[ মাহির POV (পয়েন্ট অব ভিউ) ]প্রচুর ব্যস্ততা! বাসায় যেনো কাজের শেষ নেই। আম্মু রান্নাঘরে রান্না করছে। ছোটভাই শাহেদ গেছে স্কুলে। আব্বু কলেজের টিচার, এখন কলেজে। আমার আপাতত ছুটি। একটানা পরীক্ষার পর যেনো হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। এবার এস.এস.সি. পরীক্ষা দিয়েছি।
আমরা আগে ঢাকায় ছিলাম। হঠাৎ আব্বু ট্রান্সফার হয় কুমিল্লায়। আমার এস.এস.সির ফর্ম ফিলাপ করা হয়ে গেছে ততদিনে। তাই কাছের একটা হোস্টেলে উঠে যাই। কয়েক মাসেরই তো ব্যাপার! তাছাড়া আমার অনেক ব্যাচমেটরাও সেই হোস্টেলে ছিলো। তাই কোনো সমস্যা হয়নি।
ঘর গোছাচ্ছি। এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো। আমি দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম। তবুও আম্মু রান্নাঘর থেকে চেঁচিয়ে বললেন, "দ্যাখ তো, কে?"
আমি দরজা খুললাম। "কে?" - তা আর জিজ্ঞেস করলাম না। ( সাধারণত দরজা খোলার আগে "কে?"-প্রশ্ন করাটা আমার অভ্যাস। সেসব সময়ও যখন আমার জানা থাকে দরজার ওপারের মানুষটা কে। তবে কেনো যেনো এবার করা হলো না।)
আমি ধারণা করেছিলাম বিল্ডিংয়েরই কোনো আন্টি হবে হয়তো। এসময় সাধারণত আন্টিরাই আসেন। তার উপর আমি বাসায় এসেছি এত্তোদিন পর। ( বাসা সিফ্টের সময় আমি এসে দু সপ্তাহ ছিলাম। আর এ সময়ের মাঝেই আন্টিদের ফেভারিট হয়ে গিয়েছিলাম।) তাই আন্টিদের আসাই স্বাভাবিক!
দরজার পাল্লা দুটি ধরে টেনে খুলতে খুলতেই, সামনে ভালো করে না দেখে, চিয়ারফুল ভয়েসে বলে উঠলাম, "আসসালামু আলাইকুম, আন্টি!"
কিন্তু দরজা খোলার পর যা দেখলাম, তা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আর যদি প্রস্তুত থাকতামও, তবুও আমার হার্ট বিট অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যেতোই। ( যেমনটা এখন বেড়ে গেছে )
দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিটি কোনো আন্টিই নন। বরং অতি আল্প বয়সে আমার হৃদয় হরণকারী সেই সুদর্শন। কৌশিক হাসান। নিজের চোখকে যেনো ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না। তিনিও আমার দিকে কিছুটা আবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন। কয়েক সেকেন্ডের জন্য ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিলাম। হঠাৎ তিনি কিছুটা লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে চেয়ে কেঁশে নিলেন। আর তাতেই ঘোর কেঁটে বাস্তবে ফিরে এলাম। এবং খেয়াল হলো আমি ওড়না ছাড়া উনার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ব্যাপারটা লক্ষ্য করার সাথে সাথে দরজা দুটো সজোরে উনার মুখের সামনে লাগিয়ে দিয়ে উল্টা ঘুরে "আম্মু" বলে ডাক দিয়ে দিলাম বাসার ভেতরে ভোঁ দৌড়।