বাসায় যেয়ে অামি পুরোদমে সাবিহাকে ইগনোর করতে লাগলাম। সাবিহা বোধহয় ইগনোরের ব্যাপারটা একদম বুঝতে পারলো না। সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই অামার যত্নপাতি করতে লাগলো। এমনকি রাতে
খাবার পরে অামি যে একটা ব্লাক কফি খাই, সেটাও অত্যন্ত যত্ন করে ট্রেতে সাজিয়ে নিয়ে এলো!ঘরে এসে সাবিহা দরজা বন্ধ করে প্রথম যে কথাটা বলল, তাহলো,
------সামনের মাস থেকে অামি পঁচিশ হাজার টাকা করে পাবো।
অামি যদি কিছু টাকা অাপনাকে পাঠাই, তাহলে কেমন হয়?? নাকি একসাথে জমিয়ে দিবো?
অামি জবাব দিলাম না।
-------জানালা খুলে দিই?? বাইরে ভীষণ বাতাস হচ্ছে.....
বলতে বলতে সাবিহা গিয়ে জানালা খুলে অারাম করে দাঁড়ালো!অামি বিমর্ষ গলায় বললাম,
-----অামার একার কফি যে; তুমি খাবেনা??
সাবিহা না সূচক মাথা নেড়ে হাসলো।
বাইরে তাঁকিয়েই বলল, -----অামি অনেক টাকা নিয়ে ফেলেছি অাপনার থেকে। কোথায় যে খরচ করলাম এত টাকা??অাসলে সংসার একটা রাক্ষসের নাম! ফ্যামিলির খাওয়া দাওয়ায় সব শেষ!অামি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।মেয়েটার কাঁধে যেনো রাজ্যের বোঝা....
সাবিহা কেনো এরকম? তাঁর কি অামাকে পছন্দ নয়?? নাকি অামার বাবা সেঁধে বিয়ে করিয়েছেন বলে এত দাম? কি চায় সে??-----অামার রেজাল্ট তেমন ভালো হবে না। অাসলে জবের পাশাপাশি পড়ছি তো।ল্যাব ঠিকমত করতে পারছিনা এজন্য। অাপনি রাগ করবেন না তো??? স্যার, অবশ্য বলেছেন, বিসিএসটা করতেই হবে......
অামি চেষ্টা করছি।কোচিং জয়েন করেছি।সন্ধ্যা সাতটায় ক্লাস করি...অ্যাসাইনমেন্ট করছি....অামি হতাশ হয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। তাঁর পড়াশোনার ফিরিস্তি শুনতে অামি এসেছি??
এই মেয়েকে কাছে পাওয়ার জন্য অামি এমন ছুটে এসেছি। এইজন্য??
অামি হেসে বললাম,
-------তোমার কি অামাকে পছন্দ নয়??? কেন নয়???
সাবিহা পুরো প্রসঙ্গটা বদলে নিয়েই বলল,
------অামি কি অাপনার সাথে এই বিছানায় ঘুমোবো???
অামি অাশ্চর্য হয়ে বললাম, এতে জিজ্ঞেস করার কি অাছে??
------কোন পাশে??? কোন বালিশটা নিবো??? অামার চুল কি বেণী করে নিবো?? নাকি খোলা রাখবো??
অামি হতাশ চোখে সাবিহার দিকে তাঁকিয়ে রইলাম। গাঢ় হলুদ রঙের পিওর কটনের একটা জামার সঙে লতানো ফুলেল কাজের একটা সবুজ জর্জেট ওড়না গায়ে জড়িয়ে। চুলের কয়েকগাছি সাইড সিঁথি করে ছোট্ট পাঞ্চ ক্লিপে অাটকানো।ডানপাশের ঘাড় গড়িয়ে কয়েকগাছি চুল সামনে! কানে সাদা মুক্তোর লম্বা দুল। নাকের উপর ঘামের বিন্দু চকচক করছে ; এত স্নিগ্ধ কি অাসলেই কারো মুখ হয়!? / সাবিহা একমনে মাথা নিঁচু করে তাঁকিয়ে টেবিলে নখ ঘষছে। অামি হালকা গলা ঝারি দিয়ে বললাম,
------তুমি কি অামাকে ভয় পাও??
সাবিহা জবাব দিলোনা।
------স্বামী স্ত্রী হয় বন্ধুর মত! এতে কোনো ভাগাভাগি নেই, অনুমতির বালাই নেই, এখানে কেউ কারো অথরিটি নয়! জানো তো????
সাবিহা তাও জবাব দিলো না।
------অামি এত ব্যস্ততার মাঝেও যখন ভাবি তোমার মত কেও অামার সারাজীবনের বন্ধু, অামার মন ভালো হয়ে যায়, অথচ তুমি??? হোয়াই অার ইউ সো অানইজি?? অন্য কাউকে ভালোবাসো??? অার ইউ ইন এনি অ্যাফেয়ার??
YOU ARE READING
লাভিং জার্নি
Romanceবছর তিনেক অাগের দিকে। অামি তখন সিএমসিতে পড়ছি। ফাইনাল পরীক্ষার মাঝামাঝি এসে অামার ভীষণ জ্বর হয়ে গেলো। বাসায় জানালাম না, বাসায় জানানো মানে বাবা বলবেন, পরীক্ষা কুইট কর! সুতরাং জানানোর প্রশ্নই অাসে না।