ত্রয়ীর মন ভালো নেই। মা-বাবার প্রতিদিনকার ঝগড়া ভালো লাগেনা তার। তবু আজ একটু বেশি বেশিই হয়েছে। বাবা রেগে গিয়ে মার গায়ে হাত তুলেছে। এই জিনিসটা তার সবচেয়ে অপছন্দের। বাসায় থাকতে না পেরে শেষমেশ স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো সে। গন্তব্য মানিক মিয়া এভিনিউ। ঢাকা শহরে তার প্রিয় জায়গা গুলোর একটি এটা। মন ভালো না থাকলে মানিক মিয়া এভিনিউ, মন ভালো থাকলে ফার্মগেট ওভারব্রিজ.. এরকম একেক সময়ের জন্য একেক জায়গা আছে তার...ফার্মগেট ফুট ওভার ব্রিজে উঠলে কত রকম মানুষ দেখা যায়...চানাচুর বাদামওয়ালা, ব্যাগ হাতে চাকুরে, বাতি জ্বলা খেলনা বিক্রেতা, ব্রিজের উপর কানা লুলা ফকির সহ আরো নানা কিছিমের মানুষ। যেন মানুষের মেলা...খুব ভালো লাগে তার দেখতে। আর মন ভালো না থাকলে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে রাস্তার পাশে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয় সে। কানে থাকে হেডফোন আর বাজতে থাকে প্লে লিস্টের পছন্দের গানগুলি; যেগুলো শুনলে মন আরো খারাপ হতে থাকে তার..সে নাম দিয়েছে এগুলোকে মন খারাপ করা গান। যখন তার মন চূড়ান্ত খারাপ হয় তখন এক গ্লাস লেবুর সরবত খেয়ে বাসায় চলে যায় সে.। আজো সেরকমই প্ল্যান তার। হঠাৎ মনে হলো পাশ থেকে কে যেন ডাকছে তাকে। তাকিয়ে দেখে ৩০-৩৫ বছরের এক যুবক। উষ্কখুষ্ক চুল, গায়ে ছেঁড়া ময়লা কাপড়, জীর্ণশীর্ণ দেহ কিন্তু চোখে কিশোরের চঞ্চলতা.। তার কাছে কি যেন চাইছে সে। হেডফোন খুলতে বোঝা গেলো হেডফোন কানে লাগিয়ে গান শুনতে চায় সে। রাস্তার পাশের এরকম পাগল টাইপ মানুষের থেকে এরকম আচরণে অবাক হয়েই আইপড বের করে হেডফোন দিলো তাকে গান শুনতে। মুহুর্তেই আইপড কেড়ে নিয়ে পরিচিত হাতে একের পর এক গান পরিবর্তন করতে লাগলো সে..। এ যন্ত্র যেন চিরচেনা তার...। রাস্তার পাশের কোনো পাগলের এই যন্ত্র চালাতে পারার কথা না। ত্রয়ী অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো.....
YOU ARE READING
শেষ বিকেলের কয়েকটি ফুল ও অন্যান্য
Teen Fictionবাড়ি থেকে রাগ করে বের হয়ে আসে ত্রয়ী। পরিচয় হয় চালচুলোহীন এক পাগলের সাথে। এগিয়ে চলে গল্পের কাহিনী.......