অয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের বিশাল বট গাছের তলায় বসে আছে প্রায় এক ঘন্টা ধরে ।
ঝিলামের দেখা এখনো মেলেনি। তাতে অবশ্য অয়নের খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না, চারদিকে কতো সুন্দর সুন্দর মেয়ে দেখতে ভালই লাগে।
অয়নের বয়স আটাশ , দেখতে সুদর্শন, লম্বা পাঁচ ফিট সাত অথবা আট হবে, হালকা পাতলা গরন , গায়ের রং উজ্জ্বল, চোখের মনি কিছুটা খয়েরী, পাতলা ঠোঁট, নাকটা বেশ উচু, চোখে চশমা। যদিও অয়নের চোখে তেমন কোন সমস্যা নেই তবুও চশমা পরার কারন হলো সে জানে যে চশমাতে তাকে বেশি ভালো দেখা যায়।
চশমাক ফাঁক দিয়ে অয়ন লক্ষ্য করলো হন্তদন্ত হয়ে ঝিলাম তার দিকে এগিয়ে আসছে। ঝিলামের পরনে জিনস আর সাদা রঙের ফতুয়া, চুল গুলো পুরো এলোমেলো পাগলের মতো, দেখতে মোটেও ভালো লাগছে না । মাঝে মাঝে এই মেয়েটাকে এতো সুন্দর লাগে আবার মাঝে মাঝে অতি জঘন্য লাগে, আজকে অতি জঘন্যই লাগছে।
প্রচন্ড বিরক্তিকর চোখে ঝিলাম , অয়নের সামনে এসে দাড়ালো। অয়ন বললো,
কি রে তোকে এমন শাকচুননির মতো দেখাচ্ছে কেন ?
কথা শেষ না হতেই ঝিলাম ঠাশ করে অয়নের গালে একটা চড় বসিয়ে দিল। তাতে অবশ্য অয়নের তেমন ভাবান্তর হলো না, একটা বিদ্রুপ মার্কা হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
মাইর দেয়ার কারন ?
তুই আবারো প্রেম করছিস তাই না?
হা করছি
এইটা কয় নম্বর?
আঠারো কি উনিশ হবে, মনে নেই, এতো মনে থাকে না।
এইবার কতোদিন চালাবি ?
বেশিদিন না , বড়জোর তিনমাস, বেশি পদের না, খালি ঘেনর ঘেনর করে।
দেখ অয়ন, এখনো সময় আছে ভালো হয়ে যা।
ভালো হয়ে গেলে তোর কি লাভ, তুইতো আর আমার সাথে প্রেম করবি না, করবি?
অসম্ভব, মাঝে মাঝে তোকে আমার বন্ধু ভাবতেই ঘৃণা হয় ।
তাতেও অয়নের কোন ভাবান্তর হলো না। একটা সিগারেট ধরায়ে বললো,
চা খাবি ?
না
সবসময় এতো না না করিস কেন ? আমি মানুষটা খারাপ হতে পারি কিন্তু আমি যেই কেনটিনের চা খাই সেই চা অনেক মজা।
ঝিলাম কিছু বললো না কিন্তু অয়নের পিছে পিছে মধুর কেনটিনে ঢুকলো।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সাধারনত কেনটিনে প্রচুর ভির থাকে কিন্তু আজকে কেনটিন একেবারেই ফাঁকা। অয়ন আর ঝিলাম একদম কোনায় একটা টেবিলে গিয়ে বসলো। চায়ের অর্ডার দিতেই ঝিলাম বললো,
" চা খাব না, মিষ্টি খাব।"