#সম্পর্কের_টান
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব-২একসাথে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করার পর তৃষ্ণা এগুলো ড্রেসিং টেবিলের দিকে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে একবার দেখে নিল সে। মাহসানদের বাড়ি থেকে দেওয়া স্টোনের বড় নাকফুলটা তার সৌন্দর্য যেন বাড়িয়ে দিয়েছে শতগুণ। নিজেই নিজেকে আয়নায় দেখে মুচকি হাসলো তৃষ্ণা। তারপর বিছানায় বসা মাহসানের দিকে তাকিয়ে বললো,
-"আপনার ড্রেসিং টেবিলে তো তেল চোখে পড়ছে না। তেল মানে মাথায় দেবার তেল। কোথায় রেখেছেন?"
-"আমার ড্রেসিং টেবিলে তুমি কোন আশায় তেল খুঁজছো? আমি মাথায় তেল দেবো বলে তোমার মনে হয়?"
মাহসানের উত্তরে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল তৃষ্ণা। আসলেই তো! ছেলেরা মাথায় কখনো তেল দেয় নাকি! তার নিজের ভাইই তো জীবনে তেলের ত মাথায় দিয়েছে কিনা সন্দেহ! নিজের এমন অদ্ভুত প্রশ্নে নিজেই কিছুটা অবাক হলো তৃষ্ণা। আমতাআমতা করে জবাব দিল,
-"না,, মানে আমি ভেবেছি হয়তো আমার জিনিশ গুলো এই ঘরেই পাবো।"
-"সেটা তো পাবেই। তবে নিজে সেগুলো ঠিকঠাক ভাবে গুছিয়ে নেবার পর। তুমি দেখছি অনেক চুপচাপ, আনাড়ি। জড়তাও আছে অনেক। মনে হচ্ছে আমারই সব কিছু শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে হবে।"
-"হু।"
-"বিয়ের ডালার ভেতরে তেলও দেয়া আছে। আমি নিজেই অবশ্য সাথে থেকে নিজের বিয়ের শপিং করেছিলাম। যাই হোক এখন কি মাথায় তেল দেবে?"
-"হু। জট গুলো ছাড়াতে তেল লাগবে।"
আর কথা না বাড়িয়ে নিজেই বিছানা ছেড়ে উঠে তেল বের করে এনে তৃষ্ণার পাশে দাঁড়িয়ে বললো,
-"বসে পড়ো টুলটায়।"
চুপচাপ বসে পড়লো তৃষ্ণা। অপরদিকে মাহসান লেগে পড়লো জট ছাড়ানোর মিশনে। দীর্ঘ এক ঘন্টা চুল আর জটের সাথে লড়ে অবশেষে সফল হলো সে। বিশ্বজয়ের হাসি ঠোঁটে ফুটিয়ে সে বললো,
-"কি!! পাড়লাম তো?"
আয়নায় দেখা মাহসানের ওই হাসি তৃষ্ণার বুকে গিয়ে ফুটলো তীরের মতো। তার সামনে দাঁড়ানো এই সুপুরুষই কি আজ থেকে সারাটা জীবনের জন্য তার? হুম, তার। শুধুই তার। যার হাসির দিকে তাকিয়েই তৃষ্ণা কাটিয়ে দিতে পারবে বছরের পর বছর অনায়াসে।সারাদিনের ঝইঝামেলা শেষে ক্লান্তিমাখা শরীরটা তৃষ্ণা মেলে দিল বিছানায়। একপাশে জড়সড় হয়ে শুয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো মাহসানের জন্য।
-"শুয়ে পড়েছো?"
মাহসানের গলার আওয়াজ পেয়ে হুড়মুড়িয়ে শোয়া থেকে উঠে বসলো তৃষ্ণা। আতংকিত গলায় বললো,
-"হু।"
-"উঠলে কেন? শুয়ে থাকো।"
-"হু,, আপনার হাত থেকে তেলের স্মেল গিয়েছে?"
নাক শিটকে মাহসান বললো,
-"উহু!! কেমন যেন মনে হচ্ছে আছেই।"
-"এটা আপনার মনের ভুল। মন থেকে তেল শব্দটা সরিয়ে ফেলুন। তখন দেখবেন আর স্মেলও পাবেন না।"
-"হতে পারে। শুয়ে পড়ো তুমি।"
বলতে বলতেই ঘরের আলো নিভিয়ে বিছানার বাম পাশে এসে শুয়ে পড়লো মাহসান।
কিছু সময় সেভাবেই চুপচাপ বসে থাকার পর তৃষ্ণা বললো,
-"কিছুক্ষণ আগেই তো আমাকে আপনি বলে সম্বোধন করছিলেন। আবার দেখছি এখন তুমি করে বলছেন।"
একপাশ হয়ে তৃষ্ণার দিকে ফিরে মাহসান বললো,
-"আবার আপনি বলে সম্বোধন করলে একটা চুমু খেতে দেবে আমায়?"
ঢোক গিলে তৃষ্ণা বললো,
-"সেটা বলি নি।"
-"তাহলে কি বলেছো?"
-"কিছু ন.."
কথা শেষ করার আগেই তৃষ্ণার হাত টেনে বিছানায় শুয়িয়ে দিল মাহসান। তারপর নিজের ভর টাও ছেড়ে দিল তৃষ্ণার শরীরের উপর।
পুরো শরীরজুড়ে একটি ঘোড় কাজ করতে লাগলো তৃষ্ণার। পরম আবেশে চোখ দুটো বন্ধ করে মাহসানের নিশ্বাসের মাঝে ডুবে গেলো সে।
মাহসান তার ঠোঁটজোড়া ডুবিয়ে দিল তৃষ্ণার গলায়। শতশত চুমোয় ভরিয়ে দিতে লাগলো তৃষ্ণার গলা, কাঁধজুড়ে। ধীরেধীরে উপরে উঠে আসতে লাগলো মাহসানের ঠোঁট। অপরদিকে তৃষ্ণার নিশ্বাস ধীরেধীরে ভারী হতে শুরু করেছে বুঝতে পেরে তৃষ্ণার নাকের সাথে নাক ঘষতে ঘষতে মাহসান ডাকলো তৃষ্ণাকে।
তখনো চোখ টা বন্ধ করে মাহসানের আদর উপভোগ করছিল তৃষ্ণা। মাহসানের এক একটা স্পর্শে এক অদ্ভুত অনুভূতির জন্ম দিতে শুরু করেছে তার শরীরজুড়ে। হার্টবিট যে কতোতে উঠে এসেছে সেটা অজানা। বুকের ভেতর থেকে শুধু ধরাম ধরাম হাতুড়ি পেটানোর আওয়াজ ভেসে আসছে তার কানে। মাহসানের ঠোঁটের একেকটা চুমোয় এক অজানা ভালোলাগা কাজ করছে তার মাঝে, শিহরিত করে তুলছে তাকে। মাহসানের কাছে আসায় এতোটা ভালোলাগা কাজ করবে জানলে কখনওই এতোটা সময় এভাবে খেজুরে আলাপ জুড়ে নষ্ট করতো না সে। ভেবেই মাহসানের গলা দুহাতে জড়িয়ে ধরলো তৃষ্ণা। কাঁপাকাঁপা গলায় বললো,
-"হু।"
-"শুধু নিলেই হবে? দিতে হবে না?"
মাহসানের কথায় ধীরেধীরে চোখ খুললো তৃষ্ণা। মাহসানের চোখের দিকে তাকিয়ে কপালে গভীরভাবে একটি চুমু বসিয়ে দিল সে।
তৃষ্ণার দিক থেকে পজিটিভ সিগনাল পেয়ে আর দেরি করলো না মাহসান। নিমেষের মাঝেই শুষে নিতে শুরু করলো তৃষ্ণার ঠোঁট।
খানিকটা সময় নিয়ে গাঢ়ভাবে চুমু খাবার পর উঠে বসলো মাহসান। নিজের গায়ের টিশার্ট টেনে খুলে হাত বাড়ালো তৃষ্ণার কামিজের দিকে।