মেয়েটার গানের গলা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেলাম, সত্যি বলছি আমার সুমনের গলাটা বোধহয় ঠিক এমনি ছিল।
সুমনের নামটা মনে আসতেই একটা মিষ্টি বাতাস আমাকে ছুঁয়ে গেল। একটা হাসি আমার ঠোঁটের দু প্রান্তের সীমানা ছাড়িয়ে চোখের তারায় ফুটে উঠলো। কিন্তু সাথে একটা অবর্ননীয় ব্যাথাও আমাকে ছুঁয়ে গেল। কেন জানেন? কারন আমার সুমনকে আমি হারিয়ে ফেলেছি। আমার জীবনে তাকে ফিরে পাওয়ার আর কোন রাস্তাই আমি খুঁজে পাচ্ছিনা।
"অ্যাই শ্রাবন উঠে আয়তো দোস্ত.... "
বন্ধুর ডাক শুনে আমি মুগ্ধতা ভেঙ্গে, সকালের আলসি ঝেড়ে ফেলে, নরম কাঁথার ওম ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। মুখে তখনও আমার হাসিটা ঝুলে রইলো। কি মিষ্টি গলা... ঠিক ইন্দ্রজালের মতো।মানুষ না হয়ে পাখি হলে আমি ঠিক তাকে আমার দু'হাতে পুরে ছুট লাগাতাম। কিন্তু আস্ত একটা মেয়ে মানুষ তাও আবার যাকে বলে অপরিচিতা... নাহ কোনভাবেই সম্ভব না।
ঘর ছেড়ে বের হতেই বিশাল মোছওয়ালা এক বুড়ো লোকের সাথে টক্কর খেতে হলো। এ নাকি রায়েদদের বাড়ির অনেক পুরোনো মালী কাম দারোয়ান। বাবারে বাবা কি ভীষন দুটো চোখ। আর লোকটা বলে কিনা আমার মতো এরকম তালগাছের নাকি সহজে দেখা মেলেনা। জাস্ট ইরিটেটিং। আমি আর তালগাছ... আমি জাস্ট সেভেন পয়েন্ট থ্রী... ওকে ম্যান?
রায়েদের সাথে ওর ফুপুর বাসার ডাইনিংয়ে এসে বসলাম। রায়েদের সাথে আমার পরিচয় ইউ এস এ তে। টেক্সাসে এম এস করতে যেয়ে পরিচয় আর এই পরিচয়টাই এক সময় গাঢ় বন্ধুত্বে পরিনত হয়েছে.. অবশ্য এতে রায়েদের ভূমিকাই বেশি। তারই সূত্র ধরে আজ আমি বাংলাদেশে ওর ফুফাত বোনের বিয়ে খেতে চলে এসেছি। রায়েদের ফুফাত বোনের নাম নিশি।
নিশিকন্যা... ইন্টারেস্টিং অ্যান্ড সুইট নেইম। কিন্তু আমার এখনো সেই নিশিকন্যার সাথে পরিচয় ঘটেনি। এখন নাস্তার পরে হয়তো রায়েদ সবার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দেবে। আমি আসলে একদম শেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়েছি। যশোরে নেমেই গিয়েছিলাম আমার আরেক ক্লোজ ফ্রেন্ড আদনানের বাসায়। আদনান ওর আম্মার জন্য আমার কাছে কিছু ওষুধ দিয়ে দিয়েছিল, সেটাই দিতে গিয়েছিলাম। খালাম্মার অ্যাজমার প্রবলেম আছে প্রচন্ড আকারে, ওষুধ গুলো ওনার জন্য খুব ইমার্জেন্সী ছিল। প্রতিটি শীতই ওনার জন্য এক একটা টার্নিং পয়েন্ট আর আমি এই জার্নির সাক্ষী হতে পেরে আনন্দিত। অন্তত একবার হলেও আমি খালাম্মার পাশে দাঁড়িয়েছি, ইটস এ হিউগ এচিভমেন্ট ফর মি।
YOU ARE READING
শুধু গল্পেরা ( এক পর্বের গল্পগুলো)
Randomপ্রতিটি মানুষের জীবনে অসংখ্য ঘটনা ঘটে, সেই ঘটনার কোন কোনটা মানুষ নিজের নিজের অজান্তেই গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। এর পিছনে থাকে কারো প্রতি তার ভালোবাসা, ঘৃনা, ভালোলাগার হাজার অনুভূতি। সেই সব অনুভূতি গুলো নিয়েই আমার টুকরো প্রয়াস... অনুভূতি।