যমক অলংকার কাকে বলে :-
একই ধ্বনিগুচ্ছ নির্দিষ্ট ক্রম অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে অথবা সার্থক-নিরর্থকভাবে একাধিকবার উচ্চারিত হলে যে শ্রুতিমাধুর্যের সৃষ্টি হয়, তার নাম যমক অলংকার।
যমক অলংকারের বৈশিষ্ট্য :-
১. ধ্বনিগুচ্ছে স্বরধ্বনি থাকবে, ব্যঞ্জনধ্বনিও থাকবে।
২. বাংলায় সমধ্বনির (ই-ঈ, উ-ঊ, জ-য, শ-ষ-স) উচ্চারণে পার্থক্য নেই। অতএব যমকে সমধ্বনির প্রয়োগ হতে পারে। যেমন—রবি-রবী, বঁধু-বধূ, ঋণী-রিণী, জেতে-যেতে, আশা-আসা।
৩. ধ্বনির পরিবর্তন হলে যমক থাকবে না, অনুপ্রাস হয়ে যেতে পারে। যেমন— 'ধানের শীর্ষে আগুনের শীর্ষ' যমক (শীষ-শীষ), কিন্তু 'ধানের শিষের উপরে শিশির' অনুপ্রাস (শিষের-শিশির-স্বরধ্বনির পরিবর্তন), 'পূরবীর রবি' যমক (রবী-রবি), কিন্তু 'পূরবীর ছবি' অনুপ্রাস (রবী-ছবি—ব্যঞ্জনের পরিবর্তন)।
৪. ধ্বনিগুচ্ছের একাধিক উচ্চারণ হবে নির্দিষ্ট ক্রম অনুসারে। বিন্যাস-ক্রমের পরিবর্তন হলে যমক না হয়ে অনুপ্রাস হবে। যেমন 'যৌবন বন’ যমক, কিন্তু ‘যৌবন নব' অনুপ্রাস।
৫. ধ্বনিগুচ্ছের ভিন্ন ভিন্ন অর্থে একাধিক উচ্চারণ হবে। অর্থাৎ প্রতিটি উচ্চারণেই ধ্বনিগুচ্ছ অর্থযুক্ত বা সার্থক। অর্থযুক্ত ধ্বনিগুচ্ছের নাম শব্দ। অতএব এটি হবে একই শব্দের একাধিক উচ্চারণ, কিন্তু একই অর্থে নয়। এর নাম সার্থক। সমক।
৬. ধ্বনিগুচ্ছের সার্থক-নিরর্থকভাবে একাধিক উচ্চারণ হতে পারে। এর অর্থ, ধ্বনিগুচ্ছের একবার সার্থক । অর্থযুক্ত উচ্চারণ, অন্যবার নিরর্থক বা অর্থহীন উচ্চারণ। অর্থাৎ, একবার শব্দের উচ্চারণ, অন্যবার শব্দাংশের উচ্চারণ। এর নাম নিরর্থক যমক।
৭. ৫ম-৬ষ্ঠ বৈশিষ্ট্য থেকে বোঝা গেল, ধ্বনিগুচ্ছের একটি প্রয়োগ অর্থযুক্ত হবেই, অন্যপ্রয়োগ অর্থযুক্ত অর্থহীন হতে পারে। কিন্তু প্রতিটি প্রয়োগেই ধ্বনিগুচ্ছ অর্থহীন হতে পারে না, হলে তা যমক না হয়ে অনুপ্রাস হবে।
ESTÁS LEYENDO
রূপতত্ত্ব রসতত্ত্ব ছন্দ ও অলঙ্কার
No Ficciónক). রূপতত্ত্ব : কবিতা (মহাকাব্য, গীতিকবিতা, সনেট) ; উপন্যাস ; ছোটগল্প; নাটক (একাঙ্ক, কাব্যনাটক, নাট্যকাব্য, সাংকেতিক নাটক) ; প্রবন্ধের সংজ্ঞার্থ, প্রকারভেদ ও শিল্পরূপ। (২৫ নম্বর) খ) রসতত্ত্ব: কাব্য ; কাব্যের দেহ ও আত্মা ; ধ্বনি ; রস; অলংকার ; রীতি ;...