আইন্সটাইনের সূত্র

131 16 12
                                    

---"বুঝলি নাহার, এক কথায় থিওরি ওফ রিলেটিভিটি দ্বারা বিজ্ঞানী আইন্সটাইন বুঝিয়েছেন যে, বস্তুর ভর আর শক্তি একই ব্যাপার। আর এতক্ষণ তো E=mc^2 পুরো সূত্রটা ব্যাখ্যা করলামই। ভালো করে বুঝেছিস তো?"

নাহার জোরে মাথা নাড়ায় অর্থাৎ বোঝতে পেরেছে। আসলে নাহার (E=mc^2) সূত্রটা আগামাথা কিছুই বোঝেনি!
পলাশ যতক্ষণ ধরে ওকে সূত্র বোঝাচ্ছিলো ততক্ষণ ও একমনে পলাশের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তার 'কলম হাতে নিয়ে নড়াচড়া করা', 'মাথায় হাত রেখে খাতায় লেখা', 'সূত্র বোঝানোর সময় বিভিন্নভাবে ভ্রু কুঁচকানো' সব কিছু নাহারকে অভিভূত করে। সব কিছু।

নাহার এবার ক্লাস টেনে পড়ে। বাইরে থেকে দেখলে কেউ বোঝবেই না যে ওই পিচ্চি মেয়েটার ভিতর এতো প্রেম! এই যে, পলাশও যেমন বোঝে না নাহার তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে!
অবশ্য নাহারের মতে পলাশটা হচ্ছে একটা হাঁদারাম। নাহার যে তার দিকে কত গভীর চোখে তাকায় সেটা পলাশ খেয়ালই করে না। আর খেয়াল করলেই বা কী!
‘একটা মেয়ে একটা ছেলের দিকে তখনই এতো গভীর ভাবে তাকায় যখন মেয়েটা ছেলেটার প্রেমে পড়ে’‚ এই কথাটা বোধহয় পলাশ জানেই না!

নাহারের সাত-পাঁচ ভাবনার ব্যাঘাত ঘটালো পলাশের হাতে একটা স্কেলের বারি খেয়ে। নাহার চেঁচিয়ে উঠলো, "উহঃ ভাইয়া, তুমি আমাকে মারলা কেন?"
পলাশ রেগে গিয়ে বললো, "তুই কোন দুনিয়ায় আছিস বলতো? এতক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করেছি অথচ কোনো সাড়াশব্দ নাই! জেগে জেগে ঘুমাচ্ছিস নাকি?"

নাহার মনে মনে বললো, "আমি এতক্ষণ যে দুনিয়ায় ছিলাম সেটা অন্য রকম দুনিয়া। যে দুনিয়ায় আমি-ই রাজা আমি-ই প্রজা আর তুমি আমার রাজ্য!
রাজ্য ছাড়া রাজা-প্রজা অভাবনীয়!"

পলাশ উত্তর না পেয়ে আবার জিজ্ঞেস করলো, "সূত্রটা বুঝেছিস তো?"
নাহার হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়লো। পলাশের কিছুটা সন্দেহ হলো। এতো তাড়াতাড়ি বোঝে গেলো!
জিজ্ঞেস করলো, "তাহলে ইউরেনিয়াম দিয়ে আমাকে আবার পুরো সূত্রটা আবার বুঝিয়ে বল।"

নাহার পড়লো বিপদে। শালা আইনস্টাইন কী এক ছাইপাশ সূত্র লিখে গেছে এখন আবার এগুলা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের শিখতে হয়! নাহার এগুলো শিখে কী করবে? পারমানবিক বোমা বানাবে? অযথা কষ্ট আর সময়ের নষ্ট! তাছাড়া সে তো এতক্ষণ কিছুই বোঝে নি।
সে কথা কাটানোর জন্য বললো,
--- "পলাশ ভাইয়া, কয়টা বাজে?"
--- "সময় জেনে তোর কী কাজ?"
--- "কাজ আছে, বলো।"
--- "পাঁচটা বাজে।"
--- "আমি এখন যাই, টিভিতে আমার পকিমোন এখনই শুরু হবে।"

আইন্সটাইনের সূত্রTempat cerita menjadi hidup. Temukan sekarang