1

3K 50 2
                                    


শাড়ি পড়ে নিতু হাঁটতে পারছে না। শাড়ির কুঁচি বারবার পায়ে প্যাঁচ খেয়ে বেঁধে যাচ্ছে। কয়েকবার সে পড়ে যেতে গিয়েও সিঁড়ির রেলিং ধরে নিজেকে সামলালো।

অাজ তাঁর সতেরো তম জন্মদিন। এই জন্মদিন তাঁর অন্য জন্মদিন গুলোর থেকে বিশেষ। কারণ অাজ মাহবুব ভাই অাসছেন। গত তিনটে জন্মদিনের একটাতেও মাহবুব ভাই অাসেননি, তাঁর পরীক্ষা ছিলো।নিতু ভয়ে ভয়ে একবার জিজ্ঞেস করেছিলো,
----- অাপনি কেনো অাসেননি অামার জন্মদিনে??
মাহবুব ভাই মেজাজ খারাপ করে বলেছেন,
----তুই কি সেবার রাণী??, যে তোর জন্মদিন হলেই অাসতে হবে?তুই হলি মুতুকন্যা?মুতুকন্যার জন্মদিন। দেখা যাবে কেকের উপরে মুতু করে রেখেছিস। কেক কামড় দিয়েই মুতুর গন্ধ। তোর সাহস কি করে হয়, অামাকে মুতুজন্মদিনের দাওয়াত দেবার??
কথা শুনে নিতুর সঙ্গে সঙ্গে চোখে পানি চলে এসেছে।
তিনি কি ভাবেন নিজেকে???রাজা?? রাজাধিরাজ??
কেকে মুতু বিষয়ক কঠিন কথায় নিতু তিন চারদিন কেঁদে ভাসিয়েছিলো।।

তবে নিতুর মন বলছে, এবার তিনি অাসবেন। যদি না অাসেন, তাহলে এক মুঠো ঘুমের ঔষধ খেয়ে নিতু মরে যাবে। ঘুমের ঔষধ তাঁর সাথেই অাছে।
জন্মদিনের কেক কাটার পরপরই সে টুপ করে তা গিলে নেবে। যে জীবনের জন্মদিনে মাহবুব ভাই নেই, সে জীবনে বেঁচে থাকার মানে হয় না।এর থেকে মৃত্যু ভালো।

বাবার সামনে পড়তেই,
তিনি হেসে বললেন,
-------বাহ্। তোমাকে তো তো শাড়ি পড়ে একদম মায়ের মত দেখাচ্ছে। কে পড়িয়ে দিলো??
-------বড় চাচী।
------লুকিং সো প্রিটি।
দেখি দেখি মামণি এদিকে অাসোতো।
বলেই বাবা নিতুর মাথায় টুপ করে একটা চুমু খেয়ে নিলেন।
------বড় হও মামণি, অাকাশছোঁয়া বড় হও। হাজার জন্মদিন নিয়ে বেঁচে থাকো।
নিতুর মন খারাপ হয়ে গেলো। বাবা এরকম করলে তো সে ঘুমের ঔষধ খেয়ে মরতে পারবেনা।
থাক্, পরের জন্মদিনে মরা যাবে।

কেক কাটতে গিয়ে নিতু অারেকবার চোখ বুলালো চারিদিকে। নাহ্.. মাহবুব ভাই অাসেননি। অথচ উনার মা-বাবা, ছোটবোন ইথিশা, সব্বাই এসেছে।
নিতুর বুক ভেঙ্গে এলো।

জন্মদিনের কেক মুখে নিয়ে , নিতু মনে মনে বললো অামি অার অাপনার জন্য অপেক্ষা করবো না, না, না। রাত হলো, একসময় বাড়িভর্তি গেস্ট বিদায় হলো, তখনি মা এসে ডাকলেন,
-----নিচে অায় নিতু, মাহবুব এসেছে, ও'র বন্ধুবান্ধব সাথে করে।সবগুলো কি ব্রিলিয়ান্ট, কথা বল গিয়ে।, দেখে একটু পড়াশোনার ইন্সপায়ারেশন পাবি।

মাহবুব ভাইWhere stories live. Discover now