দ্বিতীয় পর্ব

18 0 0
                                    

এরপর আরও আট মাস কেটে গেছে। ঘড়িটাও তারপর থেকে আর কোনও সমস্যা দেয়নি। এতদিনে শম্পার মন থেকে ওই ঘটনার আতঙ্কটা অনেকটাই হালকা হয়ে এসেছে। আজ আমাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী। বাড়িতে এই উপলক্ষ্যে সন্ধ্যে বেলা একটা ছোটখাটো পার্টি রাখা হয়েছে, তাই বাবা-মা আজ বাড়িতে এসেছে। শম্পার মা নেই, ওর বাবার আজ পার্টিতে থাকার কথা। অনেক কাজ বাকি এখনও। রান্নাবান্নার দিকটা মা আর শম্পা দেখছে। আর বাড়ি সাজানোর দিকটা সামলাচ্ছি বাবা আর আমি। শম্পার বাবা এলে তাঁকে নিয়ে আমি বেরিয়ে পড়ব কেকটা আনতে। বেলুন দিয়ে সবকটা ঘর সাজানো হয়ে গেছে। এখন শুধুমাত্র আলোগুলো লাগাতে পারলেই হল।

- "তোমাদের বাড়ি সাজানো কতদূর? আমাদের রান্না কিন্তু প্রায় শেষ। শুধু পায়েসটা বাকি। আচ্ছা, তোমার ব্যাঙ্ক থেকে কতজন বন্ধু আসবে গো?"
- "পনেরো জন কে সপরিবারে নিমন্ত্রণ করেছি। সব মিলিয়ে ধরো পঞ্চাশ-ষাটজন মতো হবে।"
- "বেশ বেশ। তোমরা সাজানো-গোছানো কম্প্লিট করে নাও। আমি আসি, মা একা রান্নাঘরে আছেন।"

বাবা আর আমি মিলে সবে টুনি লাইটগুলো লাগাতে আরম্ভ করেছি, ঠিক তখনই কলিং বেলটা বেজে উঠল। দরজার বাইরে শম্পার বাবা, এক হাঁড়ি মিষ্টি নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন।
- "আরে বাবা, আপনি!" আমিও একগাল হেসে ওনাকে বাড়ির ভিতরে অভ্যর্থনা জানালাম, "ভাল হল আপনি বেশ আগেই এসে পড়লেন, চারটেয় এলে আমাদের বেরোতে বড় দেরি হয়ে যেত। কেক কেনা কিন্তু এখনও বাকি। তা আজ স্কুল তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে গেল বুঝি?"
- "না না, তাড়াতাড়ি কোথায় গো প্রতীক!" শ্বশুর মশাই নিজের হাতঘড়ির ডায়াল আমার চোখের সামনে তুলে ধরলেন, "এখন সোয়া চারটে। আর বোলো না, রাস্তায় যা ট্র্যাফিক!"
- "তবে আমি যে এইমাত্র দেখলাম...."

এক ছুটে বেডরুমে এসে দেখি, যা ভয় পেয়েছিলাম ঠিক তাই। আদ্যিকালের ঘড়িটা আজ আবার দাগা দিয়েছে। কাঁটা তিনটে বেজে সাত মিনিটে স্থির। স্ট্রেঞ্জ! বার-বার একই সময়ে কাঁটা আটকাচ্ছে কেন? অবশ্য তখন আমার এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর জো নেই। হাতে প্রচুর কাজ। সাতটা থেকে সব অতিথিরা আসতে শুরু করবে। তাই বেশি সাত-পাঁচ না ভেবে তড়িঘড়ি আবার কাজে লেগে পড়লাম।

ডাকWhere stories live. Discover now