১
- লরেক্স কি করছো তুমি ?
- আমি চমকে গেলাম । কে ?
-আমি তোমার মা। তুমি এখানে কি করছো একা । তিন দিন হয়ে গেছে বাড়ি যাচ্ছো না । কি নিয়ে রিসার্চ করছ ?
- মা একটা রোবট বানাচ্ছি , প্রায় শেষ ।
- এটা সেই রোবটটা না, যেটা ডিজাইন দেখিয়েছো আমাকে প্রায় ৩ বছর আগে।
- হ্যাঁ
- এটির কি নাম দিয়েছো ?
- ক্লিকন ।এখন রোবটটা চালু করছি।
লরেক্স রোবটটি চালু করল
- হ্যালো, আমার নাম ক্লিকন।
- ক্লিকন তুমি সামনে হাঁটো।
রোবটটি সামনে হাঁটল
- ক্লেকন তুমি পিছনে হাটো
- অভিনন্দন লরেক্স তোমার রোবটটা তো ভালোমতোই চলছে এখন তুমি অবশ্যই কে রিবুট ল্যাবে পাঠাবে ।
-হ্যাঁ মা।
- চলো নাস্তা করতে।
নাস্তা শেষে আমি রোবট ক্লেকনটি নিয়ে রিবুট ল্যাবে গেলাম । ওর সার্টিফিকেট লাগবে চালানোর জন্য ড. হ্যাসেল রিবুট ল্যাবের একজন পরীক্ষক সে আমার রোবট কে পরীক্ষা করবে।
ডক্টর হ্যাসেল: ,"হুম,ভালোভাবেই তৈরি করেছ। ভালো মডেলের হ্যান্ড মেড মটর লাগিয়েছো । আচ্ছা, লরেক্স তোমাকে প্রশ্ন করব তারপর আমি রিবুট সার্টিফিকেট দিব।"
- আচ্ছা প্রশ্ন করুন ,"লরেক্স বলল"
- "আচ্ছা, তোমার রোবটটা যদি কখনো আনকন্ট্রোল হয়ে যায় বা সিস্টেমে সমস্যা হয় তাহলে কি হবে? " ডক্টর হ্যাসেল বলল।
- "সুন্দর প্রশ্ন করেছেন। যদি এমন হয় আমার সুপার কম্পিউটার বুট রোবটকে অফ করে দেবে। আর না হলে আমার এই ঘড়িতে অ্যালার্ম বেজে উঠবে তখন আমি তা ঠিক করে দিব।" নরেক্স উত্তর দিল
ডক্টর হ্যাসেল একটু অবাক গলায় বলল,"হুম, ভালো টেকনোলজি ব্যবহার করেছ। ঠিক আছে, আমি তোমাকে সার্টিফিকেট দিচ্ছি।"
- থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।
বাসায় গিয়ে মাকে সার্টিফিকেট দেখানো লরেক্স। মা খুশি হলেন।২
মাঠে শুয়ে আছে লড়ে বাকি আছে। আকাশ লাল সব সময় লাল থাকে। লরেক্স এর মনে প্রশ্ন জাগে "এমন কোন গ্রহ আছে যেখানে দিন রাত হয়, সূর্য দেখা যায়, চাঁদ দেখা যায়?" পেছনে কে যেন হাত দিল।পেয়ে গেল লরেক্স।
- কে? লরেক্স একটু ভয়ে কণ্ঠে বললো।
- আমি ক্লেকন। কি করছো তুমি?
- না এমনি বসে আছি।
- কি ভাবছো তুমি।
- ভাবছি এমন কোন গ্রহ আছে কি সূর্য দেখা যায়, চাঁদ দেখা যায়, অক্সিজেন কৃত্রিম ভাবে উৎপন্ন করা লাগে না, সবুজ শ্যামল প্রকৃতি, পানি কৃত্রিমভাবে উৎপন্ন করা লাগে না, প্রকৃতি থেকে খাবার পাওয়া যায়
- আমি জানি না, চলো মার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি।
মার কাছে প্রশ্ন করলো লরেক্স। লরেক্সের শুনে লরেক্সের মার মনে পড়ে গেল লরিক্সে বাবার কথা।লরেক্সের বাবার নাম জোহান তিনি একজন বৈজ্ঞানিক ও গবেষক। তিনি তাদের নিলাভ গ্রহ নিয়ে গবেষণা করছিল। তখনই তিনি অন্য গ্রহের কথা জানতে পারলেন। গ্রহটির নাম পৃথিবী। তখনই তিনি তার স্ত্রী অর্থাৎ লরেক্স এর মা ফিমাকে ডাকলো।
- কি হয়েছে, আপনি আমাকে ডেকেছেন?
- হ্যাঁ, তোমাকে বলেছিলাম না। আমি আমাদের গ্রহ নিয়ে গবেষণা করছি।
- হ্যাঁ আপনি বলেছিলেন।
- আমি আমাদের গ্রহ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে একটি নতুন গ্রহের সন্ধান পেয়েছি।
- কি সে গ্রহ? নাম কি গ্রহের? আমাকে বিস্তারিত বলুন।
- শুনো, এই গ্রহের নাম "পৃথিবী"। এই গ্রহের আয়তন পঞ্চাশ কোটি ৯৫ লাখ ৫৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার। এর বয়স ৪৬০ কোটি বছর। পৃথিবীর ২৯.১% হচ্ছে ভূমি এবং 70.9% হচ্ছে পানি। এখানে পানির প্রাকৃতিকভাবে রয়েছে। এর পানির স্বাদ দুই ধরনের : ১.লবণাক্ত পানি
২.স্বাদু পানি
লবণাক্ত পানি হচ্ছে মোট ৯৭% এবং বাকি ৩ % হচ্ছে সাধু পানি। এই গ্রহটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে অবস্থিত। গ্রহটি সূর্যকে চারদিকে ঘুরে আসতে ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড সময় লাগে। নিজ অক্ষের উপর একবার আবর্তন করতে ২৩ ঘন্টা ৫৬ মিনিট সময় লাগে। পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগ ৬৬ হাজার ৭০০ মাইল প্রতি ঘন্টা বা ১ লক্ষ ৭ হাজার ৩২০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। এই গ্রহের ভূপৃষ্ঠে গঠন আমাদের গ্রহের গঠনের আলাদা গঠনটি এমন ;অক্সিজেন ৪২.৭%, সিলিকন ২৭.৭%, অ্যালুমিনিয়াম ৮.১%, লৌহ ৫.১%, ক্যালসিয়াম৩.৭%, সোডিয়াম ২.৮%,পটাশিয়াম ২.৫% এবং ম্যাগনেসিয়াম ২.২%। মেরু দেশের ব্যাস ১২,৭১৪ কিলোমিটার। নিরক্ষীয় ব্যাস ১২,৭৫৭ কিলোমিটার। গড় ব্যাস দরবেশ ১২,৭৩৪.৫ কিলোমিটার। গড় পরিধি ৪০,০০০ কিলোমিটার। অবাক করার বিষয় হচ্ছে এই পৃথিবীতে ২০৬ টি দেশ রয়েছে। পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে চাঁদ ঘুরে।
- আচ্ছা এই পৃথিবীর সূর্যের তফাত কি আছে?
- না, কোন তফাৎ নেই।
- তুমি কি এই সূর্য সম্পর্কে কিছু জানো। জানলে বিস্তারিত বলবে ?
- হ্যাঁ অবশ্যই। সূর্যের ব্যাস ১৩,৮৪,০০০ কিলোমিটার। এই সূর্যের গ্যাসীয় উপাদান গুলো হচ্ছে ; হাইড্রোজেন (৭৩.৪৬%),হিলিয়াম (২৪.৮৫%),অক্সিজেন (০.৭৭%),কার্বন (০.২৯%),লোহা (০.১৬%),নিয়ন ( ০.১২%),নাইট্রোজেন (০.৯%),সিলিকন (০.০৭%),ম্যাগনেসিয়াম (০.০৫%),সালফার (০.১০%)।ওই সূর্য প্রতি সেকেন্ডে ৫,০৮,০০০ বিলিয়ন অশ্বশক্তি বিকিরণ করে। ওই এই সূর্য প্রতি সেকেন্ডে ৬০,০০,০০,০০০ টন হাইড্রোজেন হিলিয়ামে রূপান্তরিত হয়ে শক্তি উৎপন্ন করে।সূর্য কর্তৃক প্রতি সেকেন্ডে যে শক্তি বিকৃত হয় তার ওজন ৫০,০০,০০০ টন। সূর্য পৃষ্ঠের উত্তাপ ৬০০০ ডিগ্রীর সেন্টিগ্রেড। অক্ষের উপর একবার আবর্তন করতে ২৫ দিন সময় লাগে। ওই সূর্যের সৌর বিচ্ছুরণ (Sun Flane) ঘটে।
- আচ্ছা সৌর বিচ্ছুরণ কি ?
- সূর্যপৃষ্ঠে মাঝে মাঝে প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটে, ফলে আগুনের শিখা অনেকদূর পর্যন্ত বিচ্ছুরিত হয়। এটিকে সৌর বিচ্ছুরণ বলে।
- বাহ! অনেক কিছুই তো জানো।
- হ্যাঁ, আমি আরো জানব তাই আমি পৃথিবীতে যাব। একটি মহাকাশযান তৈরি করতে হবে। তাও দ্রুত।
"তুমি পৃথিবীতে যাবে । "লরেক্স এর মা একটু অবাক হয়ে বলল।
"হ্যাঁ, পৃথিবীতে যাব আরো জানবো তো করে আমাদের গ্রহকে গড়বো। 'লরেন্সের বাবা বলল।
"যেমনটি তোমার ইচ্ছে।" লরেক্সের মা বললো।