পর্বঃ এক
✍️ রাহিন ইসলামআজ ঈশিতার গায়ে হলুদ সন্ধ্যা..
চারিদিকে বাচ্চাকাচ্চাদের ছুটাছুটি, ঝিনুক বাতির আলোয় পুরো ঘর বাহির আলোকিত, উৎসব মুখর
পরিবেশ..,
হই-হুল্লোড়ের মধ্যে ঈশিতা অপেক্ষা করছে কেউ একজনের জন্য..
বন্ধু বান্ধবী সবার মাঝে থেকেও বার বার মেইন গেইটের দিকে আঁড়চোখে তাকাচ্ছে সে, একে একে সব দূরের কাছের মেহমান চলে আসছে,
তাঁর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটাও যে আসার কথা..
উফ আসছে কেন মেয়েটা?
কতক্ষণ ধরে আর অপেক্ষা করবো..?
কখন যে হবে মেয়েটার কাণ্ডজ্ঞান'
নিজের মনে বকবক করতে থাকে ঈশিতা।
রবি কি একটা রসিকতা করেছে, সেইটা শুনে সবাই হু হু করে হেঁসে উঠে, এক একজন এক একজনের গায়ের উপর ঢলে পড়ছে..
রবি ঈশিতার বন্ধু,
সেই স্কুল লাইফ থেকে তাঁদের বন্ধুত্ব।
বন্ধুদের আড্ডায় কে যেন এসে চা দিয়ে গেলো।ঈশিতার মাথায় আপাততঃ কিছু ঢুকছে না,
সে অপেক্ষা করছে তার ওয়ান অনলি প্রাণের জিগার মিতুর জন্য...
মিতু তার খালাতো বোন!
বড় খালার শেষ বয়সে এসে এই মিতু শাকচুন্নির জন্ম হয়, এই মেয়েকে প্রথম দেখাতেই মানুষ চিন্তা করে আল্লাহর সৃষ্টি এত সুন্দর কি করে হয়?
প্রচন্ড রূপবতী মানুষের সামনে মানুষ কেন যেন নার্ভাস হয়ে যায়.. তেমনি মিতুর সামনে বেশিরভাগ মানুষ নার্ভাস ফিল করে।
অনেক সাধনার ফলে বড় খালামণি এই অসাধারণ রূপবতী রাজকন্যাটি পেয়েছেন..
আর তার রূপের সাথে সাথে অসম্ভব সুন্দর মানবীয় গুণাবলি সম্বলিত এই মেয়েটি ঈশিতার নয়নের মণি..।মেইন গেইট দিয়ে একটা গাড়ি ঢুকতে দেখে ঈশিতা অসম্ভব খুশি হয় যায়, মিতুরা চলে এসেছে..
পারিবারিক কোন অনুষ্ঠান এই মিতুকে ছাড়া পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে না, আসর জমিয়ে রাখতে উস্তাদ মিতু।
রবি... দেখ ঈশিতা তুর জানের জিগার চলে আসছে।
এবার তো একটু হাসিখুশি থাক!
ঈশিতা গিয়ে গাড়ির পাশে দাঁড়ায়, বড় খালামণিকে সালাম করে জড়িয়ে ধরে, আমার বড়খালামণিটা গুলোমুলো হয়ে গেছে 😊।
মিতু নেমে আসে,
হেই বিয়ের কন্যা কি অবস্থা?
কেমন চলছে?
এই শাঁকচুন্নি একটা কথা বলবি না আর,
কতক্ষণ লাগে তুর হ্যাঁ?
কবে থেকে অপেক্ষা করছি,
কোন খুঁজ খবর নাই..
এখন আইছে খবর নিতে🙄।
আরে বাবা রাগ করিস ক্যান, রাস্তায় কি পরিমাণ জ্যাম জানিস? মন চাইছে গাড়ির পাশে দুইটা পাখা লাগিয়ে উড়ে উড়ে চলে আসতে।
সব গাড়ির সাইড়ে পাখার ব্যবস্থা থাকলে মন্দ হতো না কি বলিস ঈশিতা 😉
তখন তুর মতো ঘাউরা বোনের ভনভনানি শুনতে হইতো না..
কি বললি?
আমি ঘাউরা?
তুই ঘাউরা, তুর ঘর ঘাউরা, তুর পাড়া ঘাউরা, তুর পুরা চট্টগ্রাম ঘাউরা নাহ চট্টগ্রাম না.. চট্টগ্রামে তো আমিও থাকি..☹️
হইসে পুরো চট্টগ্রাম মাথায় তুলে নেবার দরকার নাই বাসায় চল..
আমাকে দেখলেই ঝগড়া শুরু করে দিতে হয় তাঁর। আজ বাদে কাল অন্যের ঘরে চলে যাবে তবুও মুখের জোর কমে না..
ঝগড়ার জন্য মুখিয়ে থাকে।
কাল থেকে বরের সাথে করিস,
আমার দুলাভাইটার কপাল খারাপ তুর মতো ঘাউরা বউ পাচ্ছে, বেচারার জন্য মায়া হচ্ছে আমার...!
খুনসুটি করতে করতে বাসায় চলে আসে ঈশিতা, মিতু, বড় খালামণি সহ.।
ঈশিতার সবগুলো বন্ধুই মিতুর বন্ধু,
সবাই মিতুকে চিনে।
সবাই হই হই রই রই করে ছুটে আসে মিতুর দিকে।
আসরের মধ্য মণি চলে এসেছে..!
ঈশিতার আম্মু এসে মিতুকে জড়িয়ে ধরে, অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের সাথে সালাম বিনিময় করে মিতু ঈশিতার বন্ধুদের সাথে বসে গল্প জুড়ে দেয়।একটু দূরে একটা চেয়ারে লাজুক চেহেরার অসম্ভব মায়াবতী একটা মেয়ে একা একা বসে আছে, বিষন্নতা যেন ঘিরে রেখেছে মেয়েটিকে।
মেরুন রং এর গাউন, ব্লাক ওড়না আর ব্লাক জিন্সে চিপ চিপে গঠনের মেয়েটিকে দেখতে অপূর্ব লাগছে.. কিন্তু সে একা কেন?রবির কি একটা কথা শুনে হাসতে হাসতে মিতুর
হটাৎ চোখ পড়ে মেয়েটির উপর..!
এবং চোখ ফেরাতে পারেনা সে!
মনেহয় পৃথিবীর সমস্ত মায়া দূরে বসে থাকা মেয়েটির উপর সৃষ্টিকর্তা ঢেলে দিয়েছেন।
এ কেমন অচেনা অনুভূতি?
অচেনা অজানা একটা মেয়েকে দেখে বুকের পাঁজরে তিব্র স্রোত বয়ে যাচ্ছে কেন..?
ভ্রু জোড়া খুচকে মিতু মেয়টিকে দেখতেই থাকে.।
(চলবে)
ESTÁS LEYENDO
রজনীগন্ধা 🥀
Ficción históricaভালোবাসা সুন্দর! পৃথিবীর প্রাচীনতম সৌন্দর্য গুলোর অন্যতম সুন্দর ভালোবাসা।