দিন যায় দিন আসে তবু কথা না শেষ হয়। সেদিন ছিল বর্ষার রাত। সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ল হঠাৎ কানে বাজলো এক কান্না। সে কান্নার গতি ছিল প্রচন্ড। সে কান্না ছিল অসহায় আর এক শিশুর,.......//.......বুকে বাজলো সেই কান্নার রোল।জাগ্রত হল মানসিক অস্থিরতা। তবুও খুঁজে পাই না সেই আসলে সত্যিকারের বন্ধুত্ব। যখন আসে তখন আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না । কারণ ততক্ষণে সব শেষ। আর কোন কান্নাই কানে আসছে না। ভেবেছিলাম অন্য কিছু। হলো আরেক । দুঃখ যন্ত্রণার বুঝি আরেক অধ্যায় শুরু। তবুও তো এগিয়ে যেতে হবে। দুঃখের নৌকো পার নাহলে যে সুখের সাগরে যাওয়া যায় না।তাই আবার নতুন করে যাত্রা শুরু করলাম। সরিয়ে ফেললাম সব বাধা। আর মনোনিবেশ করলাম আপন কাজে।দেখতে দেখতে দুমাস হয়ে গেল।হয়ে গেলাম সামাজিক কর্মী । আমার নিজের গর্বে বুকটা ভরে গেল।এবার বুঝি আসল লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো।শুরু হলো নতুন অধ্যায়।একটা ছোট আস্তানা করলাম নদীর ধারে, এক বটবৃক্ষের তলায়।ভাবলাম বাকি জীবনটা ওখানেই কাটিয়ে দেবো।মনে পড়ে গেল মাদার টেরেজার কথা।মনকে জাগিয়ে তুললাম।সংসার থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না।তবুও বজায় রাখলাম উভয় দিক।পেলাম সব দিক থেকে সাহায্য।ভোরে উঠলো অনাথ আস্তানা।কত অজানা শিশু প্রাণ ফিরে পেলো। হয়ে উঠলো মানুষের মিলনক্ষেত্র।এইভাবে চলতে চলতে একদিন এক বৃদ্ধের সঙ্গে পরিচয় হলো।উনার সব থাকতেও কিছু নেই।ছেলে মেয়ের দ্বারা ব্রাত্য ।বাকি জীবনটা কাটানোর কোন আস্থানা নেই।তাই তাকে টেনে নিলাম । সর্বক্ষণ সঙ্গী হলো ।তিনি আমার কাজের কিছুটা ভাগ নিলেন।কিছুটা বোঝা হালকা হল।আরো অনেক জায়গা বাড়িয়ে ফেললাম।মনে হল এটি আমার আরেকটি সংসার।জীবনের খুশি এখানেও আছে।তাই খুশির জোয়ারে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়ে নিজের স্বার্থ ছাড়াই সামাজিক কর্মে লিপ্ত হলাম।হঠাৎ কি জানি আকাশে কালো মেঘ দেখা দিল।দস্যুরা ছিনিয়ে নিয়ে গেল দুটি ছোট প্রাণ।কান্নায় বুক ফেটে গেল।দশটি অনাথের মধ্যে দুটি শিশু নেই।আমি পাগলের মত দৌড়াতে লাগলাম । পুলিশ কর্মীর সাহায্য নিলাম কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গেল।ওরা খুন করেছে ওই দুটি ছোট্ট শিশুকে।বুকে যেন পাথর চেপে গেল।ভগবানের কাছে বিচার চাইলাম।কিন্তু ভগবানের কাছে বিচার পেলাম না। তবুও আমি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারলাম না।পৃথিবীর এই কর্মকাণ্ডের কথা ভেবে মনুষ্য জাতির প্রতি ঘৃণা হলো।তাই নিজেকে শেষ করে দেবো ভাবলাম।কিন্তু বাকি শিশুর কি হবে এই ভেবে আর কিছু করতে পারলাম না । তবুও যতদিন বাঁচবো এই বিশ্বকে আমি শিশুর বাসযোগ্য করে যাব এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।কোন প্রতিবন্ধকতাকে আমি পরোয়া করব না.......জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। ....................প্রভাতেশ .