part 2

4 0 0
                                    


অয়ন, নন্দিনীকে নিয়ে রমনা পার্কের একটি বেনচিতে বসে আছে। পাশেই একটি দশ / বারো বছরের ছেলে বাদাম বিক্রি করছে ।
নন্দিনী বললো, বাদাম খাব
অয়ন মনে মনে ভাবলো , এই মেয়ের দেখি চাহিদার শেষ নেই, কিছুক্ষন আগে লাঞ্চ  খাওয়ালাম, তারপর চা , এখন আবার বাদাম খেতে চাওয়ার কি হলো ! চোখ মুখ শক্ত করেই ছেলেটার কাছ থেকে বাদাম কিনে নন্দিনীকে দিল।
নন্দিনী বাদাম খেতে খেতে জিজ্ঞেস করলো,
ঝিলামকে নিয়ে তুমি কখনো রমনা পার্কে এসেছো ?
মিথ্যা বলা অয়নের জন্য পানি ভাত তাই সে নির্দিধায় বললো,
" কখনো না"
তাই বুঝি , কিন্তু ঝিলামতো তোমার খুব ভালো বান্ধবী তাই না ?
অয়ন শুধু বললো, হুম
ঝিলামকে কি তুমি অনেক পছন্দ কর ?
হাঁ করি , বান্ধবীকে পছন্দ করবো , এইটাইতো স্বাভাবিক ।
কিন্তু তোমার এই বান্ধবীকে না আমার কাছে রহস্যময়ী মনে হয়।
কেন , ঝিলাম রহস্যময়ী হবার মতো কি করলো ?
শোন , আমি তোমাকে বলি, তোমার বান্ধবী কি কখনো তোমাকে তার হোস্টেলের ঠিকানা দিয়েছে ?
" না "
তোমার অন্য বন্ধুদের সামনে কি কখনো এসেছে , অথবা ওর কোন বন্ধুর সাথে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে ?
অয়ন আবারো বললো, " না "
কখনো কি বলেছে , তোমার প্রেমিকার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দাও ।
না বলে নাই
কখনো চিন্তা করেছো কেন বলে নাই ?
দেখ নন্দিনী, ঝিলামকে আমি দুই বছর ধরে চিনি , ওর মধ্যে এমন কোন রহস্য পাইনি যেই কারনে আমাকে চিন্তা করতে হবে , দয়া করে তুমিও ওকে নিয়ে উল্টা পাল্টা চিন্তা করা থেকে বিরত থাক।
একটু চুপ থেকে অয়ন বললো,
তাছাড়া এই পৃথিবীর সব মানুষের মাঝেই কিছু না কিছু রহস্য লুকিয়ে থাকে, আমার মধ্যে যে রহস্য আছে তা জানতে পারলে তুমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে যাবে ।
নন্দিনী , অয়নের কথার কোন গুরুত্ব না দিয়েই বলতে লাগলো ,
ঝিলাম কি কখনো তোমাকে প্রেম নিবেদন করেছে ?
অয়ন বিরক্ত চোখে নন্দিনীর দিকে তাকিয়ে বললো, করে নাই।
যদি করতো তাহলে নিশ্চয় তুমি তার সাথেই প্রেম করতা , তাই না ?
অয়ন তার কোন জবাব দিল না , ভুরু কুচকিয়ে বললো,
সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে নন্দিনী, বাড়ি যাও।

নন্দিনী মেয়েটা চলে যাওয়ার পরও অয়ন অনেকটা সময় পার্কের বেনচিতে বসেছিল । যদিও নন্দিনীর কথার গুরুত্ব দেয়ার কোন মানেই হয় না তবুও অয়নকে একটু চিন্তিত মনে হলো।
আকাশ ঘন কালো হয়ে আসছে , মনে হচ্ছে ঝুম বৃষ্টি হবে , দু এক ফোটা পড়া শুরু করেছে । অয়ন দ্রুত হেটে বাসার দিকে রওয়ানা দিল। সে একদম বৃষ্টিতে ভিজতে পারে না, ভিজলেই ঠান্ডা লেগে যায়। তবে ঝিলামের বৃষ্টি খুব পছন্দ ।
একবার তারা গিয়েছিল মাওয়া ঘাটে, পদ্মার ইলিশ খেতে। পদ্মার ইলিশ খেতে যেই মূল্য দিয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি মূল্য দিতে হয়েছিল বৃষ্টিতে ভিজে। সে কি বৃষ্টি, রাস্তা ঘাট সব পানিতে ডুবে একাকার । বার বার মানা করার পরও ঝিলাম নেমে গেল ভিজতে। কি আনন্দ মেয়েটির চোখে মুখে, একদম হিন্দি সিনেমার নায়িকাদের মতো হাত আকাশের দিকে বাড়িয়ে ভিজতে থাকলো মেয়েটা। অয়ন তার এই তামাশা বেশ কিছুক্ষন উপভোগ করলো , তারপর বললো,
অনেক হয়েছে ঝিলাম , এইবার চল , রাস্তায় পানি জমে যাচ্ছে, পরে বাসায় যেতে ঝামেলা হয়ে যাবে।
তোমার সমস্যা মনে হলে তুমি যাও, আমি আরও ভিজবো। আমি একলা চলতে জানি।
নিরূপায় হয়ে অয়ন ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে ঝিলামকে মোটামোটি জোরপূর্বক একটি সি এন জিতে উঠিয়ে রওয়ানা দিল।
ওই রাতেই অয়নের ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা জ্বর  হয়ে পুরো তিনদিন বিছানায় পরে রইলো।




You've reached the end of published parts.

⏰ Last updated: Jun 26, 2023 ⏰

Add this story to your Library to get notified about new parts!

আমি  কে ?Where stories live. Discover now