দীপ ও অঙ্কিতার নতুন বিয়ে হয়েছে। দুজনই দুজনকে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ভালোবাসতো অবশেষে তাদের বিয়ে হয়েছে। তবে দুজনেরই এটা প্রথম বা দ্বিতীয় ভালোবাসা নয়। দীপের এটা তিন নম্বর ও অঙ্কিতার এটা চার নম্বর ভালোবাসা। তাদের এর আগে সম্পর্ক এতদিন গড়ায়নি, বিভিন্ন কারণে সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে। দীপের সম্পর্ক কখনও ভেঙেছে দীপের বেকারত্ব, খামখেয়ালী পনার জন্য কখনও আবার তৃতীয় ব্যক্তির জন্য উল্টো দিকে অঙ্কিতার সম্পর্ক ভেঙেছে ছেলে গুলোর হয় মানসিকতা ঠিক নয়, আবার কখনও তারা বেশি অঙ্কিতার নিজো জীবনে ঢুকছিল এই সব কারনে । দীপ ও অঙ্কিতার সোশ্যাল সাইট এ বন্ধুত্ব হয় তার পর ভালবাসা হয় এবং দুজন দুজনকে খুব ভালোভাবে বোঝে ও তাদের চিন্তাভাবনা অনেকটা একই রকমের।
অবশেষে তারা একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিয়ের পর তারা ২ বেড রুম যুক্ত একটি আবাসনে এ উঠেছে, বিয়ের আগেই তারা দুজন মিলে দেখে এই ফ্ল্যাটটা কিনেছিল। দীপ পেশায় পুলিশ অফিসার এবং অঙ্কিতা পেশায় শিক্ষিকা। বিবাহিত জীবন খুব ভালো কাটছিল, একদম যোগ্য স্বামী পেয়েছিল অঙ্কিতা, উল্টো দিকে দীপ যোগ্য স্ত্রী পেয়েছিল এক কথায় একে অপরের পরিপূরক। বিবাহিত জীবনের ৬ মাস পড়ে অঙ্কিতা গর্ভবতী হল, যখন খবর টা দীপ কে জানাল তখন দীপ পুলিশ স্টেশন থেকে সোজা চলে আসে অঙ্কিতার কাছে, দীপ আনন্দে অঙ্কিতা কে কোলে তুলে নিয়ে গোল গোল করে ঘোরাতে লাগে। এর আগে দীপ শুধু বিয়ের দিন এতো খুশি হয়েছিল । দীপ অঙ্কিতা কে বলে আজ থেকে তোমার সব কাজ বন্ধ সব কাজ হয় কাজের মাসি করবে নয় আমি করব। অঙ্কিতা তখন বললো আচ্ছা ঠিক আছে আমি এখন ঠিক আছি যখন আমি পারবো না তখন আমি নিজে থেকেই বলবো, দীপ বললো না না আজ থেকেই বন্ধ তোমার সব কাজ। কাজের দায়দায়িত্ব এখন থেকে আমার, তুমি শুধু রেস্ট করবে কারণ তুমি সুস্থ থাকলে আমাদের সন্তান সুস্থ থাকবে। তখন অঙ্কিতা বললো তাহলে অপরাধীদের কে ধরবে তুমি সব কাজ করলে, দীপ বললো আমি সামলে নেব ঘর ও থানা। এই ভাবে আরো নয় মাস কেটে গেল, অঙ্কিতার সন্তান প্রসবের দিন কাছে আসছে। সন্তান প্রসবের এক সপ্তাহ আগে একদিন রাতে দীপের ফোনে একটা ফোন আসে থানা থেকে তাকে এখনি থানায় যেতে হবে, থানার ফোনে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায় শহরের একটি নির্দিষ্ট এলকার একটি আবাসনে কয়েকজন সন্ত্রাসী ঘাঁটি গেড়েছে। তাদের কাছে অত্যাধুনিক কিছু হাতিয়ার আছে। যে খবর দিয়েছে সেই ব্যক্তির ছোট ছেলে দূরবীন দিয়ে খেলতে খেলতে দেখছে, তাদের বন্দুক দেখে ওই বাচ্ছা ছেলে টা তার বাবাকে ডেকে বন্দুক দেখিয়ে কিনে দিতে বলে। তখন ওই ব্যক্তির বন্দুক দেখে সন্ধেয় হয়, তার পর ওই ব্যক্তি পুলিসকে জানায়।
সেটা শুনে দীপ অঙ্কিতা কে ঘুমোতে বলে এবং বলে সে ঘন্টা খানিকের মধ্যেই চলে আসবে। অঙ্কিতা প্রথমে দীপ কে যেতে না দিলেও, দীপের বোঝানোর পর তাকে মেনে নিতে হয়। অঙ্কিতা জানে এটা দীপের কতব্য। অঙ্কিতা জানত না কেন থানা থেকে এত রাতে ফোন করেছে। দীপ কারণ টা অঙ্কিতা কে জানায় নি, কারণ দীপ জানে এই কথা বললে অঙ্কিতা যেতে দেবে না আর দিলেও টেনশন এ থাকবে। আর যেটা অঙ্কিতার পক্ষে খারাপ। অবশেষে অঙ্কিতা কে একবার গলা জড়িয়ে দীপ বেরিয়ে গেল থানার দিকে। থানায় গিয়ে দীপ সাথে সাথে ১২ জনের দল গঠন করল, যেটার দায়িত্বে ছিল দীপ নিজেই । সবাই হেলমেট,বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে দুটো গাড়িতে বেড়িয়ে পড়ল ওই সন্ত্রাসবাদীদের জীবিত অথবা মৃত ধরতে। ১০ মিনিটের মধ্যে তারা পৌঁছে গেল সন্ত্রাসবাদীদের আবাসনের এর আগের গলি তে। তারা সেখানে সবাই নেমে গেল কারণ গাড়ি নিয়ে সোজা আবাসনের সামনে গেলে সন্ত্রাসবাদীরা সজাগ হয়ে যাবে। তাই তারা হেঁটে হেঁটে যাবে যাতে সন্ত্রাসবাদীরা বুঝতে না পারে। দীপ ও তার দল যেখানে নেমেছিল সেখান থেকে সন্ত্রাসবাদীদের আবাসনের দূরত্ব ২০০ মিটার।
দীপরা আস্তে আস্তে এগোতে লাগলো - ১৮০ মিটার, ১৫০ মিটার , ১১০ মিটার, ৯০ মিটার যেই ৬০ মিটার এ আসলো সামনের আবাসনের এক তলার ৩টে ও দুই তলার ৩টে জানলা থেকে গুলি চলতে লাগলো।সেই রাতে অঙ্কিতা শুয়ে শুয়ে ভাবছিল তার আর দীপের কাটানো সুন্দর মুহূর্তের কথা, তাদের প্রথম দেখা হওয়ার কথা। ভাবতে ভাবতে কখন তার চোখে চোখ লেগে গিয়েছে বুঝতে পারিনি , আচমকা একটা বাজে স্বপ্নে ঘুমটা ভেঙে গেল অঙ্কিতার, দেওয়াল ঘড়িতে দেখলো ৩.০৫ বাজে।
YOU ARE READING
সমান্তরাল মহাবিশ্বের মায়াজাল
Science Fictionদীপ ও অঙ্কিতা বিয়ে করেছে। তারা সুখে শান্তিতে জীবন কাটাচ্ছিল, অঙ্কিতা বিয়ের পাঁচ মাসের মধ্যে গর্ভবতী হয়, সংসারে নতুন অতিথি আসার আনন্দে দীপ খুব খুশি ছিল। এক মহাবিশ্বের ঘটে যাওয়া ঘটনার স্বপ্ন অঙ্কিতার স্বপ্নে আসে, অন্য কোনো মহাবিশ্বে ঘটে যাওয়া ঘটন...