-এই রণ, লক্ষ্মীটি শোন না কতদিন দাদাভাই আসে না বল তো? এবার যখন কলকাতা যাবে নিয়ে এসো না একবার?
- একেই বলে মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি। আমার দাদা, আমার খেয়াল নেই, অথচ পরের বাড়ি মেয়ের দরদ উথলে উঠল। রণদীপের বিদ্রুপটা গায়ে না মেখে তমা উল্টে পাল্টা উত্তর দিল,
-আচ্ছা তোমার নিজের মায়ের পেটের দাদা হলেও কি এভাবে বলতে?
-ও অমনি দুটো কথা শুনিয়ে দিলে তো! বড়দা আমাদের বংশের প্রথম সন্তান। ব্রিলিয়্যান্ট স্কলার ছিল। তার জন্যে আমরা সবাই তাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু নিজের দাদা তো আর নয়। তুমিই বল না আমি দাদাকে ফেলে কি আর বড়দা বড়দা করবো? করলে সেটা বাড়াবাড়ি মনে হবে না?
-মানুষটা কত ভালো বলতো? তমার চোখে প্রিয়দীপের সৌম্যকান্তি চেহারাটা ভেসে উঠল। বিয়ের সময় দাদাভাই আসেনি। সত্যি করে বলতে কি এবাড়িতে: দাদাভাইয়ের কোন কথাই শোনেনি বিযের প্রথম পাঁচ বছরে। রণই একদিন কোন প্রসঙ্গে ওর বড়দার কথা তুলেছিল। একটু একটু করে সব শুনে বড় আশ্চর্য্য হয়েছিল তমা। তারপর প্রধম যেদিন তমার সাথে ফোনেই আলাপ করিয়ে দিয়েছিল প্রিয়, সেদিনটা আজও মনে আছে। কিচ্ছু ভোলেনি তমা। প্রথম পরিচয়েই এমন ভাবে আপন করে: নিল যে মনেও হল না সেই প্রথম পরিচয়। তাও আবার ফোনে।
-তুমি বলছ যখন, নিযে আসব এবার গেলে, শুধু দেখ দাদাবৌদিরা যেন দিল্লী থেকে আবার টের না পায়। রণ আশ্বস্ত করল বৌকে।
-টের পেলেই বা কি? ফোঁস করে ওঠে তমা। আমার বাড়িতে আমি কাকে নিয়ে আসব না আসব তাতে কেউ দূর থেকে নাক গলাক, আমি চাই না রণ।
-তুমি বললেই তো আর কেউ মুখ বন্ধ করে রাখবে না তমা। আর সেবার তোমাদের ঢলাঢলিটা ওদের ভালোও লাগেনি।
রণদীপের গলায় সামান্য বিরক্তি ঝরে পড়ে।
-তুমি বলতে পারলে এই কথা আমাকে? তমার গলা ধরে আসে হঠাৎ।
-দেখ আমি কি বলি না বলি সেটা বড় কথা নয়। বৌদিতো আমাকেই দোষ দিয়ে গেল, বলল তোমার দাদা হলে কখনোই এসব ঢলাঢলি সহ্য করতো না।
-তোমার বৌদির কথা আর বলো না রণ, আমিও ঘাসে মুখ দিয়ে চলি না।
-ওই শুরু হয়ে গেল তো?
রণ আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তমাকে হঠাৎ জড়িয়ে ধরে বৌয়ের ফর্সা স্তনে খুব করে আদর করতে লাগল। রণদীপ খুব ভালো করেই জানে কোন দেবতা কিসে তুষ্ট।
রণর আদর থেকে মুক্ত হয়ে রণকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা রেখে তমা জিজ্ঞাসা করল,
-একটা কথা বলবে?
-কি?
-তোমার সাথে দাদাভাইয়ের এত মিল কেন?
-মিল? কিসের মিল? অবাক হয় রণদীপ।
রণদীপের ঠোঁট দুটো আলত করে ভিজিয়ে দিয়ে অস্ফূট স্বরে উত্তর দিল তমা
- আদরে সোনা। আদরে।
YOU ARE READING
আদর
Short Storyতমার চোখে প্রিয়দীপের সৌম্যকান্তি চেহারাটা ভেসে উঠল। বিয়ের সময় দাদাভাই আসেনি। সত্যি করে বলতে কি এবাড়িতে: দাদাভাইয়ের কোন কথাই শোনেনি বিযের প্রথম পাঁচ বছরে। রণই একদিন কোন প্রসঙ্গে ওর বড়দার কথা তুলেছিল। একটু একটু করে সব শুনে বড় আশ্চর্য্য হয়েছিল তমা। তার...