আজকে প্রীলিনার 20 বছর পূর্ণ হলো | বাসায় তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিরাট আয়োজন করা হয়েছে | প্রতিবারই করা হয়, কারণ প্রীলিনা তার মা-বাবার একমাত্র সন্তান | তার মা ( শতরূপা রায় ) আর বাবা ( অংশুমান রায়) এর বিয়ের প্রায় 6 বছর পর প্রীলিনার জন্ম হয় | তাই স্বাভাবিকভাবেই সে মা-বাবার অনেক আদরের ! প্রীলিনা এবার অনার্স প্রথম বর্ষে সামাজিক বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছে | দেখতে সে অসম্ভব সুন্দরী, রূপকথার রাজকুমারীও হয়ত হার মানবে | তার এই সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয় | এর জন্য সে যখন 16-17 বছরের ছিল তখন ওর জন্য অনেক বিয়ের প্রস্তাব আসতো |
তো যাই হোক ! প্রীলিনা ক্লাস 7 থেকে বিটিএস আর্মি | বিশেষ করে বিটিএস মেম্বার জাংকুককে সে প্রচন্ড ভালোবাসে | তার এই ভালোবাসা এখন পর্যন্তও বিরাজমান | জাংকুকই তার জীবনের প্রথম ভালোবাসা | সে অন্য কোনো ছেলেকে নিয়ে ভাবতেও পারে না | ক্লাস 7 থেকেই তার বান্ধবীরা এসব নিয়ে মজা উড়াতো | বলতো যে, " আরেহ, ও একজন সেলেব্রিটি, ও তোকে চিনেও না, তুই কখনো ওকে স্পর্শ করারও সুযোগ পাবি না | ঠিকই অন্য কারো সাথে তোর বিয়ে হবে | ওইসব থেকে বের হ এবার | ওইটা ভালোবাসা না, ওইটা এমনি আকর্ষণ |" এইসব কথায় প্রীলিনা অনেক দুঃখ পায়, কিন্তু কিছু বলে না | কারণ বলে কোনো লাভ নেই | সে কি অনুভব করে সেটা শুধু সে নিজেই জানে | জাংকুকের প্রতি তার এই ভালোবাসাটা অনেক গভীর | বিটিএস কে চিনেছে সে জাংকুকের মাধ্যমেই |
প্রতি বছর সে ঘটা করে জাংকুকের জন্মদিন পালন করে, জাংকুকের নামে পূজা দেয়, মনে মনে প্রার্থনা করে যাতে জীবনে একবার হলেও সে জাংকুকের সাথে মিট করতে পারে | সে জাংকুককে নিয়ে অনেক স্বপ্নও দেখে | সময়ের সাথে সাথে জাংকুকের প্রতি তার অনুভূতিগুলো আরও গভীর হতে থাকে |তো জন্মদিনের রাতে ঘুমানোর সময় জাংকুকের কথা খুবই মনে পড়ে তার | সেদিন রাতে সে কান্নাও করে | এভাবে সে ঘুমিয়ে পড়ে | সকালে পাখির ডাকে প্রীলিনার ঘুম ভাঙল | সে চোখ খুলে দেখে জাংকুক তার পাশে বসে আছে | সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারে না | সে অন্য ঘরের দিকে তাকিয়ে কেউ আছে কিনা তা দেখার চেষ্টা করে | তখন জাংকুক বলে, "ঘরে আমি আর তুমি ছাড়া আর কেউ নেই !"
জাংকুকের ভয়েস শুনে প্রীলিনার হার্টবিট অনেক বেড়ে যায় | সে এতটাই নার্ভাস যে তার গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না | জাংকুক বিষয়টা বুঝতে পেরে মুচকি হাসি দিয়ে বলে, " কী হলো? আমি শুনেছি তুমি নাকি আমাকে দেখার জন্য পাগল হয়ে আছো | তাই তো আমি নিজেই চলে এলাম তোমার সাথে দেখা করতে |" প্রীলিনা আরও অবাক হচ্ছে আর ভাবছে যে এটা সত্য নাকি স্বপ্ন | জাংকুক প্রীলিনার হাত ধরল আর বলল, "কিছু বলছ না যে? আমি কি চলে যাব?"
প্রীলিনা : নাহ, যাবেন না | আপনি কি আসলেই এখানে আছেন? নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি? এসব হয়ত আমার ভ্রম ! এসব কল্পনা !
জাংকুক : নাহ, এসব মোটেও স্বপ্ন না | আমি আসলেই এখানে আছি | এই যে দেখ আমি তোমার হাত ধরে আছি !
প্রীলিনা অনুভব করল জাংকুকের হাতের স্পর্শ | তার মনে হতে লাগল সে হয়ত স্বর্গে আছে ! তার কিছুতেই এসব বিশ্বাস হচ্ছিল না |
প্রীলিনা : আপনি কিভাবে আমাকে চিনেন? কিভাবে জানলেন যে আমি এখানে আছি ? আর আপনি কি করে বাংলা জানেন?
জাংকুক : আমি জানি তোমার মনে এই মুহূর্তে অনেক প্রশ্ন কিলবিল করছে | সব উত্তর আমি আস্তে আস্তে দিব |
প্রীলিনা : আচ্ছা, কিন্তু আমার মা-বাবা কোথায়?
জাংকুক : উনাদের আমি গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি যাতে তোমার সাথে সময় কাটাতে পারি !
প্রীলিনা : উনারা মেনে নিলেন?
জাংকুক : হুম, আমি মানিয়েছি আমার ওয়েতে | এখন উঠো, ফ্রেশ হও | আমি তোমার জন্য তোমার প্রিয় খাবার পায়েস বানিয়েছি |
প্রীলিনা : Really? আপনি কিভাবে জানলেন যে আমি পায়েস লাইক করি ?
জাংকুক : তোমার মা বলেছেন | এবার তাড়াতাড়ি উঠো |
প্রীলিনা : ওকে ওকে !
প্রীলিনা উঠে ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হতে | সে ফ্রেশ হতে হতে আনমনে বলতে লাগল, "জাংকুক কি আসলেই এখানে আছে? হুম, আসলেই আছে | আমি তাকে অনুভব করেছি, তার হাতের স্পর্শও অনুভব করেছি | ইসসস, তবে কি আমার মনের বাসনা পূর্ণ হলো? উফফ, আমার মনে হচ্ছে আমি স্বর্গে আছি |" হঠাৎ জাংকুক ডাক দিল, "কী হলো....... আসো..."
প্রীলিনা তখনই ডাইনিং রুমে চলে আসল, এসে টেবিলে একটা চেয়ার টেনে বসল | জাংকুককেও বসতে বলল, কিন্তু জাংকুক এখন খাবে না |
জাংকুক : তুমি খাও এবার আর বলো যে কেমন হয়েছে !
প্রীলিনা এক চামচ পায়েস মুখে দিল, সে বিশ্বাস করতে পারছিল না যে এটা জাংকুক বানিয়েছে | এ যেন স্বর্গীয় !
জাংকুক : কী হলো? কেমন খেতে?
প্রীলিনা : দারুণ ! মানে কিভাবে বুঝাবো বুঝতে পারছি না | আমার মাও এতো ভালো পায়েস বানাতে পারে না | এটা মনে হয় না দুনিয়ার কোনো সেফ বানাতে পারবে | এটা আসলেই অনেক সুস্বাদু |
জাংকুক : হয়েছে, হয়েছে | আর বলতে হবে না | বাই দা ওয়ে ধন্যবাদ |
প্রীলিনা : ওয়েলকাম ! কিন্তু আপনি কিভাবে পায়েস বানানো শিখলেন? তাও এতো মজা করে?
জাংকুক : আমি নিজেও জানি না | আর শুনো, তুমি আমাকে তুমি করে ডাকবে, ওকে?
প্রীলিনা : (লজ্জা পেয়ে) ওকে !! বাই দা ওয়ে, পায়েস টা আসলেই অনেক ভালো হয়েছে |
জাংকুক : (মুচকি হেসে) ওকে ওকে, ম্যাডাম ! এবার তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করো , তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাব |
প্রীলিনা : (দাঁড়িয়ে) Whattt??? Really????
জাংকুক :Yeah, why not?? That's what you want, don't you? You wanna hang out with me, you wanna taste street food with me, you wanna have fun with me and so on, don't you, preelina?
প্রীলিনা : Yeah, I want ! But how do you know that? (নার্ভাস হয়ে)
জাংকুক : (প্রীলিনার অনেক কাছে গিয়ে) I know everything, young lady ! That's why I'm here, to fulfill your all dreams that you have with me!!
এতে প্রীলিনা অনেক বেশি নার্ভাস হয়ে যায় | জাংকুক প্রীলিনার এতোটাই কাছে ছিল যে প্রীলিনা জাংকুকের নিঃশ্বাসও অনুভব করতে পারছিল |
YOU ARE READING
He Was Here
Fanfictionযখন ঘুম থেকে উঠে দেখলে যে তোমার প্রিয় আইডল তোমারই বিছানায় তোমারই পাশে বসে আছে যার সাথে তুমি তোমার মনের গহীনে বেঁধে রেখেছো অজস্র স্বপ্ন |