০৬-১০. গোলাম মাওলা ধীর-স্থির মানুষগোলাম মাওলা ধীর-স্থির মানুষ। কঠিন বিপদেও মেজাজ হারান না। শান্ত গলায়, হাসিমুখে কথা বলেন। এই কারণেই খুব দ্রুত তিনি সাধারণ মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছেন। তিনি যে রাজনীতির সঙ্গে খুব বেশিদিন যুক্ত, তাও না। বরং তার জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে ইতালিতে। খুব অল্প বয়সেই শ্রমিক হিসেবে ইতালিতে চলে গিয়েছিলেন। ফিরেছেন প্রায় বছর কুড়ি পর। এই কুড়ি বছরে তিনি তার ভাগ্য ফিরিয়েছেন। ইতালিতে নিজের একাধিক রেস্টুরেন্ট হয়েছে তার। হয়েছে নানা ধরনের ব্যবসাও। এই ব্যবসা দেখাশোনার জন্য একে একে ছোট তিন ভাইকেও তিনি ইতালি নিয়ে গেছেন। তারা ব্যবসাটা বুঝে উঠতেই বেশ কবছর হয় দেশে ফিরে এসেছেন গোলাম মাওলা। এসে ইট-বালির ব্যবসা শুরু করেছেন গ্রামে। যদিও অর্থ তার যথেষ্টই হয়েছে, এখন দরকার সামাজিক সম্মান, পরিচিতি। সেই লক্ষ্যেই রাজনীতিতে নেমেছিলেন তিনি। দু হাতে টাকাও খরচ করেছেন।
বন্যা, খরা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাসে আক্রান্ত মানুষের দিকে সবার আগে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে বাড়িয়েছেন তাঁর স্বপ্নের জালও। যাদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন, মাত্র কয়েক বছরেই তাদের অনেককেই রাজনীতি থেকে ঝেরে ফেলেছেন গোলাম মাওলা। খুব দ্রুতই ওপর মহলেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তার এই হঠাৎ উত্থান অনেকে মেনে নিতে না পারলেও সরাসরি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি কেউই। একমাত্র ব্যতিক্রম চুন্নু মিয়া। গোলাম মাওলার কঠিন প্রতিপক্ষ। এই দুজনই জানেন, মুহূর্তের সুযোগে একজন আরেকজন ছিটকে ফেলে দেবেন খেলার মাঠ থেকে।
.
গোলাম মাওলা চুপচাপ বসে আছেন বারান্দায়। তাঁর সামনে কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে সবুর। সবুরের দশাসই শরীর। বিশাল বুকের ছাতি। সেই তুলনায় তার মাথা ছোট। চোখ দুটোও সরু, তাকায় পিটপিট করে। জগতে কাউকে যদি সে ভয় পায়, তবে তা তার সামনে থাকা ওই হাসি-খুশি চেহারার ছোটখাটো মানুষটাকে। গোলাম মাওলা বললেন, আর কি কি বলেছেন চুন্নু ভাই?