যারা শীল ভঙ্গ করে তারা জন্মে জন্মে দুঃখ -দুর্দ্দশা ভোগ করে থাকে। অতীত ও বর্তমান শীল লঙ্ঘনের জন্য এক সময়ে যদি হঠাৎ বিপদে পড়ে, কঠিন রোগাগ্রস্থ হয়,অকালে পুত্র - কন্যা বা কোন প্রিয় আত্মাীয় স্বজনের মৃত্যু হয়, তাহলে অতি মনের দুঃখ জ্বালা পোড়ায় বলে থাকে, ও ভগবান! আমি অতীতে এত কি পাপ করেছি, কেন আমার কপালে এত দুঃখ। আমার সন্তানকে বা আমার আত্মীয়কে কেন কেড়ে নিয়েছ,ও ভগবান! আমার কি দোষ ছিল, কেন এই অবস্থা হয়েছে, এভাবে তারা মিথ্যা প্রলাপে (অনর্থক বাক্য) দুঃখের যন্ত্রণার শোকাহত হয়ে ভগবান বুদ্ধেকে দোষ দিয়ে থাকে। আসলে কি সত্যিকার ভগবান বুদ্ধ তার প্রিয় সন্তান বা আত্মীয়কে কেড়ে নিয়েছে? এটা মিথ্যা প্রলাপ মাত্র। সেই মূর্খতার জন্য অন্যকে দোষী করে থাকে। অবিদ্যার কারণে সে জানে না অতীতের কোন পাপের হেতুতে (কারণে) অকালে প্রিয় বিয়োগ হয়ে পাপের শাস্তি ভোগ করছে। তখন বুঝতে পারে পাপের শাস্তি কত ভয়ংকর। তাই বুদ্ধ বলেছেন, শীল যথাযত ভাবে রক্ষা করবে। আমি দেখতে পাচ্ছি, অতীত জন্মে দান,শীল,ভাবনার পূণ্যফলে ইহ জীবনে মানব জীবন লাভ করছে। তাই শীল ভঙ্গ করো না। মনে রাখবে একবার যদি শীল ভঙ্গ করে থাক,তাহলে হাজার বার অগণীত দুঃখ ভোগ করতে হবে। শীল লঙ্ঘন কারী ব্যক্তি সবসময় বিষন্নে থাকে বা দুঃখে থাকে ও মনকে দগ্ধ করে। সব কিছু মনকে হরণ করতে পারে। দুঃখের সাগরে নিক্ষেপ করতে পারে। চারি অপায়ে নিক্ষেপ করতে পারে। চারি অপায়ে অগণীত বৎসর দুঃখ দিতে পারে। সব সময় জ্বলে পুড়ে ছাই করতে পারে। এই একমাত্র শীল লঙ্ঘনের কারণে। তাতে মনে পরিপন্থী হয়ে রাগ,হিংসা,অহংকারের কারণে মানুষ অসুর প্রকৃতি (স্বভাব) হয়ে নানা প্রকার পাপ কর্ম করতে কোন দ্বিধাবোধ করে না। তাই অবিদ্যা, মোহ হতে দ্বেষাগ্নি হিংসার আগুনে জ্বলে উঠে, এটা বেশী ভয়ংকর। এটা দ্বেষাগ্নিতে ধারণ করে। শীল লঙ্ঘনের ফলে মন উগ্রপন্থি হয়ে চিত্ত এই রকম হয়। চিত্তে যখন বেশি লোভ, দ্বেষ,মোহ জন্মায় তখন পশু-পক্ষী বা যে কোন প্রাণীর কথা দূরে থাকুক। অন্যায়, অপরাধ দূরে থাকুক মানুষ পর্যন্ত যখম আঘাত করতে পারে,খুন করতে পারে। এভাবে দ্বেষাগ্নিতে হিংসার আগুন জ্বলে পুড়ে মানুষ বহুশত কোটি বৎসর দুঃখের সাগরে ঝাপ দিয়ে মরতে থাকে। এই মোহাগ্নি অজ্ঞান আগুন ও হিংসার আগুন খুবই ভয়ংকর। তাই সকলেই এই আগুনকে প্রশ্রয় না দিয়ে নিবানোর চেষ্টা করুন, তা না হলে জীবন চলার পথে দুর্দ্দশা ভোগ করার সময়, ভগবান অথবা অন্য কাউকে দোষ দিয়ে থাকলে মূর্খতা হবে। কারণ সুখ-দুঃখের জন্য নিজেই দায়ী অপর কেহ নয়।