আমার সুখী সাইকেল

18 3 0
                                    

বেশ কিছুদিন ধরেই  সাইকেল শিখার শখ। কিন্তু সাইকেল নেই।  অনেক কষ্টে রিকোয়েস্ট করে একটা সাইকেল কিনলাম।  আব্বুর মতে এটা হলো ফালতু খরচ।  আমি মোটেও সাইকেল শিখব না, এমনি পিনিকে কিনতিসি। অনেক চোখের পানি, নাকের পানি গড়ানোর পর একটা সাইকেল কিনে দিল আমাকে আব্বু।  যাকগে, সাইকেল টা পেয়ে আমার মনে হলো এই বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ নির্বাচন করা হলে, মানুষ টা আমি ই হবো। আর কেনই বা হবো না? অনেক দিনের শখ, অনেক দিনের ইচ্ছা পূরণ হলো।

খুব আয়োজন করেই আমি সাইকেল টাকে ঘরে আনালাম।  রাস্তায় বহু মানুষ বহু কথা বলল।  কেউ বলল অনেক সুন্দর  সাইকেল, কেউ বলল দেখতে পুরান পুরান লাগে, কেউ বলল দাম এর তুলনায় সাইকেল টা একদম ভালো হয় নি।  কিন্তু আব্বু সবার উত্তরে একটা কথা বলল।  এটা ই আমাদের জন্য ছিল, তাই এটা ই কেনা হলো এতো গুলোর মধ্যে।  তার উপর আমার মেয়ে খুশি।

আসলেই আমি হলাম দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী মেয়ে।  কিন্তু সুখ টা স্থায়ী হলো না। সমস্যা পড়ে গেলাম, "নতুন সাইকেল কই রাখব?"
যেখানে সেখানে রাখলে তো চুরি হওয়ার সম্ভবনা বেশি।   অযত্নে রাখা যাবে না। এটা তে হেল্প করল বাড়িআলা আংকেল আস্ত একটা গ্যারেজ এর বিশাল চকচকে, ঝকঝকে জায়গা আমার সাইকেল এর জন্য বরাদ্দ হলো।  এই তো বেস চিন্তা খতম।  আমার সাইকেল সেভ তো আমি ও খুশি।  সাইকেল চালাতে পারি না তো কি হলো?  শিখে নিব।  আজ দিব্যি আরামের ঘুম দেব।  কাল থেকে কোমড় বেঁধে সাইকেল চালানো শিখব।  ইচ্ছা পূরণের ডায়েরিতে ঘুমানোর আগে লিখে দিলাম,
" সাইকেল কেনার ইচ্ছা পূর্ণ হলো।"

পরদিন সকালে এক দৌড়ে সাইকেল এর কাছে ছুটলাম।  বিশাল পরিষ্কার, চকচকে জায়গায় আমার সাইকেল টা রাজার মতো মাথা উঁচু  করে দাঁড়িয়ে আছে। যে কেউ দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখলে বলবে, "আহা কত সুখী সাইকেল।"

আজ আমার প্রথম দিন সুখী সাইকেল এ বসে সুখবিলাস করার।  এজন্য আমি ও খুশি।  যাক প্রথম দিন সুখী সাইকেল কে নিয়ে অনেক চালানোর চেষ্টা করলাম আমি। একা একা চেষ্টা করলাম।  সাইকেল টা কয়েক জায়গায় পড়ে গেল।  কাঁদায় পড়ল, পানিতে পড়ল, বালিতে পড়ল,শক্ত রাস্তায় পড়ল তবুও সুখী সাইকেল সুখী ই ছিল।  আজকে ও সুখী সাইকেল চালানো শিখা হলো না।  রাজকীয় পরিষ্কার রাজ প্রাসাদের মতো গ্যারেজ এ আমার সুখী ময়লা সাইকেল টা দাঁড়িয়ে আছে।  ময়লা হওয়া স্বত্তেও তাকে সুখী লাগছে। 

আমার সুখী সাইকেল Where stories live. Discover now