চারপাশটা নির্জন

16 2 0
                                    

আমার নাম H306T5DF5TG9DR4DF6MC । নামটা কোডের মতো লাগলেও এটিইআমার নাম। আমি পৃথিবীর একমাত্র মানুষ কিংবা প্রাণী যে কিনা নগ্ন বা উলঙ্গ হয়ে ঘুরেবেড়াচ্ছে এই অসীম মহাকাশে ।আমার শ্বাস-প্রশ্বাস , খাবার-দাবার, পানি , নিদ্রা , বিশ্রাম প্রভৃতি কিছুই দরকার নেই । আমি এক অভিশপ্ত অমরত্ব পেয়েছি যামানুষের এক বিষাক্ত লোভের কারনে হয়েছে । এক সময় মানুষ ক্ষমতা , আইসিটি , পরিবহন , ঘুম, বিশ্রাম , সমুদ্র , রোগ প্রভৃতি জয় করে কিন্তু তারা ২টি জিনিস পারে না আরা তা হল মহাকাশ ওমৃত্যু । ঘুম , বিশ্রাম ও রোগকে জয় করতে পারলেও মানুষেরমৃত্যু নিশ্চিত ছিল । তাদের মরতেই হত । এটায় তাদের নিয়তি । বিজ্ঞানিরা মনোযোগ দেয় মৃত্যু জয় করার দিকে কারন মৃত্যুকে জয় করতেপারলে তারা মহাকাশও জয় করতে পারবে । এক ঢিলে দুই পাখি । তো ১২ জন জীববিজ্ঞানী ,১০ জন পদার্থবিজ্ঞানী , ১৬ জন রসায়নবিদএবং ১০ জন বিভিন্ন সাইডের ডাক্তাররা মিলে মোট ৪৮ জনের এক দল অতি গোপনীয় গবেষণায়লেগে পরে যা বিশ্ববাসী এমনকি কোন দেশ বা সংঘটনও জানতে পারে না । এই দলের প্রধানপরিচালক এবং প্রধান প্রযোজক হলেন ডঃ জেমস কোলিপ । তিনি তৎকালীন শীর্ষ ধনী বাক্তির একজন ছিলেন এবং একজন জীববিজ্ঞানী ছিলেন । ১১ বছরেরপ্রচেষ্টায় ১২ ট্রিলিইয়ন ডলার খরচ করে ৪৫০৩ টি নবজাতকের প্রাণের বিনিময়ে বানানো হয়H306T5DF5TG9DR4DF6MC-কে অর্থাৎ আমাকে। আমাকে যখন প্রকাশকরা হয় তখন ডঃ জেমস কোলিপ যে ইতিবাচকপ্রতিক্রিয়ার আশা করেছিল তার একদম বিপরিত প্রতিক্রিয়া পায় । পৃথিবীর ১৭৮ টি দেশজাতিসংঘর কাছে পিটিশন সাইন করে আমার আবিষ্কারের বিপক্ষে । পরে ডঃ জেমস কোলিপের উপরআন্তর্জাতিকভাবে মামলা করা হয় এবং আমাকে ধ্বংস করার জন্য আদেশ দেওয়া হয় কারন আমারমৃত্যু নেই তাই আমি মনুষ্য কোন অধিকার পাব না এবং আমার বেঁচে থাকা মানুষ জাতিরজন্য হুমকিস্বরূপ । পরে যে কি নির্যাতন করলো কখনও এসিডে চুবায় কখনও বা বৈদ্যুতিকছুল্লিতে কিন্তু আমি মরি না । পরে বাধ্য হয়ে সাংবাদিকদের শান্ত করানোর জন্য জানান হয় যেআমাকে ধ্বংস করা গেছে । আমাকে মধ্য দিয়ে নাকি অতিরিক্ত পরিমান বিদ্যুৎ সরবরাহকরানোর পর আমাকে ছাই ছাই করে ফেলা হয়েছে । পরে স্যাটেলাইট মেরামতের নামে একটি রকেটলঞ্ছ করা হয় যার মধ্যে আমি ছিলাম । এরপর থেকে শুরু হয় আমার গন্তব্যহীন এক অনন্তযাত্রা যার কোন শেষ নেই । যাত্রাপথে যখন রকেটের এনার্জি শেষ হয়ে যায় তখন একটিগ্রহাণুর সাথে সংঘর্ষ হওয়ায় আমি ছিটকে চলে যাই এই অসীম মহাকাশে । এরপর থেকে আমিঘুরে বেরাচ্ছি এই অন্ধকার শীতল ও শব্দহীন জগতে । আমি শুধু অপেক্ষা করে আছি নুন্নতমএকটু শব্দ শুনার জন্য । এত নির্জন কেন এই জায়গা ? কেনআমি কোন শব্দ শুনতে পাই না ? কে আমাকে এই প্রশ্নের উত্তরদিবে ? আমি চিৎকার করি কিন্তু কোন শব্দ হয় না । আমিদীর্ঘশ্বাস ফেলি কিন্তু কোন শব্দ হয় না । আমি ঠাণ্ডায় কুঁকড়ে যাই কিন্তু কেউ আমাকেউষ্ণ আলিঙ্গনে জরিয়ে ধরে না । আমি একটু সঙ্গ চাই কিন্তু এই নিষ্ঠুর মহাজগতে কেউ তাদেয় না । আমি ডুকরে কেদে উঠি কিন্তু আমার চোখ দিয়ে পানিবের হয় না ।

চারপাশটা নির্জনWhere stories live. Discover now