Radhanath Sickdhar

3 1 0
                                    

পৃথিবীর সব থেকে উঁচু শুলোর নাম জানে না এমন একজনকেও খুঁজে পাওয়া কঠিন। তোমরা প্রায় সকলেই জানো যে, এই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট-এর উচ্চতা ৮,৮৪৮ মিটার বা ২৯,০২৯ ফুট। এই সর্বোচ্চ শৃফাটি নেপাল ও চিন সীমান্তে অবস্থিত। নেপালিরা এটিকে চেনে 'সাগরমাথা' বলে আর তিব্বতিরা বলে 'চোমোলাংমা। অবশ্য ১৮৫৪ সালের আগে এই শুক্তোর নাম তো আর এভারেস্ট ছিল না। ১৮৫৪ সালে সার্ভেয়ার জেনারেল জর্জ এভারেস্টের নামানুসারে এই শৃঙ্গের নাম 'এভারেস্ট' করেন তদানীন্তন ইংরেজ সরকার। যে দিন থেকে মানুষের মনের মধ্যে পাহাড়ের চূড়ায় চড়ার ইচ্ছে জন্মেছে, বোধহয় সে দিন থেকেই বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে এই পর্বত শৃঙ্গকে ছুঁয়ে দেখার। বহু পর্বত আরোহী এর জন্য জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করেছেন। তবুও মানুষ হাল ছাড়েনি। সেই ইচ্ছে প্রথম যৌথভাবে পূরণ করেন নেপালি শেরপা তেনজিং নোরগে ও নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী এবং অভিযাত্রী এডমন্ড হিলারি১৯৫৩ সালের ২৯ মে। কিন্তু তারও প্রায় একশো বছর আগে আমরা কেউই জানতাম না যে, এই সাগরমাথা বা চোমোলাংমা হল পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃ

সালটা ছিল ১৮৫২। স্থান ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের রাজধানী, শৈলশহর দেরাদুনের 'দি গ্রেট ট্রিগোনোমেট্রিক্যাল সার্ভে'-এর অফিস ঘর। অফিসে তখন ব্রিটিশ শাসিত ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল অ্যান্ড্রিউ স্কুল ওয়াহ্। সকালবেলা হস্তদন্ত হয়ে অফিস ঘরে ঢুকলেন এক যুবক। চোখে মুখে তাঁর চরম প্রাপ্তির প্রতিচ্ছবি। তাঁর বরিষ্ঠ পদাধিকারী সাহেবকে বললেন, "স্যার, আমি হিমালয়ের সর্বোচ্চ শুলা আবিষ্কার করেছি। পনেরো নম্বর চূড়াটিই (সাগরমাথার কার্যকরী সাংকেতিক নাম) হল পৃথিবীর সবথেকে উঁচু পর্বত শৃলা।

এই যুবকটিকে চিনতে পেরেছ? এই যুবকের নাম হল রাধানাথ শিকদার। সেই সময় শুধু ভারতে নয়, সুদূর ইউরোপেও তাঁর সমকক্ষ গণিতজ্ঞ কেউ ছিল না বলে মন্তব্য করেছিলেন জর্জ এভারেস্ট সাহেব।

১৮১০ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে কলকাতার জোড়াসাঁকোর শিকদার পাড়ায় ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রাধানাথ। বাবার নাম তিতুরাম শিকদার। তাঁর জন্মের দিন যেমন অজানা রয়ে গেছে তেমনি তাঁর মায়ের নামও আমার জানতে পারিনি। রাধানাথরা ছিলেন দুই ভাই ও তিন বোন। ভাইয়ের নাম শ্রীনাথ শিকদার। সেই সময় শিকদারেরা সাধারণত সমাজের শান্তিরক্ষা বা পাহারাদারের কাজ করতেন। তাই তাদের মধ্যে লেখাপড়ার তেমন চল ও চর্চা ছিল। না। কিন্তু রাধানাথের পড়াশোনার প্রতি ছিল প্রবল আগ্রহ। ছেলের এই আগ্রহ দেখে তাঁর বাবা তাঁকে পাড়ার পাঠশালায় ভরতি করেন। পরে তিনি কলকাতার ৪৮ নম্বর চিৎপুর রোডে অবস্থিত 'ফিরিশ্মি কমল বসু' তথা বাঙালি খ্রিস্টান কমল বসুর স্কুলে ভরতি হন।

You've reached the end of published parts.

⏰ Last updated: Oct 19, 2023 ⏰

Add this story to your Library to get notified about new parts!

Radhanath sikdarWhere stories live. Discover now