রিমির সাথে অয়োজন করে দেখা করার কারণ, অামার ফ্রেন্ড সার্কেল!ইউনিভার্সিটির বন্ধু অার অফিস কলিগ।ওদের জন্যই ঘটা করে রিমিদের বাড়িতে পার্টি।অাংটি মা অাগেই পড়িয়ে গেছেন।এখন শুধু বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া।
মা যেদিন রিমিকে পছন্দ করে অাসলেন, বললেন,
-- হীরে কাটতে যেমন হীরে লাগে, রিমির রূপের সাথে তুলনা করবার জন্য সেরকম অারেকটা রিমিই লাগবে।
অামার মা বরাবরই সব বাড়িয়ে বলেন। অামি ব্যাপারটা হালকাভাবে নিলাম।কিন্তু পার্টিতে এসে রিমিকে দেখে অামি হতভম্ব।বাচ্চা একটা মেয়ে, বেগুণী শাড়ি পরনে, এক হাতে চুড়ি, একপাশে চুল বেণী করা, চোখের কাজল হালকা একটু লেপ্টানো।তারপরও তাঁকে যেনো অদ্ভূত সুন্দরী দেখাচ্ছিলো।অগোছালো কুচির শাড়ি পড়া রিমির অাঁচল ফ্লোর অবধি লেপ্টে যাচ্ছিলো।অাশ্চর্য মেয়ে!!নিজের অাঁচলের খেয়াল পর্যন্ত রাখেনি।
রিমি ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে তখন।ও'র বাবা একটা প্রাইভেট ব্যাংকে ডিজিএম।মা কলেজে পড়ান।এত হাই এডুকেটেড একটা ফ্যামিলির মেয়ে পড়াশোনা শেষ হবার অাগেই বিয়ে কেনো?? তাঁর উত্তরে তারা মাকে বলেছিলো, মেয়ে বেশি সুন্দরী, তাছাড়া রিমির ভাই ছিলোনা।মেয়ে তো বিয়ের পরও পড়াশোনা করতে পারবে।মেয়েকে ট্যাকল করতেই এই অার্লি মেরেজ।
--তাই বলে এত হুট করে??
--হুট করে কই??
--১৮ তো হয়েছেই।
মায়ের যুক্তিতে অামি মনে মনে হাসলাম।অামি সাদামাটা ছেলে, সারাজীবন পড়াশোনায় ডুবে থেকেছি।চাকরি হবার পর কাজে
বুদ হয়ে থেকেছি, হাই সোশ্যাল লাইফ মেইনটেইনে স্ট্রিক্ট থেকেছি।মেয়েদের সংস্পর্শ ছিলো না ই প্রায়।সেইজীবনে রিমির মত চমৎকার মেয়ে বৌ হবে ভাবতেই পারিনি।সেদিন পার্টি থেকে এসেই অামি রিমিকে এক ডজন শাড়ি কিনে পাঠালাম।সাথে চিরকুটে লিখে দিলাম,
"যে মেয়েটাকে শাড়ি পড়লে পৃথিবীতে পরী নেমে এসেছে মনে হয়, এই শাড়িগুলো তাঁর জন্য!"রিমি নিজে থেকে ফোন করে অামার সাথে দেখা করতে চাইলো।অামি অামার সবটুকু সাধ্যে নিজেকে পরিপাটি করে, দেখা করলাম।রিমি অামার দেয়া'ই একটা শাড়ি পড়ে অাসলো।
অামি কি না কি অর্ডার করবো, তা নিয়ে অস্থির ছিলাম।
এর মাঝে রিমি ফুপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো।
----অামি অাপনাকে ঠকাতে পারবো না।অামার একটা রিলেশনশিপ অাছে, ক্লাস নাইন থেকে।অামার প্ল্যান ছিলো, অামি বিয়ের দিনই পালিয়ে যাবো। গেলে অাপনার মান যাবে, অামার তো কিছু নয়।কিন্তু অাপনি এত ভালো,তাই সত্যিটা বলতে এসেছি।
অামি হতভম্ব!!
--তা তো অাংটি পড়ানোর অাগেই বলতে পারতে।ডেট ফিক্স হয়ে গেছে, সমস্ত অাত্মীয়রা জেনে গেছে!!
রিমি একটানা কেঁদেই গেলো! অামি ওকে সান্তনা দিতে মাথায় হাত রাখতেই, এক ঝটকায় ও অামার হাত সরিয়ে দিলো।
---ও দেখছে!!
অামি অাড়চোখে চারপাশে তাকালাম।দু টেবিল পরেই ছেলেটা বসেছিলো।
--রিমি, তুমিও কি তাঁকে খুব বেশি ভালোবাসো??
রিমি মাথা নাড়লো!
অামি অসহায়ের মত দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।অামার পৃথিবী ভেংগে গেলো।
YOU ARE READING
রিমি ও আমার গল্প
Romanceমা যেদিন রিমিকে পছন্দ করে অাসলেন, বললেন, -- হীরে কাটতে যেমন হীরে লাগে, রিমির রূপের সাথে তুলনা করবার জন্য সেরকম অারেকটা রিমিই লাগবে। অামার মা বরাবরই সব বাড়িয়ে বলেন। অামি ব্যাপারটা হালকাভাবে নিলাম।