সত্যান্বেষী - ০৫

9 0 0
                                    

সত্যান্বেষী ০৫

রাত্রি তখন বোধ করি দেড়টা হইবে। অন্ধকারে চোখ মেলিয়া বিছানায় শুইয়াছিলাম। শ্রবণেন্দ্রিয় এত তীক্ষ্ণ হইয়া উঠিয়াছিলে যে, নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসের সঙ্গে বিছানার উপর দেহের উত্থান-পতনের শব্দ স্পষ্ট শুনিতে পারিতেছিলাম। অতুল যে জিনিসটা দিয়াছিল, সেটি দৃঢ়মুষ্টিতে ডান হাতে ধরিয়াছিলাম।

হঠাৎ অন্ধকারে কোনো শব্দ শুনিলাম না কিন্তু অতুল আমাকে স্পর্শ করিয়া গেল। ইশারাটা আগে হইতেই স্থির করা ছিল, আমি ঘুমন্ত ব্যক্তির মত জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলিতে লাগিলাম। বুঝিলাম, সময় উপস্থিত হইয়াছে।

তারপর কখন দরজা খুলিল, জানিতে পারিলাম না; সহসা অতুলের বিছানার উপর ধপ্‌ করিয়া একটা শব্দ হইল এবং সঙ্গে সঙ্গে আলো জ্বলিয়া উঠিল। লোহার ডাণ্ডা হস্তে আমি তড়াক্‌ করিয়া বিছানা হইতে লাফাইয়া উঠিলাম।

দেখিলাম, একহাতে রিভলবার, অন্য হাতে আলোর সুইচ ধরিয়া অতুল এবং তাহারই শয্যার পাশে হাঁটু গাড়িয়ে বসিয়া, মরণাহত বাঘ যেমন করিয়া শিকারীর দিকে ফিরিয়া তাকায়, তেমনি বিস্ফোরিত নেত্রে চাহিয়া–ডাক্তার অনুকূলবাবু!

অতুল বলিল,–“বড়ই দুঃখের বিষয় ডাক্তারবাবু, আপনার মত পাকা লোক শেষকালে পাশবালিশ খুন করলে!–ব্যাস্‌! নড়বেন না! ছুরি ফেলে দিন। হ্যাঁ, নড়ছেন কি গুলি করেছি। অজিত, রাস্তার দিকের জানলাটা খুলে দাও তো–বাইরেই পুলিস আছে।–খবরদার–”

ডাক্তার বিদ্যুদ্বেগে উঠিয়া দরজা দিয়া পালাইবার চেষ্টা করিল, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে অতুলের বজ্রমুষ্টি তাহার চোয়ালে হাতুড়ির মত লাগিয়া তাহাকে ধরাশায়ী করিল।
মাটিতে উঠিয়া বসিয়া ডাক্তার বলিল,–“বেশ, হার মানলুম। কিন্তু আমার অপরাধ কি শুনি!”

“অপরাধ কি একটা, ডাক্তার, যে মুখে মুখে বলব। তার প্রকাণ্ড ফিরিস্তি পুলিস অফিসে তৈরী হয়েছে–ক্রমে প্রকাশ পাবে। আপাতত–”

চার পাঁচজন কনেস্টবল সঙ্গে করিয়া দারোগা ও ইন্‌সপেক্টর প্রবেশ করিল।
অতুল বলিল,–“আপাতত, ব্যোমকেশ বক্সী সত্যান্বেষীকে আপনি খুন করবার চেষ্টা করেছেন, এই অপরাধে পুলিসে সোপর্দ করছি। ইন্‌সপেক্টরবাবু, ইনিই আসামী।”

ব্যোমকেশ বক্সী সমগ্রOnde histórias criam vida. Descubra agora