তানুকার আজ কলেজের প্রথম দিন। গতকাল রাত থেকেই তানুকার মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করছে। নিজেকে কিছুটা বড় বড়ও লাগছে। স্কুল জীবন শেষ এখন নতুন জীবন শুরু । কি মজা এখন আর তেমন ধরাবাঁধা নিয়ম নাই । দিদিকে দেখেছে কতো মজাকরতো তারা কলেজে থাকতে , কতো আড্ডা কতো ফুর্তি আবার সেই সাথে পড়াশোনাও করতো সব বন্ধুরা একসাথে। আজ দিদি কতো বড় চাকরি করে । তানুকাও একদিন করবে।
নাস্তার টেবিলে বসে বসে তানুকা তাই ভাবছে। উত্তেজনার কারনে গলা দিয়ে খাবার পর্যন্ত ঢুকছে না। তানুকার মা রান্না ঘর থেকে চা বানাতে বানাতে বলে উঠলো ,
বলেছিলাম আমি তোর সাথে যাই ,কিন্তু তুইতো রাজি হইলি না।
কি আশ্চর্য তুমি কেন আমার সাথে যাবে?
কেন , গেলে কি কোন অসুবিধা আছে ?অবশ্যই অসুবিধা আছে।
কি অসুবিধা ?
তুমি সাথে গেলে সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে। আর আমি চাই না কেউ আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করুক।
এই বলে তানুকা খাবার টেবিল থেকে উঠে গেল। ক্লাস শুরু দশটা থেকে , এখন বাজে নয়টা পনেরো । যেতে বিশ মিনিট তো লাগবেই। তনুকা বাবার কাছে এসে বলল,
বাবা কলেজের ক্লাস শুরু করতে যাচ্ছি , এই বলে বাবাকে প্রনাম করলো।
দরজা দিয়ে বের হবার সময় মাকে শুধু বলল , মা আসি ।তানুকাদের বাসাটা পাহাড়ের একটু উচুতে । তানুকা সাইকেল বের করলো । তনুকাদের শহরের নাম ভেরাল। ভারতের একেবারে সিমানা বরাবর এই শহর । উচু নিচু পাহাড়ে ঘেরা খুব সুন্দর একটি শহর । এইখানে সাধারণত সবাই সাইকেলে অথবা বাইকে যাতায়াত করে।
তানুকা সাইকেলে করে রওয়ানা দিল কলেজের উদ্দেশ্যে। মিষ্টি মেয়ে তানুকা কে এলাকার সবাই খুব ভালোবাসে । কলেজ যাবার পথে কতোজনকে যে সালাম জানালো তানুকা।
কাকা আজ কলেজের ক্সস শুরু করলাম , দোয়া করবেন, কাকি আপনার শরীর কেমন ? টোকাই কেমন আছিস ?কলেজে ঢুকেই তানুকার মন ভরে গেল । দিদির সাথে মাঝে মাঝে যখন আসতো তখন মনে মনে ভাবতো কবে যে পড়বো এইখানে । পড়াশোনা করতে তানুকার সবসময় ভালো লাগে।
কতো বড় কলেজ , ক্লাস কোন দিকে কে জানে।
তানুকা করিডোর দিয়ে হাটছে আর ক্সাসরুম খুজছে , হঠাৎ পিছন দিক থেকে একটা ছেলে বললো,
Excuse me , তুমি কি প্রথম বর্ষের ছাত্রী ?
হ্যা
ক্লাসরুম খুজছো ?
হ্যা
আমিও , চলো একসাথে খুজি। এই বলে ছেলেটা তানুকার সাথে হাটতে লাগলো।
তোমার নাম কি ?
তানুকা
আচ্ছা , আমার নাম রাহি , তুমি কোথায় থাকো ?
নিলাদ্রী পাহাড়ের কাছে।
ও আচ্ছা তাহলে তো কাছেই থাকো । আমি অনেক দূরে থাকি , আমাকে কিছুটা পথ বাসে আসতে হয় , পরে পায়ে হেটে । তাই ভাবছি এইখানে হেস্টেলে সিট পেলে উঠে যাব ।
তানুকার মনে হলো ছেলেটা বেশি কথা বলে।
রাহি আসলেই একটু বেশি কথা বলে । আবার সব কথা যে সত্যি বলে তাও না । প্রচুর চাপাও মারে । যেমন রাহি মোটেও দূরে থাকে না, বরং কলেজের খুব কাছেই তার বাসা তবুও তানুকা কে সে একটা চাপা মেরে দিল । এইটা তার একধরনের স্বভাব। মানুষের সাথে চাপা মেরে সে খুব আনন্দ পায় । তবে রাহির একটা বড় গুন হলো সবার সাথে খুব সহজে আপন করে মিশতে পারে । সবার এই গুনটা থাকে না ।
YOU ARE READING
Good Morning
General Fictionএই গল্পের সকল চরিত্র, স্থান, পাত্র কাল্পনিক। যদি কারও ঘটনা বা চরিত্রের সাথে মিলে যায় তবে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ করছি ।