এলিয়েন রহস্য সন্ধ্যানে

106 2 0
                                    


স্টিফেন রিচার্ড তার সামনে থাকা সুপার কম্পিউটারটির স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে আছেন। তিনি সেখানে স্পস্টই দেখতে পাচ্ছেন মহাকাশযান বা ফ্লাইং সসারটি খুব দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি তার এসিস্টেন্ট জন ক্লেভার্ডকে বললেন তাদের ফ্লাইং সসারটির স্পীড বাড়াতে। কারণ তিনি চান না অন্যদিনের মত আজকেও এই রহস্যময় ফ্লাইং সসারগুলো হারাতে। আজকে যেভাবেই হোক তিনি এই ফ্লাইং সসারটির দিকে লক্ষ্য রাখবেন। সেদিন রিচার্ড তার ল্যাবরেটরিতে গবেষনারত অবস্থায় ছিলেন। তিনি দেখতে পেলেন হঠাৎ মহাকাশে সেটআপকৃত স্যাটেলাইট ক্যামেরার সিগনাল লাইট জ্বলে উঠল। তিনি চমকে উঠলেন আর স্ক্রিনের দিকে তাকালেন এবং অদ্ভত ভাবে একটা ফ্লাইং সসার দেখতে পেলেন। যেটা কিছুক্ষনের মধ্যেই মেঘের আড়ালে চলে গেল। বিষয়টা তিনি খুবই সিরিয়াসলি নিলেন এবং এটা নিয়ে রীতিমতো গবেষনা শুরু করে দিলেন। তারপর মাঝে মাঝেই তিনি এটা দেখতে পেতেন। আজকে যখন তিনি দেখতে পেলেন আর দেরি না করে সাথে সাথেই তার এসিস্টেন্টকে নিয়ে এই সসারটির পিছু নেন। তিনি দেখলেন এদের চলার স্পীড খুব বেশি। বেশিক্ষন ওটার দিকে লক্ষ্য রাখা মুশকিল।
-স্যার, এই মহাকাশযানটি আজকেও অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন?
রিচার্ড তার এসিস্টেন্ট জন ক্লেভার্ডের কথা শুনে স্ক্রীনের দিকে ভালো করে তাকালেন আর দেখলেন সত্যিই অন্যদিনের মত আজকেও এটি অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। তাদের ফ্লাইং সসারটি ওটার নিকটে কিছুতেই যেতে পারছে না। তিনি খুব উদ্বিগ্ন কণ্ঠে তার এসিস্টেন্টকে বলল
-আমাদের সবটুকু স্পীড বাড়িয়ে দাও। আমাকে দেখতেই হবে এটা কোথায় যায়। এর মূল রহস্য খুজে বের করা লাগবে জলদি কর।
-স্যার আমরা আমাদের পুরোটা স্পীড দিয়ে চেষ্টা করছি এর উপর আমাদের ফ্লাইং সসারটির স্পীড নেই।
স্টিফেন রিচার্ড আবারো হতাশ হলেন তিনি দেখলো চোখের সামনে দিয়েই ঐ ফ্লাইং সসারটি অদৃশ্য হয়ে গেল। তিনি কিছুক্ষন কি যেন ভাবলেন আর তার এসিস্টেন্টকে বলল তাদের যানটিকে মহাকাশ স্টেশনে ল্যান্ড করাতে।

স্টিফেন রিচার্ড মহাকাশ গবেষনা সংস্থা নাসাতে অনেকদিন থেকেই ভিন্নগ্রহের প্রাণীর বা পৃথিবীর বাহিরে প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধ্যানী দশ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি টিমের প্রধান হিসেবে কাজ করছে। নাসা হল ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্সস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। যেটা সংক্ষিপ্ত ভাবে নাসা নামে পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাইক গ্রিফিন ১৯৫৮ সালের ২৯শে জুলাই এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার সদর দফতর ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত। তারপর থেকেই এই সংস্থাটি পৃথিবীর বাহিরে অজানা সব তথ্যের সন্ধ্যানে কাজ করে যাচ্ছে। মার্কিন মহাকাশ যাত্রায় এই প্রতিষ্ঠানটির ভুমিকা অন্যতম। স্টিফেন রিচার্ড এর আগে বেশ কয়েকটি বিষয়ে গবেষণা করে সফল হয়েছে। এবার তিনি পৃথিবী বা পৃথিবীর বাহিরে এলিয়েনদের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তা নিয়ে গবেষনা করছেন। আর তার সহকারী হিসেবে রয়েছে দশজন সদস্যবিশিষ্ট্য একটি টিম।
'
স্টিফেন রিচার্ড আজকের বিষয়টা নিয়ে খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন। তিনি ভেবেই পাচ্ছেন না এটা কি হতে পারে। বেশ কয়েকমাস থেকেই এমন অদ্ভুত জিনিস তিনি তার স্যাটেলাইট ক্যামেরার মাধ্যমে মহাকাশে চলাচল করতে দেখন। বিষয়টা আগে তিনি এতটা গভীরভাবে আমলে না নিলেও আজকে এমন ঘটনার পর কিছুতেই স্থির থাকতে পারছে না। তিনি তার পুরো টিম নিয়ে ল্যাবরেটরিতে গবেষনা করতে বসলেন। তিনি সবাইকে ক্যামেরায় ধারণকৃত সেই ফ্লাইং সসারটির ছবিগুলো দেখালেন। সকল তথ্যগুলো দেখার পর তার পাশাপাশি বিষয়টা নিয়ে সবাই গবেষনা শুরু করল। তিনি বললেন "আমার মনে হয় এই ফ্লাইং সসারগুলো মানুষের তৈরি কোন সাধারন মহাকাশযান নয় এদের স্পীড মাত্রাতিরিক্ত বেশি এবং অনেক শক্তিসম্পন্ন। যেটা আমদের তৈরি মহাকাশযানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। তাহলে এই যানগুলো কে পরিচালনা করে? এর পেছনে রহস্য কি?"
স্টিফেন রিচার্ডের কথাগুলো শুনার পর সবাই তার সাথে একমত হল এবং এই বিষয়টা নিয়ে জরুরিভিত্তিতে গবেষনা করার জন্য ইচ্ছে পেষন করল।
'
২১৮০ সালের ২৮শে নভেম্বর। দিনটা ছিল বৃহস্পতিবার। রিচার্ড তার ল্যাবরেটরিতে বসে ভিন্নগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েনদের সম্পর্কে লেখা পুরাতন কিছু ফাইলপত্র দেখছিলেন। তিনি সেগুলো থেকে অনেক অজানা তথ্য বা পৃথিবীর বাহিরে প্রাণীর অস্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলেন। তার আগে অনেক বিজ্ঞানী এই বিষয়টা নিয়ে শ্রম দিয়ে গেছে। তারা এই বিষয়ে কোন তথ্য বের করতে না পারলেও অনেক রহস্যময় ধারনা দিয়ে গেছে। তিনি সেগুলোই দেখছিল। হঠাৎ তার এসিস্টেন্ট জন ক্লেভার্ড বার্তা পাঠাল সেদিনের ফ্লাইং সসারগুলো আবারও স্যাটেলাইট ক্যামেরায় দেখা গেছে এবং এগুলো আকাশে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। রিচার্ড আর একমুহুর্ত দেরি করল না। তিনি তার পুরো টিম নিয়ে সেখানে পৌঁছে গেলেন এবং সেই ফ্লাইং সসারগুলোর পিছু নিলেন। তিনি একটা বিষয় লক্ষ্য করলেন যে আজকে বেশ কয়েকটা সসার দেখা যাচ্ছে। তিনি দুইজনের টিম করে পাঁচটি ফ্লাইং সসারের মধ্যে তার পুরো টিমটাকে বিভক্ত করে দিলেন। এবং সবাইকে নিয়ে ফ্লাইং সসারগুলোর পিছু পিছু এগুতে লাগলেন। তিনি আরেকটা বিষয় দেখত পেলেন আজকে ফ্লাইং সসারগুলো অন্যদিনের মত দ্রুত গতিতে চলছে না। সবগুলো এমন ভাবে চলাচল করছে যেন কিছু খোজে বেড়াচ্ছে।
এভাবে আরো কিছুটা সময় অতিবাহিত হয়ে গেল। কিন্তু তিনি নাছোড়বান্দা। কিছুতেই এগুলো ছেড়ে যাবেন না। এর বিষয় কিছু একটা হলেও আজকে তার জানতে হবে। যে করেই হোক। কারণ সুজোগ বার বার হাতে আসে না। স্টিফেন রিচার্ড দেখতে পেলেন ফ্লাইং সসারগুলো একটা গ্রহের কাছাকাছি চলে এসেছে এবং সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি তা দেখে খুব উত্তেজনা অনুভব করলেন এই ভেবে যে তার এতদিনের পরিশ্রমের বিনিময়ে আজকে একটা কিছুর রহস্য আবিষ্কার করতে পারবেন। তিনি আবারও তার টিমকে সতর্ক করে দিলেন যেন সবাই খুব সাবধানে কাজটা করে।

You've reached the end of published parts.

⏰ Last updated: Aug 19, 2021 ⏰

Add this story to your Library to get notified about new parts!

সাইন্স ফিকশন Where stories live. Discover now