সেই বছর

63 1 0
                                    

কালকেই খবর পেলাম তৃষার বিয়ে ঠিক হয়েছে। যে ছেলেটার সাথে বিয়ে হবে, তাকে নাকি বেজায় সুন্দর দেখতে, বিদেশে বেশ মোটা টাকার চাকরি করে। বিয়ের পরে তৃষাকে নিয়ে বিদেশে চলে যাবে বলেই কথা হয়ছে। তৃষা, আমার ঠিক প্রেমিকা ছিলো না। ওর প্রতি আমার কোনো সুপ্ত আকর্ষণ ও কখনো ছিলো না। তবে সেই বছরের সেই রাতটা....ওটার কি কোনো মানে ছিলো না?.. হয়তো ছিলো না।

সেই বছরটা ছিলো 2018, দিনটা ছিল 10th February, স্বরস্বতি পূজা এর রাত। আমার তখন 18 বছর বয়স।

10 February, 2018
তৃষা প্রতি বছরের মতো এবছরও হলুদ শাড়ি পরে এসেছে। তবে এবছর যেনো ওকে একটু বেশিই সুন্দর লাগছে, প্রথমে মনে হলো মনের ভুল, তারপর আমার মাও বললো একই কথা। আজ যেনো ও আমার সাথে একটু বেশিই মেলামেশা করছে। আমি ওসব বিষয় অত গুরুত্ব না দিয়ে ইন্দ্র কাকুর সাথে গল্প শুরু করলাম। একটু বাদেই মা ডাক দিলো পূজার জিনিস গুলো গুছিয়ে দেওয়ার জন্য। মামা, মামী, কাকু, কাকুর ছেলে, কাকিমা, আমার ছোটো বোন সবাই ছিলাম পূজা মণ্ডপে। টের পেলাম বন আমায় হাথ দিয়ে ধাক্কা মারছে।

- কি রে? কি হলো?
- তৃষা দিদির সাথে গল্প করছিলাম। তোকে নিয়ে কথা শুরু হতেই কেমন লজ্জা পেতে গেলো। কোনো ব্যাপার আছে নাকি বলতো?
- সে আমি কি করে জানবো। আমি ওই বিষয় মাথা ঘামাই না। তুইও তো রাহুলের সাথে সেই তখন থেকে গল্প করে যাচ্ছিস। তোর কিছু আছে নাকি বলতো?
- ধের!!! তুইও না... পুজায় মন দে।

পূজা শেষ হলো। আমি আর আমার বন আয়েশা সবাইকে প্রসাদ দেওয়া শেষ করে উপরের ঘরে যাওয়ার ফন্দি আঁটছিলাম। বন বললো "তুই যা। আমি এখানে আছি।"
- কেনো রেহ? আড্ডা দেওয়ার কথা ছিলো তো।
- আরে, আমি কাকিমার সাথে গল্প করবো এখন একটু।
- আচ্ছা ঠিক আছে।

এই বলে গেলাম উপরের ঘরে।
আমার বেডরুমে যাওয়ার পথে একটা সরু গলি আছে, হঠাৎ করে কে একজন আমায় সেই গলিতে টেনে নিল।
সেটা আর কেউ নয়, তৃষা।
আমায় টেনে নিতেই আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমি আমার ঠোঁটে একটা চাপ অনুভব করলাম। আমি কিছু কিছুই বুঝতে পারছিনা এসব কি হচ্ছে, কেনো হচ্ছে। আমি শুধু তৃষার প্রতিটা চুমুর জবাব দিতে থাকলাম। একটু জ্ঞান ফিরতে ওকে হালকা করে সরিয়ে দিলাম।
- তৃষা, আমার মনে হয় না আমাদের এরাম করা উচিত, আমরা বন্ধু, তুই আমার ছোটবেলার বন্ধু।
- কিছু হবেনা, চলনা আজ আমরা নিজেদের একটু সময় দি। চলনা আজকের রাত তাকে আমরা মনে রাখি।
- কিন্তু....তুই আমার বন্ধু....!!!!!!!! তোর সাথে এসব....!!! না, করবো না।
এই বলে আমি মাথা ঝাঁকাতে থাকলাম।
- ছেলেমানুষী করিস না। আমরা এখন আর নাবালক নাবালিকা নয়। চলনা রে।

আমি বাধা দিতে পারলাম না। আমার বেডরুমের দিকে প্রতিটা পদক্ষেপে যেনো আমি আত্মগ্লানি তে  আমি ডুবে যাচ্ছিলাম।

তৃষা আমার বেডরুমে আমায় নিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে দিল।

- আমরা এরাম কেনো করছি?
- জানি না। আমি আজ শুধু তোকে চাই।
- এটা কি ঠিক হচ্ছে? প্রেমিক - প্রেমিকারা এরাম করে। আমরা তো....বন্ধু!
- শুধু বন্ধু?...একবার বুকে হাত রেখে বলতো?...ভালবাসিস না আমায়?
- জানি না।.....
এই বলেই আমি ওর কাছে এগিয়ে এলাম। ও আমার চোখে চোখ রেখেছে। ওর চোখে তখন এক অতৃপ্ত বাঘিনীর তৃষ্ণা দেখা যাচ্ছে। খিদে, ওর শরীরের খিদে পেয়েছে তখন। একটা মুচকি হেসে ও আমায় বিছানায় ফেলে দিল। একটা জংলী বেড়ালের এর মতো এসে ও আমার ওপর চেপে বসলো। ওর চুল গুলো খুলে ও সেগুলো কে আমার ওপর ছড়িয়ে দিলো। আমি চোখ বন্ধ করলাম। আমি বুঝতে পারলাম আমার পালানোর সব পথ শেষ।

21 october, 2028

আজই বিকেলে ওর বাড়িতে গিয়েছিলাম। বিয়ের আয়োজন হচ্ছে। সেই পাত্রের সাথেও দেখা হয়ছে। ওর দিকে তাকাতেই দেখি ওর চোখ ছলছল করছে।
- কি রে? কি হলো?
- আমার সাথে আমার ঘরে আয়।
- এখন? কি ভাবে?
- হুম। চল।
ওর ঘরে যেতেই ও আমায় জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করলো।
- কি হলো? কাঁদছিস কেনো?
- সরি রে ভাই!!!! আমি বুঝতে পারিনি।
- আরে ইটস ওকে!
- আমরা বন্ধু তো?
- হুম!! সারাজীবন!!!

You've reached the end of published parts.

⏰ Last updated: Jul 13, 2020 ⏰

Add this story to your Library to get notified about new parts!

সেই বছরWhere stories live. Discover now