুজন সুইসাইড করে। একজন গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে, অপরজন গলায় ফাঁস দিয়ে।
এদিকে রজবের বাড়িতে ঘটে আরো আশ্চর্য ঘটনা, রজবের স্ত্রীর সান্নিধ্যে থাকতে থাকতে মেয়েটির চেহারা আস্তে আস্তে তার মত হয়ে যাওয়া শুরু করে।তবে মেয়েটি এখনো মুখ থেকে কোন শব্দ করতে পারে না।
রজব আলী মাঝে মাঝে গুলিয়ে ফেলে কোনটি তার বউ আর কোনটি সেই মেয়েটি। আস্তে আস্তে তারা আবিষ্কার করে মেয়েটির সামনে কোন একজন মানুষ এক ঘন্টার মত থাকলে আস্তে আস্তে তার চেহারাও ঐ মানুষটির মত হয়ে যায়। এত অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন একজন মানুষ রজব আলীর ঘরে আছে বহুদিন ধরে সেটা এলাকার অন্য কেউ জানে না। রজবের কোন আত্মীয় স্বজন নেই। আর অন্য পাড়া প্রতিবেশীরাও রজবকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলে। তার অবশ্য কারণ ও আছে। রজব ঐ এলাকার মসজিদের ইমামের ভণ্ডামি এবং মাজার পুজোয় সাধারণ মানুষদের উৎসাহিত করার বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে অনেকটা একঘরের করে রাখা হয়েছে তার পরিবারকে।
এ নিয়ে অবশ্য রজবের মাথা ব্যাথা ছিল না।
কিন্তু এই অলৌকিক মেয়েটার তাকে খুব ভাবাচ্ছে। প্রায় ৬ মাসের মত রজবের বাড়িতে আছে মেয়েটি। এর ভবিষ্যৎ কি হবে, সেটা নিয়েও একটা চিন্তা তার মাথায় ভড় করে। কিছু একটা তো করতে হবে।
শুনশান এক রাতে তাহাজ্জুদের নামায পড়ছিল রযব। তার স্ত্রী ঘুমিয়ে গিয়েছিল ততক্ষনে হয়ত ছেলেকে সাথে নিয়ে।টিনের বাসায় কাঠ দিয়ে বিভক্ত করা কামরাগুলোর অন্য পাশের একটিতে থাকত সেই মেয়েটি।
নামাযরত অবস্থায় রজবের কানে এসে লাগে একটি চিকণ করুণ শব্দ। যেন কেউ লম্বা লম্বা সুর করে কাঁদছে। শব্দটা আসছে মেয়েটির রুম থেকে। রজব নামায ছেড়ে তাড়াতাড়ি তার বৌকে ডেকে তোলে। হারিকেন জ্বালিয়ে দুজনে আস্তে আস্তে মেয়েটির কক্ষে প্রবেশ করে। মেয়েটির চেহারা তাৎক্ষণিক ভাবে পরিবর্তন হচ্ছে বার বার। কখনো রজবের চেহারা, কখনো রজবের বৌ এর চেহারা, আবার কখনো বা রজবের ছেলের চেহারা, আরো তিনজনের চেহারার প্রতিফলন ঘটে চলেছে। চেহারা গুলো রজবের খুব ভাল করে চেনা। সে বুঝতে পারে সেদিন রাতে কারা এই মেয়েটিকে ধর্ষণের পরে ঝোপের পাশে ফেলে রেখেছিল।
মেয়েটির মুখ হা হয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে বের হচ্ছে অদ্ভুত এক আওয়াজ। মনে হচ্ছে মেয়েটি যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। রজবের বউ মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দেয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারছে না।, তারা মেয়েটিকে ভয় পায়না। বরং ভালোবাসে অনেক। তাদের ধারণা আল্লাহ তাদেরকে পরখ করার জন্য তাদের কাছে কোন অলৌকিক মানুষ পাঠিয়েছিলেন।
মেয়েটির চোখে মুখে তীব্র যন্ত্রনার ছাপ ফুটে উঠে।
হাত পা খুব জোরে ছুড়তে ছুড়তে থাকে। কিছুক্ষন পর, এক সময় সব কিছু কেমন নিরব হয়ে আসে। নিস্তব্ধ হয়ে যায়। মেয়েটার শরীর থেকে কালো কুচকুচে ধোঁয়া বের হয়ে উড়ে যেতে থাকে। রজব আলী হারিকেন হাতে দাঁড়িয়ে গামছা দিয়ে নিজের কপাল মোছে। তার চোখের সামনে মেয়েটার দেহটা ধোঁয়া হয়ে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যেতে থাকে। প্রথমে পা এবং মাথা ধোয়ায় মিলিয়ে যায়। হাতের ভিতরেই মেয়েটির মাথা কেমন ধোঁয়া হয়ে উড়ে গেল.. ডুকরে কেঁদে উঠে রজবের বউ। দুদিক থেকে দেহটা ক্ষয় হতে হতে পেট বরাবর এসে থামে। সেখানের কালো ধোঁয়াটা পরিষ্কার হয়ে উড়ে যেতেই রজব ও তার বৌ দেখতে পায়, ছোট্ট ফুটফুটে একটা শিশু চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। ধোঁয়াসা ভাব পুরোপুরি কেটে যেতেই ছেলেটা সদ্য জন্ম নেয়া বাচ্চাদের মত ডুকরে কেঁদে উঠে
( Born of the Dark Devil)
.

চলবে....

#Dark City (Hasibul Islam Fahad)Where stories live. Discover now