pt---1✨

22 1 0
                                    

তুশি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। পাশে দাড়িয়ে আছে তার বাবা আর বোন। আদরের মেয়ের এই আবস্থা দেখে বুকটা ফেটে যাচ্ছে তুশির বেডের পাশে বসে থাকা মা লতা আহসানের।বাবা নজরুল আহসান এর কপালে ভাজ মেয়ের এই অবস্থা যেন সহ্য হচ্ছে না তার। ডাক্তারের সাথে কথা হয়েছে নজরুল এর। ডাক্তার জানিয়েছেন যে তুশির ভোকাল কর্ড এর মাঝ বরাবর আঘাত লাগার কারণে তুশি আর কখনো কথা বলতে পারবে না। এইটা শুনার পর নিজের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারে না নজরুল আহসান। এ কি ঘটে গেল তার মেয়ের সাথে? কেন তার ভালো মনের মেয়েটার সাথে এমনটা হলো। লতা আহসান এই কথা শুনার পর অনেক বেশি কাঁদতে থাকে। বড় বোন দিশা যেন পারছে না মরে যেতে সে এই কথা শুনার পড়ে আকাশ থেকে পড়ে সে নিজেকে যেন ক্ষমা করতে পারছে না। তার জন্যই তো এমনটা হয়েছে সেই তো দ্বায়ী তার ছোট বনের এই আবস্থার জন্য।
______________
২ দিন আগে তুশি নিজেদের রুম এ গল্পের বই পড়ছিল রাত তখন ১০ পার হয়েছে মাএ। নজরুল সাহেব মাএ বাসায় আসলেন অফিস থেকে।
লতা বললেন"কি গো আজ দেরি হলো যে? "
" আজ কাজের চাপটা বেশি ছিল আর সাথে কিছু বেতন নিয়ে ঝামেলা ২ মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না আর আমরা বলতে গেলে দোষ ধরছে। কি যে করবো বুঝছি না?!"
"এই মাসেও বেতনটা দিবে না বলছো? " উৎকন্ঠার সাথে প্রশ্ন করে লতা।
ব্যার্থ স্বরে নজরুল সাহেব বলেন "দিবে বলে তো মনে হয় না.।"
লতা আহসান বললেন " বাসার বাজার প্রায় শেষ মাস তো কেবল মাএ শুরু হলো, গত মাসে মিজান ভাই এর দোকানের ধার এর টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। "
কথা গুলো শোনার কপালে ভাজ আর মাতায় হাত পড়লো নজরুল আহসানের। কি করবে বুঝে পাচ্ছে না সে।
এমন সময় দিশা তার বাবা মার সামনে আসে। আসলে
দিশা মেয়েটা একটু রুক্ষ সভাবের আর প্রচন্ড জেদি,
সে বলে "বাবা আমার বন্ধুরা সবাই মিলে আমরা সিলেট এ ঘুরতে যাব বলে ঠিক করেছি তাই আমার কিছু টাকা লাগবে। "
লতা আহসান বলে " মা, আমরা এইটা নিয়ে কিছুক্ষণ পরে কথা বলবো, এখন তোমার বাবার মানসিকতা ভালো নেই। "
" আমরা কালি যাব তাই টাকা টা আমার আজকেই লাগবে টাকা দিয়ে দাও আমি আর কথা বলবো না।"
এবার নজরুল সাহেব কথা বলেন "কত টাকা লাগবে তোমার? " মেয়েদের কোনো আবদার বাকি রাখেন না তিনি সবসময় মেয়েরা যা চায় তাই দাওয়ার ব্যাবস্থা করেন। আজও হয়তো তার ব্যাতিক্রম হবে না।
দিসা বলে " পাঁচ হাজার "
এটা শুনে লতা রেগে বলে "তোমার আবদার দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।, এখানে সংসার চালাতে আমাদের দায়ে পড়তে হচ্ছে আর তোমাকে আমরা এতোগুলো টাকা কিভাবে দিব?! যেতে হবে না এখন কোথাও তোমার, এখন ঘরে যাও । "
বাব নজরুল আহসান বলে " দেখ মা আমার হাতের আবস্থা তো এখন ভালো নয়, তোমরা না হয় এখন যেও না আর কিছুদিন পরে যাও তখন আমি তোমাকে টাকা দিতে পারবো এখন দেওয়াটা মুশকিল হয়ে যাবে। মা"
নজরুল সাহেব কথা শেষ করার আগে দিশা চিৎকার করে বলে "না! আমার আজকে আর এখুনি টাকা লাগবে তুমি গত মাসেও আমাকে নতুন জামা কিনে দিবে বলেও দাওনি এখন আমার টুর টাও নস্ট করতে চাচ্ছো? আমি কিছুই জানি না আমার টাকা আজকেই লাগবে। "
এবার নজরুল সাহেব রেগে যান মেয়ের সব আবদার পুরোন করার পর ও মেয়ের এই ব্যাবহার যেন সহ্য হয় না তার। তিনি রেগে বলেন "কোথাও যেতে হবে না তোমার , ঘরে যাও এখন। " আদেশের সুরে বলেন নজরুল সাহেব।
দিশা এতে আরো বেশি চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। ও দিকে তুশি তার ঘর থেকে এতো চিৎকার চেচামেচি শুনে দৌড়ে আসে।
এক পর্যায়ে নজরুল সাহেব সহ্য করতে না পেরে দিশাকে চড় মেড়ে বসে। তখন দিসা কাঁদতে কাঁদতে বলে তোমাদের সাথে আমি আর থাকবোই না এই বলে ও ঘর থেকে বের হতে নেয় এমন সময় তুশি তাকে আটকানোর জন্য দিশার সামনে যায় কিন্তু দিশা তাকে সরতে বলে কিন্তু তুশি বার বার তাকে বলতে থাকে রেগো না আপু আসো ঘরে আসো আমরা কিছু না কিছু একটা ঠিক করতেছি। কিন্তুু দিশা শুনে না এক পর্যায়ে দিশা তুশিকে আনেক জোরে ধাক্কা দেয় আর তুশি পাশের থাকা বুক সেল্ফের সাথে ধাক্কা খায় এতে বুক সেল্ফে নড়ে উঠে আর তার উপরে থাকা কাচের ফুলদানি মাটিতে পরে ভেঙে যায়। এদিকে অতিরিক্ত জোরে মাথায় বাড়ি খাওয়ার কারণে ব্যালান্স হারিয়ে মাটিতে সেই ভাঙা কাচের উপর পড়ে তুশি। এতে সাথে সাথে এক টুকরো কাচ তার গলার কাছে গেধে যায়। আর তুশি চিৎকার করে গোঙাতে গোঙাতে গ্যান হারায় । চারদিক রক্তে লাল হয়ে যায়। মা লতা এ অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে কাঁদতে শুরু করে। আর নজরুল সাহেব হতবম্ব হয়ে পরে আর দিশা ভয়ে পাথর হয়ে যায় । নজরুল সাহেব তারাতাড়ি তুশি কে ধরে আর পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

"Feeling Also Die"🎲Where stories live. Discover now