বছর তিনেক অাগের দিকে।
অামি তখন সিএমসিতে পড়ছি।
ফাইনাল পরীক্ষার মাঝামাঝি এসে অামার ভীষণ জ্বর হয়ে গেলো। বাসায় জানালাম না, বাসায় জানানো মানে বাবা বলবেন, পরীক্ষা কুইট কর! সুতরাং জানানোর প্রশ্নই অাসে না।এর মাঝে বাবা ফোন করে বললেন,
----তোর এক্সাম গ্যাপ অাছেনারে মুন্না??
------হুঁ!
-----তোকে ইমার্জেন্সি দরকার! একদিনের জন্য বাসায় অায়!
অামি স্ট্রেট না বলে দিয়ে ফোন সুইচ অফ করে রাখলাম।বাসায় যাওয়া নিয়ে সমস্যা না। কিন্তু এরকম জ্বর গায়ে বাসায় গেলে বাবা অার পরীক্ষা দিতে দিবেন না।
যেমন তেমন পরীক্ষা হলে কথা ছিলোনা। অামার মেডিকেল কলেজ লাইফের শেষ অর্গানাইজড এক্সাম।
ফোন অফ করেও রক্ষা হলোনা। রাতে বাবা এসে হাজির। সাথে পুলিশ ফোর্স! খবর পেয়ে অামি
নিচে নেমে অাসতেই ব্যস্ত ভঙ্গিতে বাবা বললেন,
------এক্ষুণি রেডী হয়ে গাড়িতে বস, মুন্না! তোকে অামার দুইঘন্টার জন্য দরকার! কাজটা হয়ে গেলেই তোকে পাঠিয়ে দিবো।অামি হতভম্ব।
বাবা যতবারই অামায় হোস্টেল থেকে নিতে অাসেন; একা অাসেন।
এবার
পুলিশের গাড়ি সাথে।অামার নিজেকে কি যে ছোট লাগছিলো তখন।
অামার বাবা
বিভাগীয় কমিশনার মোঃ অাসাদ উদ্দীন ভীষণ হুজুগে এবং রাগী।তার অনেক রাগের প্রতিফলনের একটি হলো,
নিজের একমাত্র ছেলেকে পুলিশ দিয়ে হুমকি ধামকি।এতে যেনো তাঁর দুনিয়ার শান্তি।অামি মোটামোটি নিজের ক্যারিয়ারে যথেষ্ট পরিচিত। ইন্টারমিডিয়েটের পর থেকে গান করছি, নিজের একটা ব্যান্ড অাছে। তাঁর উপর সিএমসিতে এমবিবিএসের সেরা ছাত্র। মন্ত্রী, এসপির মেয়েরা, অামার ফ্যানপেজে দিনরাত কেঁদে মরে, মেয়েদের কাছে অামি অনেক কাঙ্খিত! অার সেখানে অামার কিনা এখনো বাবার কানমলা অার ঝারি খেয়ে দিন যায়!বাবার কাছে অামি কবে বড় হবো??
------কি হলো??? গাড়িতে উঠ??কথা কানে যায় না??
অামি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললাম,
------অামার জ্বর বাবা, এখন জার্নি করলে; বাড়বে অারো। লাস্ট পরীক্ষা টা যদি দিতে না পারি....
----কি বললি?? জ্বর?? এই বয়সে জ্বরকে পাত্তা দিয়ে চলিস তুই!! কি ডাক্তারি পড়িস, জ্বর হলেই কাত! নেক্সট পরীক্ষার বইপত্র নিয়ে গাড়িতে উঠ!
YOU ARE READING
লাভিং জার্নি
Romanceবছর তিনেক অাগের দিকে। অামি তখন সিএমসিতে পড়ছি। ফাইনাল পরীক্ষার মাঝামাঝি এসে অামার ভীষণ জ্বর হয়ে গেলো। বাসায় জানালাম না, বাসায় জানানো মানে বাবা বলবেন, পরীক্ষা কুইট কর! সুতরাং জানানোর প্রশ্নই অাসে না।