আমাদের রাজ্যের নাম নহৃংশুদাবাদ। এই রাজ্যের রাজা শুধাংশু গৌড়। মহামান্য শুধাংশু গৌড়কে দেখে এখন কেইবা বলবে, এক সময় এই পক্বকেশ বৃদ্ধ কতোটা সাহসী আর বীর ছিলেন! অথচ এক সময় তার নাম শুনে পাশের রাজ্যগুলোর বড় বড় বীরদেরও বুকে কাঁপন উঠতো।
তারই ছেলে শুহাংশু গৌড় আমার ছোটবেলার বন্ধু। ঠিক কবে, কখন, কিভাবে আমাদের বন্ধুত্ব হয়েছিল, সেটা আজ আমার মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে, অনেক ছোটবেলা থেকেই আমরা একে অন্যের সাথে আছি। একই সাথে ঘোড়ায় চড়া শিখেছি, একই সাথে যুদ্ধবিদ্যা শিক্ষা করেছি, সেইসাথে নিজেদের মনের মতো করে শিকারে বেড়িয়েছি। কিন্তু এবারের কথা ভিন্ন।
সেদিন হঠাত করে মহামন্ত্রী তলব করাতে আমাকে ছুটতে হয়েছিল রাজপ্রাসাদের একেবারে পেছনেরদিকে। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, হয়তো কোন দোষ খুঁজে পেয়েছেন রাজামশাই কিংবা মহামন্ত্রী, কিন্তু রাজপুত্রের বন্ধু বলে জনসমুখ্যে সেটা প্রকাশ না করে গোপনে ডেকেছেন। কিন্তু সেখানে পৌছে দেখলাম, আমার অনুমান ভুল।
সেখানে মহামন্ত্রীর সাথে দাঁড়িয়ে ছিলেন খোদ রাজপুত্র শুহাংশু। এদুজন ছাড়া সেখানে আর কেউ ছিল না। রাজপুত্রকে দেখে আমার দেহে যেন প্রাণ ফিরে এলো। অন্তত রাজপুত্র থাকতে কোন ভয় নেই আমার।
"এসো শুভঙ্কর," উনাদের কাছে পৌছতেই মহামন্ত্রী বলে উঠলেন, "এদিকে, এইখানটায় বসো।"
মাথাটা একটু ঝুঁকিয়ে সম্মান দেখালাম। তারপর উনাদের পাশে রাখা গাছের গুড়ির উপর বসলাম।
"হঠাত করে রাজপুরীর এখানে আমাকে তলব করলেন?" যথাযোগ্য সম্মানের সাথে বলে উঠলাম, "বিষয়টা কি মহামন্ত্রী?"
উত্তরটা এলো যুবরাজের পক্ষ থেকে, "সেনাপতি হতে চাও?"
"মানে?" যুবরাজের কথায় থমকে গেলাম, মুখে কথা রুচতে কিছুটা সময় লাগলো, "কি বলছেন যুবরাজ?"
"মানেটা সহজ," এবার মহামন্ত্রী বলে উঠলেন, "রাজামশাই ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন, তোমাকে তিনি সেনাপতির পদে দেখতে চান। আর কতোদিন সাধারন সৈনিক হয়ে দিন কাটাবে? তোমার বুদ্ধি আছে, সাহস আছে, সবদিক থেকেই তুমি সেনাপতি হবার যোগ্য। আর আমাদের বর্তমান সেনাপতির যোগ্যতা সম্পর্কে তো জানোই। তাই জিজ্ঞেস করছি, সেনাপতি হতে চাও?"
YOU ARE READING
রক্তমণি
Adventureহাটছি আমরা। হাটছি পার্বত্য অঞ্চলের ভেতর দিয়ে। আমি এবং যুবরাজ শুহাংশু, দুজন মিলে প্রায় একটা অসাধ্য সাধন করার চেষ্টায় নিয়োজিত হয়েছি। চারদিকে শুভ্র তুষারের ছড়াছড়ি, আকাশটাও এখানে শুভ্র বর্ণ ধারন করেছে। তার মাঝ দিয়ে চলছি আমরা দুজন। মাঝে মাঝে দূর আকাশের ব...