০১-৫. বাড়ির নাম অপেক্ষাছদ্মবেশ – সাদাত হোসাইন
উৎসর্গ
আমার কখনো কখনো মনে হয়, মানুষটাকে আমি চিনি। আবার কখনো কখনো মনে হয় চিনি না। মানুষটা অদ্ভুত, অনুনমেয়। বুকের ভেতর আস্ত এক নোনাজলের সমুদ্র পুষে রেখেও ঝলমলে রোদের মতন হাসেন। তাঁর সেই হাসি বড় সংক্রামক। তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে তাঁর চারপাশের অসংখ্য মানুষের মধ্যেও। নিজেদের অগোচরেই সকল বিষাদ বুকে চেপে সেই মানুষগুলোও ক্রমশই যোগ দিতে থাকে তার অদ্ভুত রহস্যময় আনন্দ মিছিলে।
হাসিবুর রেজা কল্লোল
চারপাশে আনন্দ ছড়িয়ে দেয়া অদ্ভুত, অনুনমেয় সেই রহস্য মানব। আপনার আনন্দ ছড়িয়ে দেয়ার এই মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হোক।
.
ভূমিকা
মানুষ রহস্যময়তা পছন্দ করে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই সে সেটা বুঝতে পারে না। জীবনভর সে তার প্রিয়তম মানুষটিকেও পুরোপুরি বুঝে ফেলতে চায়, কিন্তু পুরোপুরি বোঝা হয়ে গেলে তার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সে আসলে অবচেতনে সবসময়ই অনুদঘাটিত কিছু রহস্য উদঘাটন করতে চায়। যতক্ষণ অবধি সেই রহস্য থাকে, ততক্ষণ অবধি একটা প্রবল আগ্রহ, আকর্ষণ কাজ করে। রহস্য শেষ হয়ে গেলে আকর্ষণ ফুরিয়ে যায়। অথচ জীবনজুড়েই সে ভাবে, সে রহস্য পছন্দ করে না।
মানুষের ভেতরে এই দ্বান্দ্বিক সত্ত্বাটা আছে। মানুষ ভাবে, সে ভয় পেতেও পছন্দ করে না, নৃশংসতা পছন্দ করে না। কথা সত্য না। সে অতি আগ্রহ নিয়ে গা হিম হয়ে আসা হরর সিনেমা দেখে, ভূতের বই পড়ে, সিরিয়াল কিলারের ভায়োলেন্ট মুভি দেখে, সাহিত্য পড়ে।
এ কারণেই শিল্প-সাহিত্যে বৈচিত্র্যময় নানান ঘরানার সৃষ্টি হয়েছে। রহস্যোপন্যাস সাহিত্যের সেরকমই একটি সমৃদ্ধ শাখা। এই শাখাঁটির প্রতি আমার আগ্রহ একদম শৈশবেই। তবে তা শুধুই পড়ার জন্য, লেখার জন্য নয়। কারণ, এই ঘরানাটিকে আমার খুবই কঠিন এবং একই সাথে গাণিতিক ‘ক্যালকুলেটিভ’ মনে হয়। ফলে এতোদিনে কখনোই রহস্যোপন্যাস লেখার কথা আমি ভাবিনি।