আমার আর আমার তাহার ভালোবাসার ব্যাপারটা একটু বলি। তিনি কখনোই আমার কোনো লিখা পড়েন না। বউ সমাচার বেরোনোর পর বললাম, ‘বইটা তোমারে উৎসর্গ করছি।’
সে বিস্মিত।
‘বই উৎসর্গ করছো কেন? সারা দুনিয়ারে তোমার জানাইতে হবে ভালোবাসার কথা!
একেবারে শরম নাই।’
গুড! ফ্যামিলি ফটোতে তিনি কখনোই আমার পাশে দাঁড়ান না। বাচ্চা দুইটা মাঝখানে। আমি যদি পাশে দাঁড়াই, তিনি দাঁতে দাঁত চেপে বলেন, ‘সবাইরে দেখানোর কি আছে? গায়ের সাথে লাগো ক্যান?’
আমি অসহায় মুখে বলি, ‘কিন্তু সবাই তো জানেই আমরা গায়ে গায়ে লাগছিই। ফুলে ফুলে বারি খাইয়া তো নিশ্চয়ই বাচ্চা হয় নাই।’
সে তাও ফাঁক হয়ে দাঁড়ায়।
কখনো যদি কারো সামনে হাত ধরি সে ধমকাইয়া একাকার।
এইডা কোনো কথা হইলো? হাত ধরলে ঘরে।বিয়ের এত বছর পর কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘এই যে শুনুন আপনি মানুষটাকে কেন ভালোবাসেন? কি গুণ আছে তাঁর?
আমি বুক ফুলিয়ে বলবো,
"মানুষটা ভালোবাসাকে খুব নিজের করে ভালোবাসতে পারে। নিজের ভালোবাসা সে কখনোই কোন তৃতীয় ব্যক্তিকে দেখায় না। তাঁর কাছে আমাকে ভালোবাসার ব্যাপারটাই এই পৃথিবীতে তাঁর সবথেকে গোপন ও ব্যক্তিগত ব্যাপার।”
এই এত বছর পরও মানুষটা আমার কেটে যাওয়া হাতে ব্যান্ডেজ করতে হলে, সাবধানে দরজা ভিজিয়ে এসে পাশে বসে। আমার মাথায় হাত রাখার হলেও সেটা নিরিবিলিতে। খাওয়ার সময় আমার পাতে নিজের পাত থেকে কিছু দিতে হলে আশপাশটা দেখে নিয়ে তবে টুক করে দিয়ে দেয়। এই পৃথিবীতে সবসময় সে আমাকে তাঁর খুবই ব্যক্তিগত ভাবতে পছন্দ করে। একটা মুহূর্তও সে বাইরে দেখাতে চায় না।
সমুদ্রপাড়ে দাঁড়িয়ে দুজনে হাত ধরলেও সেটা আমার ওড়নায় ঢাকা থাকে।ভালোবাসা যার কাছে এত একান্ত, এতটাই নিজের তাতে মুগ্ধ না হয়ে থাকা যায় বলুন?
বাবুরা হবার পর, মানুষটা আমার পাশে এসে যখন দাঁড়ালো।
আমি কিছু বুঝবার আগেই চট করেই আমার মাথায় একটু হাত রাখলো৷
আমি তাকাতেই বললো, ‘একদম এভাবে তাকাবে না। কেউ বুঝার কোনো দরকার নেই।’
মাঝে মাঝে মনে হয় অনন্তকাল এমন ভালোবাসা পেলে প্রচন্ড অভাব অনটন নিয়েও সাচ্ছন্দ্যে থাকা যায়!এত কথা বলার কারণটা এখন বলি। কুন্দনিকা নিয়ে সে একবার জিজ্ঞেস করেছিল, ‘এর মানে কি?’
বললাম, সোনার মত মেয়ে।
সে খুবই চাপা স্বরে বলেছিল, ‘তোমার মতো।’
আমার হয়ত চোখ খুব ছলছল করেছিল। আমি তাঁর সামনে এরপর একটুও দাঁড়াই নি।আহা এই বইয়ের সাথে আমার ভালোবাসার কতই না সেরা মুহূর্তটি জড়িয়ে। এই তুচ্ছ আমি, এই শূণ্য আমি; অনেক দামী কথাটি #তাহার কাছ থেকে শুনেছিলাম, এই কুন্দনিকার জন্য ।
ও হ্যাঁ, ভালোবাসাটাকে যে শুধু তিনিই ব্যক্তিগত রেখেছেন তা নয়। আমিও রেখেছি, এই যেমন মনে মনে আমি তাকে কয়েকটা বিশেষ নামে ডাকি।
এই যেমন এক্ষুনি ডাকলাম *****।
উঁহু "বাবুটা" নয়। এটা অন্য নাম।
ভালো কাটুক সময় কুন্দনিকার সাথে।
প্রি-অর্ডার পোস্টের লিংকটি নিচে দেয়া হলো:
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=771682640279030&id=406904170090214