হঠাৎ করেই দেখি অনিক আসছে, উষ্কখুষ্ক চুল, রং চটা জিন্স, কালো টি-শার্ট হাতে এক গুচ্ছ সাদা গোলাপ আর কাঁ ধে কোন রকমে ঝুলতে থাকা একটা ব্যাগ। অনিক বলল, "অনেক দিন ধরে একটা কথা তোকে-" বলে আর শেষ করল না। আমি বললাম, "বল কি বলবি?" "না, আসলে-" ওর কথা শেষ না হতেই আমার ফোনটা বেজে উঠলো। কথা শেষ করেই চোখে চোখ রেখে তাকালো। ওর চোখ দুইটা লাল হয়ে আছে। কিছু কি হইসে?
"এই মুহূর্তে তোর এই কথাগুলো সব অবান্তর, কোন মানেই নেই আমার কাছে।" "যাক, না বললে জানতামই না। তাহলে ভালোবাসাটা শুধুই আমার?" "হ্যাঁ!"
কবিরের কথাগুলো রাইসা কিছুই না শুনতে পেলো আর না বুঝতে পেলো। রাইসার সম্পূর্ণ মনোযোগ তখন কবিরের বৃষ্টিস্নাত মুখশ্রীতে। ছোট ছোট চুলগুলো বেয়ে টুপ করে ফোটা ফোটা পানি পরছে কপালে। রাইসার মনে হলো এই মুখটা তার ভীষণ আপন। এই মুখে তাকিয়ে জীবন পার করে দেওয়া যাবে।
বৃষ্টির জলে ভেজা কবিরের হালকা গোলাপি ঠোঁট দেখে রাইসার নেশা লাগছে। সদ্য ফোটা গোলাপ ফুলের ভেজা পাপড়ী। হাতের আঙ্গুল শির শির করছে একটুখানি ছুঁয়ে দেওয়ার আশায়।
রাইসা অবচেতন মনে তার ডান হাতটি তুলে কবিরের গালে রেখেছে। ভেজা ঠোঁট দু'টোর খুব কাছে। কী আশ্চর্য্য! কবিরকে প্রথমবার ছোঁয়ার পরেও কোনো আড়ষ্টতা জাগছে না। জনম জনমের পরিচিত মনে হচ্ছে। রাইসার ডান হাতের বৃদ্ধাআঙ্গুলি কবিরের গাল বেয়ে ঠোঁট ছুঁতেই তার বাম হাতের বাহু ধরে ঝাঁকি দিলো কবির। হুঁশ ফিরে পেতেই রাইসা দু'পা পিছিয়ে কবিরের থেকে একটু দূরে দাঁড়ালো।