রিং রিং রিং রিং
-:“হ্যালো”
-:“Mr Shan”.
-:"Yes”
-:“আমি Eye care Hospital থেকে বলছি আপনার retina transplant আবেদনটা মঞ্জুর হয়ে গেছে একটা retina আপনার সাথে ম্যাচ করেছে। হাসপাতালে আপনার guardian কে সাথে নিয়ে এসে দেখা করতে হবে”
-:“ওঃ ধন্যবাদ স্যার আমি এখনি আমার বাবা কে নিয়ে যাচ্ছি”।“মা ও মা মাআআআআআ ”
“কিঃ হলোঃ”
“মা হাসপাতাল থেকে ফোন করে ছিল, বলল আমার রেটিনার সাথে অন্য একজনের রেটিনা ম্যাচ করেছে।বাবা আমি আবার দেখতে পাব। আমি রেবাকে বলে আসি ”
“রেবা ঘরে নেই রেবা আর ওর মা মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে পনের দিনের জন্যে।”
“তাহলে তো রেবা এলে আমি রেবাকে আশ্চর্য করে দেবো। ও আমাকে দেখে চমকে যাবে।”
শানের অপারেশন সফল হয় এবং শান দেখতে শুরু করে । এবার শান দিন গুনতে থাকে কবে রেবা আসবে আর ও রেবাকে দেখতে পাবে অপারেশনের পরও সূর্যের আলো শানের চোখ সহ্য করতে পারেনা বলে কদিন শানকে কালো চশমা পড়ে থাকতে বলা হয়। শান তার মাকে জিজ্ঞাসা করত যে রেবা কে দেখতে কেমন কিন্তু শানের মা বলে যে তিনি কখনোই রেবা কে দেখেননি কারণ রেবা সব সময় মুখে মাস্ক পড়ে থাকতো এবং মাথায় টুপি পড়ে থাকত। শান তখন নিজের মাকে বলে যে ও রেবাকে পছন্দ করে, যদি রেবাকে দেখতে খারাপ হয়, তাহলে কী শানের সাথে ওর বিয়ে দিতে আপত্তি করবে। তখন শানের মা শানকে বললো,
“দেখ শান রেবা দেখতে কেমন এতে আমার কিছু যায় আসে না। রেবা একজন খুব ভালো মনের মানুষ। ও শুধু যদি তোকে সুখি রাখতে পারে তাহলে সারা জীবন তোর সাথে থাক। আমার কোন আপত্তি নেই।”
দুদিন পর রেবারা মামার বাড়ি থেকে ফিরে এলো। ফিরে আসার পরেই রেবার মামার বাড়ি থেকে কিছু গিফট এনেছিল শানের জন্য সেই গুলো শান কে দিতে এলো রেবা জানতো না, শান এখন দেখতে পাচ্ছে। রেবা শানের মা ও বাবাকে দেখতে পেলনা গিফট গুলো শানের ঘরে টেবিলে রেখে শানকে খুঁজতে লাগল।
“শান ঐ শান , তুই কোথায়”“আমি ওয়াশরুমে আছি একটু অপেক্ষা কর ”
এ কথা শুনে রেবা শানের রুমের ফ্যানটা চালালো এবং মুখের মাস্ক আর টুপিটা খুলে ওর বিছানাতেই শুয়ে পড়লো। শান যখন ওয়াশরুম থেকে এলো তখন দেখে রেবা ঘুমিয়ে আছে রেবার মুখটা চুলে ঢেকে ছিল রেবার মুখ থেকে চুলটা সরাতে শান যা দেখল শান নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারল না। এত সুন্দর মেয়ে শান কখনো দেখেনি রেবা এত সুন্দর! কি করে হতে পারে! এটা রেবা? না কোন পরী নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারছিল না। শান নিজের ফোনে রেবার একটা ছবি তুলে নিল এবং তারপরে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। শান নিজের মাকে যখন ছবিগুলো পাঠাল শানের মা ও ছবি দেখে বিশ্বাস করতে পারলে না যে রেবাকে দেখতে এত সুন্দর যদি ও এত সুন্দর তাহলে কেন সবসময় মাস্ক দিয়ে মুখ ঢেকে রাখে প্রচন্ড গরমে নিজের গায়ে ঢাকা কাপড় পড়ে। শানের মা রেবার মায়ের কাছে গেল এবং জানতে চাইলে এসব ব্যাপারে। তখন রেবার মা শানের মা কে সব বলল যে সুন্দর হওয়ার জন্য তাকে কতটা কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল।সে তার নিজের মেয়েকে ঐ কষ্ট থেকে বাঁচাতে চেয়ে ছিল কিন্তু তবুও তার মেয়েকে সবার ঠাট্টা- তামাশার পাত্র হতে হয়েছে। এসব কথা বলে রেবার মা কাঁদতে লাগলো।শানের মা রেবার মা কে সান্তনা দিয়ে শানের মনের কথা আর দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার কথা খুলে বলল রেবার মা এসব শুনে খুব খুশি হল।এবং ওদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে লাগল।
এদিকে রেবাও ঘুম থেকে উঠে দেখে সন্ধ্যা নেমে এসেছে আর শান অন্ধকারে ঘরের কোনে চুপচাপ বসে আছে রেবা প্রথম চমকে যায় তারপর নিজেকে সামলে বলে
“এই গাধা অমন করে বসে আছিস কেন? আমি ঘুমিয়ে গেছি আমাকে ডাকতে পারলি না দেখ কত দেরি হয়ে গেল।”
শান কিছু বলছে না দেখে রেবা ঘাবড়ে যায় ও যেই ঘরের সুইচ টা on করে ও তখনি অবাক হয়ে যায় সারা ঘরে রংরঙিন আলো একটা বড় কেক আর তার উপর লেখা Will you marry me .“এসব কি?”
একথা বলে রেবা যেই উঠে দাঁড়ায় অমনি শান হাঁটু গেড়ে বসে একটা খুব সুন্দর আংটি রেবা র সামনে তুলে ধরতে ই রেবা শানের চোখের দিকে দেখে আর কাঁপা কাঁপা গলায় বলে ।
“তু তুই আমাকে দেখতে পাচ্ছিস! তুই সত্যিই আমাকে দেখতে পাচ্ছিস আমি স্বপ্ন দেখছি নাতো। আআআমি কি এখনও ঘুমাচ্ছি, না আমি মনে হয় মামার বাড়িতে ই আছি।”“শোন রেবা শোন শান্ত হ ,তুই কোন স্বপ্ন দেখছিস না ,এসব সত্যি আমার রেটিনা ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে ।আর এখন আমি দেখতে পাচ্ছি ”
রেবার মুখ থেকে আর কোনো কথা বেরোচ্ছিল না ও এত সব কিছু একসাথে ঘটে যাবে আশা করতে পারেনি। ও কি বলবে আর কি বলবে না তা বুঝতে পারছিলো না। শানের দৃষ্টি ফিরে পাওয়া,আর ওকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া সব একসাথে হয়ে গেছে সব যেন একটা খুব সুন্দর স্বপ্ন।
“আমিও তোকে বিয়ে করতে চাই, হ্যা .....আমিও তোকে অনেক ভালোবাসি ....আজ থেকে নয় অনেক দিন আগে থেকে,... কবে থেকে আমিও জানি না।আমি তোকে খুব ভালবাসি শুধু ভয়ে বলতে পারি নি।কোথা যদি তুই আমাকে ছেড়ে দিস ব আমাদের বন্ধুত্ব ভেঙে দিস।”শান তখন মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে আর বলে
“হায়!!!আর আমি ভাবতাম তুই শুধু আমাকে একজন বন্ধুর মত দেখিস আমি ও তোকে কবে থেকে ভালবাসি শুধু প্রতিবন্ধী হবার কারণে তোকে কিছু বলতে পারিনি”
দুজনে দুজনের দিকে জল ভরা চোখে তাকিয়ে থাকে এবং কিছুক্ষণ পরে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আর জোরে জোরে কাঁদতে থাকে নিজেদের পাগলামির জন্য।
VOCÊ ESTÁ LENDO
ভালোবাসার গল্প
Romanceভালোবাসা নিয়ে কিছু ছোট গল্প। যেখানে দুঃখ, কষ্ট,সুখ, সবই আছে।