মাতাল হাওয়ায়

322 26 2
                                    

ভীষন জোরে কিছু একটা পড়ার শব্দ পেয়ে ফিরোজা স্বামীর দিকে চোখ তুলে তাকালেন। স্ত্রীর কুঁচকে যাওয়া কপাল দেখে জহির সাহেবের বুঝতে অসুবিধা হলোনা যে ফিরোজা অসম্ভব রকমের বিরক্ত কিন্তু তারপরও তিনি একমনে খেতে লাগলেন, জানেন আপাতত এ সমস্যার কোন সমাধান তার হাতে নেই।

"সেই তখন থেকে যা ইচ্ছা করছে মেয়েটা, আমার  মনে হয় এই বিয়েটা এখন না দেয়াই ভালো হবে। পরে কিন্তু তোমাকে অনেক কথা শুনতে হবে, বলে রাখছি।"

হলেও কিছু করার নেই, বিয়েটা হবে আর সেটা আজই।

বলছি কি পরীর বদলে তুমি বরং শান্তাকে বিয়ে করতে বলো ওদের, পরীতো বয়সে ছেলেটার বেশ ছোট।

ফিরোজা, তুমি যে খরচা করে বাজারে যাও, তারপর দশটা দোকানে ঘুরে একটা কাপড় পছন্দ করো। তারপর সেই কাপড়টা কেনার জন্যই আরো দশ দোকান ঘুরো, কিন্তু তারপর আবার ঠিক ঐ দোকানের ঔ কাপড়টাকেই কেন, কেন বলতো?

ফিরোজা উত্তর দিলেন না। স্বামী কি বলতে চাইছেন তিনি বুঝতে পারছেন কিন্তু কথা হলো যার বিয়ে সে তো ব্যাপারটা বুঝতে চাইছে না। পরী কোনভাবেই এই ছেলের সাথে বিয়েতে রাজি না।

সাঈদ ছেলে হিসেবে খুবই ভাল ফিরোজা। বেশি বয়সে বিয়েটা সব সময় মানুষের দোষ নয়।

সেটা আমাকে বলে কি লাভ বলো, কথাটা বরং তোমার ভাস্তিকে বোঝাও... কাজে দিবে।

ফিরোজার কথাটা অত্যন্ত যুক্তি সঙ্গত, জহির সাহেব কথা না বাড়িয়ে পুনরায় খাওয়ায় মনযোগী হলেন।

পরীর ইচ্ছে হচ্ছিল একটা দড়ি নিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে পড়ে। কিন্তু অত্মহত্যা মহা পাপ, তাই সে এ পথে পা বাড়ায়নি। কিন্তু বড়ো চাচা তার সাথে এরকম কেন করলো এই দুঃখ পরীর যাচ্ছে না।

সাতদিন পরে পরীর  বিয়ে হলো বড়ো চাচার পছন্দের ছেলের সাথেই। ছেলের টাকা পয়সার কোন সমস্যা নেই, ভাল সরকারি চাকুরি করে  কিন্তু বয়সটা বড্ডো বেশি। পরীর সাথে একদমই বেমানান... কোথায় ঊনিশ বছরের ডানপিটে দস্যি মেয়ে আর কোথায় ছত্রিশ বছরের বুড়ো। লোকটার নিশ্চই ইয়া বড়ো একটা ভুড়ি আর স্টেডিয়ামের মতো গোল একটা টাক থাকবে, অনেকটা মোটু পাতলুর মোটুর মতো। কথাটা মনে হতেই রাগে, হতাশায় পরীর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগলো।

শুধু গল্পেরা ( এক পর্বের গল্পগুলো) Where stories live. Discover now