পর্ব-১

22 1 0
                                    

পুরুলিয়ার এক প্রত্যন্ত গ্রামের দুই বন্ধু প্রলয় আর সমীর।সেই ছো্টবেলা থেকেই তাদের গলায় গলায় ভাব। প্রাথমিক স্কুল থেকে আজ অবধি তাদের টান একই রয়ে গেছে। দুজনেই এখন ৪৬ বছরে পা দিয়েছে। বয়স বাড়লেও কিন্তু মনটা যেন এখনও স্কুল এর গণ্ডি পেরোতে পারেনি।

প্রলয় এখন কলকাতায় থাকে,সে একজন সরকারি চাকুরে।দুই ছেলে মেয়ে আর স্ত্রী রিনাকে নিয়ে বেশ ভালই আছে সে। কিন্তু সমীর রয়েগেছে গ্রামেই।চাকরিটা শেষপর্যন্ত তার ভাগ্যে জোটে নি।

সে এখন একজন শিক্ষিত চাষী।স্ত্রী আর একমাত্র সন্তান,তার পুত্র রোহণ কে নিয়ে তারা গ্রামের বাড়িতেই থাকে। তার স্বপ্ন এখন রোহণ ঘিরে। চাকরি না পাওয়ার দুঃখটাকে বুকে চেপে রেখে সে বাস্তব জীবনটাকে মেনে নিয়েছে ঠিকই কিন্তু একটা না পাওয়ার বেদনা রয়েই গেছে। আর্টাই সে তার সমস্ত না পাওয়ার বেদনা দুর করতে চেয়েছে তার সন্তানের মধ্য দিয়ে।

ভালোভাবে পড়াশোনা শিখিয়ে রোহণকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে সে। এভাবেই দিন কাটছিল তাদের।

এসব সত্বেও তাদের বন্ধুত্বের যোগাযোগ কখনো বাধা পায়নি।মাঝেমধ্যে দুই বাড়িতে যাতায়াত এবং ফোনে কথাবার্তা প্রায়ই লেগেই থাকত। সমীরের ছেলে তার আদর্শেই বড় হচ্ছিল।তার স্ত্রীও স্বামীর আদর্শকে সম্মান করত। কিন্তু প্রলয়ের মেয়ে বাবার মতো হলেও তার স্ত্রী ও ছেলে একটু অন্যরকম ছিল। কলকাতার জল - হাওয়া হয়তো একটু বেশিই লেগেছিল তাদের গায়ে।প্রলয়ের ছেলে সুজয় ইংলিশ অনার্স করছিলো আর সমীরের ছেলে রোহণ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পেয়েছিল কলকাতার একটা ভালো কলেজে।সমীর তার সমস্ত কষ্টের উপার্জন জমা রেখেছিল রোহণকে মানুষ করার জন্য।

মোটামুটি ভালই চলছিলো সংসার আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক তাদের। কিন্তু হঠাৎই একদিন এই দুই বন্ধুর সম্পর্ক আঘাত পেল প্রলয়ের ছেলে সুজয়ের আচরণে। এক গ্রীষ্মের ছুটিতে প্রলয়রা এলো গ্রামের বাড়িতে।খুশিতে মন ভরে গেলো সমীরের। খবর পেয়েই ছুটলো প্রলয়ের বাড়ির দিকে ,কিন্তু ঢুকতে গিয়েই দেখে প্রলয় সমীরের বাড়ির দিকেই রওয়ানা হচ্ছিলো। দুজন দুজনকে দেখে জড়িয়ে ধরলো। প্রলয় বাড়ির ভিতর নিয়ে গেলো সমীরকে।

আজ এইটুকুই থাক। ধন্যবাদ সবাইকে এই পর্বটি পড়ার জন্য। আপনাদের সমর্থন ও ভালোবাসা আমাকে গল্প লেখার প্রেরণা দেয়। পরের পর্বটি খুব শীঘ্রই আসছে। ধন্যবাদ।

আত্মীয় Tempat cerita menjadi hidup. Temukan sekarang