৫.রায়হান গাড়ি চালাচ্ছে

42 7 2
                                    

রায়হান গাড়ি চালাচ্ছে। গতি ৩০-৪০ এর মধ্যে। 'বাংলাদেশের রাস্তায় যারা গাড়ি চালাতে পারে তারা দুনিয়ার সব রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারে'-কথাটা বলতে বলতে নাসির হঠাতই গম্ভীর হয়ে গেল৷ কবিরেরর ছোট ভাই নাসির৷ নাসির এখন লেখাপড়া শেষ করে বিদেশ যাওয়ার তদবীর করছে৷ রায়হান মাথা না তুলেই জিজ্ঞেস করলো,
-"কী হলো থেমে গেলে যে?"
-"ভাই আমাকে বাম পাশেই নামিয়ে দে৷ "
রায়হান বামদিকে গাড়ি সাইড করলো৷ বলল,
-"কী হয়েছে?"
-"পরে বলবো...." নাসির গাড়ির দরজা খুলে একটা হ্যাঁচকা দৌড় দিলো৷
রায়হানকে বেশ একটা বিচলিত মনে হলো না৷ রুনু তাকে ইতোমধ্যেই গত চার বছরের সমাচার শুনিয়ে দিয়েছে.......নাসিরের মাথার ৫২টা সিট সর্ম্পকে সে ইতোমধ্যেই জানে৷ এইমাত্র নজির দেখলো৷
~
ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আমজাদ সাহেবকে দেখা গেল..... দুজন বিদেশি ভদ্রলোকের সাথে দাঁড়িয়ে আছেন।রায়হান এগিয়ে গিয়ে তাদের সাথে উষ্ণ কর্মরদন করলো।পরস্পরের সাথে পরিচিত হয়ে তারা সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য চলে গেল।
সেমিনারটা হচ্ছে ' ডিমেনশিয়া ' নামক একটি রোগকে কেন্দ্র করে। যে রোগটি বাংলাদেশে সরব কিন্তু কুসংস্কার মন্ডিত হয়ে আছে৷ সেমিনারটি শেষ হলো বেশ নাটকীয়ভাবে৷ কনফারেন্স হলের দরজা খোলা ছিলো......সেখান দিয়ে একজন হোটেল কর্মচারী কিছু খাবার ট্রেতে করে নিয়ে যাচ্ছিলো....দুর্ভাগ্যক্রমে সেগুলো পড়ে ভেঙে বিকট শব্দের জন্ম দেয়..... উপস্থিত আমেরিকান, কানাডিয়ান, জাপানিজ নাগরিকেরা ভূমিকম্প ভেবে মাটিতে গড়াগড়ি  করতে লাগলো৷ এশিয়ানরা খুব হাসাহাসি করলো।রায়হান মনে মনে বলল,"মানুষের বেঁচে থাকার কী অদম্য ইচ্ছে! "

সেমিনার শেষ করে রায়হান আমজাদ সাহেবকে নিয়ে গাড়িতে উঠলো৷ গাড়ি আবশ্যি বেশিক্ষণ চললো না.....জ্যামে আটকে গেল।আমজাদ সাহেব রেডিও চালু করলেন।নব ঘুরিয়ে স্টেশন ধরালেন৷ রবীন্দ্রনাথের গান বাজছে,"দূরদ্বীপ প্রবাসিনী.....দূরদ্বীপ প্রবাসিনী.......আমি চিনি গো তারে সে যে......... "আমজাদ সাহেব হেলান দিয়ে চোখ বুজলেন ৷ তার এই গানটা খুব ভালো লাগে.....এই 'দূরদ্বীপ প্রবাসিনী' যেন আমরিন৷ রায়হান মুচকি হাসলো৷ তার মনে হয় রবীন্দ্রনাথের জীবনে হয়তো এমনিই কোন "প্রবাসিনী'' ছিলো৷ কে জানে?

আকাশে মেঘ করেছে.....হয়তো বৃষ্টি হবে। রেডিও স্টেশনের শব্দ আরও আসছে না৷ রায়হান অ্যাকসেলেটর চাপলো।

একজন ভদ্রলোক Tahanan ng mga kuwento. Tumuklas ngayon