পর্ব ০

755 20 0
                                    

  রুশাকে অামি প্রথম দেখি পলাশের রিসেপশানে।পলাশ অামার ইউনিভার্সিটির বন্ধু।
রিসিপশানের প্রায় শেষদিকে অামি বসার জন্য নিরিবিলি জায়গা খুঁজছি, তখনি চোখে পড়লো,
রুশা, এক কোণায় বিরক্ত এবং চিন্তিত মুখে বসে অাছে।
মনে হচ্ছে পুরো রিসেপশানের সবার উপরে সে বিরক্ত!
মুখ কুচকে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।
চোখের কাজল লেপ্টে একাকার।উজ্জ্বল
শ্যামলা ধরনের মেয়ে, নিচের দিককার ঠোটের লিপস্টিক মিটে গেছে, বড় বড় কৌতুহলী চোখ, কাধ অবধি নেমে অাসা চুলের বেশির ভাগটাই কালার করা, মেরুন কালারের শাড়ির সাথে একগাদা গহনা পড়ে অাছে।মুখটা যেনো সবার থেকে অালাদা।সহজেই মনে রাখা যায়।
অামি একদৃষ্টিতে অনেক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম।মেয়েটা একটু পর পর হাঁচি দিচ্ছে।
এত হাঁচি দিচ্ছে কেনো কে জানে! অামার তাকিয়ে থাকার
ব্যাপারটা বুঝতে পেড়ে রুশা বসা থেকে উঠে গেলো।
অামিও তাঁকে ফলো করতে থাকলাম। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে রুশা নিজে থেকেই কথা বলল,
---ভাইয়া, কিছু বলবেন??
অামি ঠাট্টার সুরে বললাম,
--- কিছু বলবো না খুকুমণি, তুমি হাঁচি দিচ্ছো দেখতে ভালো লাগছে।তাই ফলো করছি।
রুশা বিব্রত ভঙ্গিতে বললো,
---ইয়ে মানে।মাটনে অামার এক্সট্রিম এলার্জি।ওরা ফোর্স করে খাওয়ালো।এখন এই অবস্থা! এনিথিং এলস??
রুশা অাবার হাঁচলো।মেয়েটার নাক টাক লাল হয়ে গেছে..
অামি ঠাট্টার সুরে বললাম,
--- খুকুমণি, কাঁধের কাছে তোমার থার্ড পেপার বেড়িয়ে অাছে।
রুশা অামার কথা বুঝতে পারলো না।
ঝাঁঝালো গলায় বললো,
---কি বেড়িয়ে অাছে?? কি??
---থার্ডপেপার।পিংক কালারের ফিতা দেখা যাচ্ছে!
রুশা লজ্জা পেয়ে ; অাঁচল টেনে দ্রুত অামার সামনে থেকে পালিয়ে গেলো।
অামি হেসে ফেললাম।
ব্যস এটুকু পর্যন্ত হলেই চলতো।কিন্তু তা-না; সারারাত, অামার ঘুম হলো না। মাথা ঝিমঝিম করলো।
ব্রেন স্বাভাবিক কাজ করা ভুলে গেলো।
জীবনে প্রথমবার কোনো মেয়েকে দেখে অামার হৃদয় অস্থির হয়ে গেলো।সকালে শেভ করতে গিয়ে গাল কেঁটে ফেললাম। অফিসে চলে গেলাম উল্টো শার্ট পড়ে।ঘড়ি বাসায় ফেলে গেলাম।
রুশার খোঁজখবর নেয়া অামি, তখনই শুরু করি।খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, রুশা নিউইয়র্কে এফ অাই টিতে ডিজাইন নিয়ে পড়ছে।পলাশের কাজিন, 25ডেইজের জন্য দেশে এসেছে।
রুশার বাবা, প্রাইমারি এডুকেশনে এডিশনাল সেক্রেটারি হিসেবে অাছেন, মা একটা প্রাইভেট ইউনিভসির্টির টিচার।
অামার গলা শুকিয়ে গেলো।এরকম মেয়ে অামার জন্য নয়।এরা হলো যত্ন করা একুরিয়ামের মাছ।এদের শুধু কাঁচের বাইরে থেকেই দেখা যায়।পুকুরে এনে এদের পোষা যায়না।রুশা সাধারণ কোনো স্বপ্নের নাম নয়।রুশা এক হাইলি এক্সপেনসিভ প্রজেক্ট।
এদিকে অামার অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে লাগলো।মন কিছুতেই বুঝতে চাইলো না।বাধ্য হয়ে পলাশকে বললাম,
পলাশ বলল,
---তুই রুশার সাথে সরাসরি কথা বলে দেখ!
পলাশ অামাকে রুশাদের বাসায় নিয়ে গেলো, গিয়ে দেখি রুশা লম্বা হয়ে সোফায় শুযে অাছে।স্লিভলেস টিশার্টের সাথে, থ্রি কোয়ার্টার জিন্স পরনে।ধবধবে ফর্সা পা দেখা যাচ্ছে।
গলায় সবুজ মাফলার পেঁচানো।গালের উপর ওয়াটার ব্যাগ ধরে অাছে।মেয়েটাকে বিয়ের অনুষ্ঠানে ভারী মেকঅাপের জন্য শ্যামলা মনে হয়েছিলো, অাসলে মেয়েটি কোমল ফর্সা।প্রথমবার দেখে যত সুন্দরী মনে হয়েছিলো, এবার তাঁর থেকেও বেশি মিষ্টি দেখাচ্ছে।
এবং অাশ্চর্যের ব্যাপার মেয়েটির চোখ দুটি কাজল ছাড়া অারো সুন্দর!!
অামার হার্টবিট বেড়ে গেলো।ঘামতে লাগলাম অামি।
রুশা অামাকে দেখে দ্রুত ভেতরে চলে গেলো...ফিরে এলো গায়ে একটি চাদর পেঁচিয়ে.....  

বিশেষ কিছুWhere stories live. Discover now