পাঠ-৪ ভয়

235 39 10
                                    

ঘুড়ি উড়ানো শেষে বাসায় ফিরছি, প্রচণ্ড দুঃশ্চিন্তা সাথে নিয়ে। কেমন যেন গা ঘিনঘিন করছে অদ্ভুত এক আতংকে। স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছিনা অন্য দিনের মত।

ঘুড়ি ওড়াতে ওড়াতে দড়ি ছিঁড়ে গিয়ে পড়লো একদম নদীর পানিতে। ঘুড়ি ভিজে প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। তবু আরেকটা ঘুড়ি কিনতে পারবো কিনা সেই দুঃশ্চিন্তা নিয়ে সেটা তুলে নিতে পানির দিকে পা বাড়ালাম।

স্রোতহীন নদী বলে অল্প কিছু শাপলা ফুটেছে এখানে সেখানে। একটু বর্ষা এলেই এগুলি আর দেখা যাবেনা কোথাও।

নদীর একটু গভীরে যেতেই পায়ের মধ্যে কি যেন পেঁচিয়ে ধরল। প্রথমে ভাবলাম শাপলার শিকড় কিনা আবার!

হাত দিয়ে ধরে উপড়ে তুলে ধরতে গিয়ে দেখি একটা কাপড়। কাপড়ের সাথে কিছু একটা ভাসছে নীচে। তারপর কাপড় টেনে উপরে উঠিয়ে যা দেখলাম তা আর মুখে বলার মত সাহস এখন আমার নাই।

অনেক কষ্টেসৃষ্টে নিজেকে শান্ত করে রেখেছি। সামান্য তেলাপোকার ভয়ে সারা পৃথিবী তোলপাড় করতাম আগে। এখন এতো বড় ঘটনায় স্বাভাবিক মানুষের মত হাটছি। নিজেকেই মনে হচ্ছে চিনতে পারছিনা।

পটলা ভীষণ ভয় পেয়েছে। ভয়ে রীতিমত কাঁপছে। কাঁদোকাঁদো চেহারায় চোখ বড় বড় করে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।  বোধহয় একটু বেশি সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বাড়ির রাস্তা অনেকদূর। সাধারণত  আমরা শর্টকাটে জংগলের ভিতর দিয়ে আর কয়েকটা জমির আইল পার হয়ে, একটা নদী আর দুটো কবরকে পাশ কাটিয়ে আধা মাইল পেরিয়ে চলে আসি। কিন্তু এই সন্ধ্যার সময় এরকম একটা বিকৃত মৃত দেহ দেখে এসে আমাদের সোজা রাস্তায় যেতেই রক্ত হিম হয়ে আসছে।

চারিদিকে আলো এতো ক্ষীণ যে সবকিছুই ঘোলা দেখছি। পটলা কয়েকবার ঝাঁকুনি দিয়ে একটু কেঁদে উঠে চুপ হয়ে গেলো। তার অবস্থা খুব খারাপ। আমি জানি কেনো।

কারণ পানি থেকে উপরে তুলে দেখি মৃত লোকটা আমার দিকে স্পষ্টভাবে  এক চোখে তাকিয়ে আছে। এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিলো আমার হৃৎপিন্ডটা প্রচন্ড একটা মোচড় দিয়ে বুঝি থেমে গেছে।

সারা মুখ আচঁড়ের দাগে ভরা ক্ষতবিক্ষত  বিভৎস একটা মুখ। মুখের দিকে
আরো ভালো করে তাকাতেই দেখলাম লাশের অন্য চোখটা কেউ নখ দিয়ে উপ্রে ফেলেছে।

 বুলু 🐾  [completed]Nơi câu chuyện tồn tại. Hãy khám phá bây giờ