বর্ষার কোনো একদিন।সেদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো।আমি ঘুমাচ্ছিলাম।বিকাল ৪ টার দিকে হঠাৎ কল এলো নীলাদ্রির।ঘুম ঘুম চোখে কল ধরলাম।
-"আমার দেবী।কেমন আছো?সারাদিন কল দিলেনা।"
ওইপাশ থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে উঠে বসলাম।
-"হ্যালো,নীলাদ্রি।কিছু হয়েছে?হ্যালো।"
নীলাদ্রি কাঁদছিল।ওর কান্নার শব্দে আমার ভয়ে নিঃশ্বাস আটকে আসছিলো।
-"আব্বু সব যেনে গেছে।ইরানী চাচি তোমাকে আমাকে হাত ধরে হাঁটতে দেখেছে।ছবিও তুলে এনেছে।বাবাকে বলছিলো,যেয়ে দেখেন আরো কত অকাজ কুকাজ করেছে।পড়ালেখা বাদ দিয়ে বিয়ে দিয়ে দেন।নইলে সমাজে আর মুখ দেখাতে পারবেন না।বাবা আমাকে অনেক মেরেছে।আম্মুও আমাকে বকেছে অনেক।ওমর কাকাকে কল দিয়ে বলেছে আমার জন্য পাত্র খুঁজতে।কি করবো আমি!তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে আমি বিয়ে করতে পারবো না।তুমি ভালো থেকো।"
হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে এতোকিছু শুনে আমার মাথা কাজ করছিলো না।যেই বাবা-মা নীলাদ্রীর গায়ে আঙুলও লাগায় না,তারা আজ নীলাদ্রিকে মেরেছে!কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না।শুধু বলেছি,
-"এই পাগলী উল্টাপাল্টা কিছু করবা না।আমি ব্যবস্থা করছি।আমাকে একটু সময় দাও।আবারও আমি বলছি উল্টাপাল্টা কিছু করবা না।আমি একটা ব্যবস্থা করবো।"
এই বলে কল কেটে দিলাম।আমি তখন অনার্স তৃতীয় বর্ষে।বাবা-মা নেই।ছোট থেকে চাচার কাছে বড় হয়েছি।এখন টিউশনির টাকায় জীবন চলে।এর মধ্যে কীভাবে কি করবো মাথা কাজ করছে না।অতোকিছু না ভেবে চলে গেলাম নীলাদ্রির স্কুলের পিছের চৌরাস্তায়।কল দিলাম নীলাদ্রিকে-
-"হ্যালো,নীলাদ্রি।"
-"হ্যা,বলো।"
-"যেভাবেই হোক চৌরাস্তায় চলে আসো।"
-"আচ্ছা।"নীলাদ্রি আর কিছুই বললো না।
অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে।রাস্তায় কোনো মানুষজন নেই।আমি একা বৃষ্টিতে দাড়িয়ে ভিজছি।আর যেই পথ দিয়ে নীলাদ্রি আসবে সেদিকে তাকিয়ে আছি।
এই বৃষ্টিও যেনো আজ শেষ হবে না।জানিনা কতক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম।চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিলো।হয় আজ,আর নয় কখনো না।বুকের হৃৎস্পন্দন ক্রমেই বাড়ছিলো,নীলাদ্রি কি আসবে?
হঠাৎ দেখলাম ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে নীল সেলোয়ার-কামিজ পরা একটা মেয়ে এদিকে আসছে।আমার দেবী আসছে।
মুখে কি মিষ্টি হাসি।এই হাসিতে কোনো জড়তা নেই।ভবিষ্যতের কোনো দুশ্চিন্তা নেই।আছে শুধুই ভরসা।ভালোবাসার ভরসা।
তখন হাতে ছিলো মাত্র তিন হাজার টাকা।বাসা ভাড়ার টাকা।ড্রয়ারে যা পেয়েছি নিয়ে এসেছি।নীলাদ্রিকে নিয়ে চলে গেলাম মার্কেটে।ভেজা শরীরে রাস্তার মানুষ খারাপ দৃষ্টিতে দেখছিলো।মাত্র এক হাজার টাকায় একটা লাল থ্রি পিস কিনে দিলাম।নীলাদ্রি চেন্জ করে নিলো।তারপর দুইজন বন্ধুকে বললাম কিছু টাকা নিয়ে কাজী অফিসে চলে আসতে।
-"কবুল,কবুল,কবুল।"
এভাবেই আমাদের বিয়েটা হয়ে গেলো।পিছনে ফেলে আসা অতীত,সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত।কিন্তু হাতে ভালোবাসার মানুষের হাত।সেদিন আমি নীলাদ্রিকে কথা দিয়েছিলাম জীবনে কখনো তার চোখে জল আসতে দিবো না।হ্যালো বন্ধুরা🥰আশা করছি ভালো লাগছে।সাথেই থাকুন।
YOU ARE READING
একান্তই আমার(১৮+)
Romanceভালোবাসা,কামবাসনা,অধিকার সবই যদি একজনকে ঘিরেই থাকে,তবে প্রতিদিনই মনেহয় প্রথম দেখার দিনের মতো।"একান্তই আমার" একটি বিবাহিত পরিবারের গল্প যেখানে একজন স্ত্রীর প্রতি তার স্বামীর ভালোবাসা,আত্নত্যাগ প্রকাশ পেয়েছে।একই সাথে একজন স্ত্রী তার ভালোবাসার জন্য কীভ...